সাহিত্য

একাত্তরের গণহত্যার বিচার ও স্বীকৃতির দাবিতে ওয়েবিনার

১৯৭১ সালে বাংলাদেশে গণহত্যার আন্তর্জাতিক ন্যায় বিচার ও স্বীকৃতির জন্য জোরালো আহ্বান জানান বিশ্বের বিশিষ্টজনেরা। জেনোসাইড ’৭১-এর আয়োজনে ‘বাংলাদেশের গণহত্যার শিকার ন্যায় বিচার ও ৫৩ বছর এবং গণনা’ শীর্ষক আন্তর্জাতিক ওয়েবিনারে তারা এ আহ্বান জানান। ১৩ জুলাই বিকেল ৫টায় মুক্ত আসর ও বাংলাদেশ ইতিহাস অলিম্পিয়াডের উদ্যোগে এ আয়োজন করা হয়।

Advertisement

লেখক ও গবেষক প্রিয়জিৎ দেবসরকারের সঞ্চালনায় শুরুতেই বলেন, ‘৫৩ বছর আগে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ মধ্যরাতে নিরস্ত্র বাঙালির ওপর অপারেশন সার্চলাইটের নামে পাকিস্তান সেনাবাহিনী নির্মম হত্যাকাণ্ড চালায়। বাংলাদেশে তৎকালীন বুদ্ধিজীবী, শিক্ষক, লেখক, সাংবাদিক পাকিস্তানের দোসরদের সহযোগিতায় এ গণহত্যা চালায়। এতে দুই-চার লাখ নারী ও শিশু শিকার হয়। জেনোসাইড ’৭১-এর মাধ্যমে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বিশিষ্টজনের মতামতসহ গণহত্যার বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরার চেষ্টা করছি।’

১৯৭১ সালের ২৫ ও ২৬ মার্চ ঢাকায় ছিলেন ব্রিটিশ বুদ্ধিজীবী ও মানবাধিকার কর্মী ইয়াং মার্টিন। তিনি সে সময়ের স্মৃতি স্মরণ করে বলেন, ‘ঢাকার গুলশান এলাকায় ছাদের ওপর দাঁড়িয়ে শুনতে পান পাকিস্তান সেনাবাহিনীর গোলগুলির শব্দ।’ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন ইকবাল হলের কথা তিনি উল্লেখ করেন।

আরও পড়ুন আনন শিশুসাহিত্য পুরস্কার পাচ্ছেন আনোয়ারা সৈয়দ হক  পুরস্কার পেলেন জবি অধ্যাপক রাহেল রাজিব 

যুক্তরাষ্ট্রের শিক্ষাবিদ রবার্ট বব ল্যান্সিয়া বাংলাদেশের গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি জোরদার করার আহ্বান জানান। পরারাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ইনভেশন চিফ ও ডাইরেক্ট জেনারেল সৈয়দ মুনতাসির মামুন প্রত্যক্ষদর্শীদের সাক্ষ্য এবং বাস্তব প্রমাণ সংরক্ষণের গুরুত্বের ওপর জোর দেন। লেখক, গবেষক ও শিল্পী আইরিন খান বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে নারী ও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপেক্ষিত অভিজ্ঞতার প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। তাদের অভিজ্ঞতাগুলো তুলে ধরেন।

Advertisement

ফ্রান্সের আইডিয়াল ইন্টারন্যাশনালের প্রেসিডেন্ট স্টিফেন মিচট বলেন, ‘আমরা ওয়েবিনারে এসেছি কারণ বাংলাদেশ জেনোসাইডকে এখনো আন্তর্জাতিক স্বীকৃত দেওয়া হয়নি। আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে বিশ্বব্যাপী বাংলাদেশের জেনোসাইডের স্বীকৃতির জন্য প্রচারের কাজ করবো।’

মুক্ত আসরের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও বাংলাদেশ ইতিহাস অলিম্পয়াড জাতীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক আবু সাঈদ বলেন, ‘আমরা ২০১৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর কাজ শুরু করি। ৬৪ জেলার গণহত্যা, গণকবর ও বধ্যভূমিগুলোকে মোটাদাগে বের করার চেষ্টা করি। সেগুলো নিয়ে ২০১৮ সালে একটি জার্নাল প্রকাশ করি। এরপর আমাদের মনে হয়েছে, আন্তর্জাতিক পর্যায়ে স্বীকৃতির জন্য আন্তর্জাতিক বিশিষ্ট ব্যক্তির মতামত জরুরি। সেই লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক ওয়েবিনারগুলো আয়োজন করছি।’

আন্তর্জাতিক ওয়েবিনারের সহযোগিতায় ছিল স্বপ্ন ’৭১ প্রকাশন, বইবিষয়ক পত্রিকা বইচারিতা, বাংলাদেশ গবেষণা সংসদ, উদার আকাশ ও এনএল২৪।

এসইউ/জিকেএস

Advertisement