বাজারে পর্যাপ্ত সবজি থাকলেও দাম চড়া। কিছুতেই কমছে না দাম। পাশাপাশি চাল-ডাল, তেল-আটার দামও বেড়ে চলেছে। ফলে সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছে সাধারণ মানুষ।
Advertisement
সাতক্ষীরা শহরের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বৃষ্টির অজুহাতে বেড়েছে কাঁচা মরিচের দাম। সপ্তাহের ব্যবধানে দাম বৃদ্ধি পেয়ে মরিচ বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকা কেজি। এছাড়া বেড়েছে অন্য সবজির দামও। তবে, কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে মুরগির বাজারে। মুরগির দাম কেজিপ্রতি কমেছে ২০ টাকা।
সুলতানপুর কাঁচাবাজারে দেখা যায়, কাঁকরোল বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকা কেজি, করলা ৯০-১০০ টাকা, চিচিঙ্গা ৭০-৮০ টাকা, ঢেঁড়স ৬০-৬৫ টাকা, আলু ৬০ টাকা, পটল ৫০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৪০ টাকা, বরবটি ১৩০-১৪০ টাকা, টমেটো ১৫০-১৬০ টাকা, পেঁপে ৪০-৫০ টাকা, গাজর ১৩০ টাকা এবং শসা ১০০ টাকা কেজি দরে।
অপরদিকে বয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৭০ টাকা, সোনালি ৩০০ টাকা এবং দেশি মুরগি ৪৮০ টাকা কেজি দরে। অপরিবর্তিত রয়েছে মাছ-মাংসের দাম। গরুর মাংস ৭৫০-৮০০ টাকা, ছাগলের মাংস ১০০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
Advertisement
এছাড়া আকার ভেদে রুই ২৬০-৩৬০ টাকা, কাতলা ৩২০-৩৬০ টাকা, মৃগেল ২০০-২৫০ টাকা, পাঙ্গাশ ১৮০-২২০ টাকা, তেলাপিয়া ২০০-২২০ টাকা, বাগদা চিংড়ি ৮০০ টাকা, পাবদা ৩৫০-৪০০ টাকা, টেংরা ৩৭০-৫০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
মুদিপণ্যের মধ্যে খোলা চিনি ১৪০ টাকা, প্যাকেটজাত চিনি ১৪৫ টাকা, প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন ১৪৭ টাকা, বোতলজাত সয়াবিন তেল ১৬৭ টাকা, ছোট মসুর ডাল ১৪০ টাকা, মোটা মসুর ডাল ১১০ টাকা, বড় মুগ ডাল ১৬০ টাকা, ছোট মুগ ডাল ১৮০ টাকা, খেসারি ডাল ১২০ টাকা, বুটের ডাল ১১৫ টাকা।
উপজেলার বিভিন্ন বাজারে জাতভেদে ৯৫-১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে পেঁয়াজ। রসুন বিক্রি হচ্ছে ১৮০-২০০ টাকা কেজি দরে।
বড় বাজারে পণ্য কিনতে আসা মাহবুবার রহমান বলেন, বাজারে গেলে বোঝা যায় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি কেমন বেড়েছে। এক হাজার টাকার নোটে ৩-৪ আইটেম পণ্য নিলে ফুরিয়ে যায়। মানুষের জীবনযাপনে খুবই কষ্ট হচ্ছে। বিশেষ করে যারা দিনমজুর, নিম্ন আয়ের মানুষ তারা অনেক কষ্টে আছে। সিন্ডিকেটের কারণে মূল্যবৃদ্ধি পাচ্ছে। জবাবদিহিতা করার কেউ নেই। জনপ্রতিনিধিরা মানুষের দুঃখ-কষ্ট নিয়ে ভাবেন না। প্রশাসন তেমন মনিটরিং করে না।
Advertisement
আরেকজন ক্রেতা দিনমজুর রবিউল ইসলাম বলেন, গরীব মানুষের সবচেয়ে বড় জ্বালা। যা ইনকাম করি ডাল-ভাত খেয়ে বেঁচে থাকা কষ্টকর হয়ে পড়েছে। বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় সব পণ্যের দাম আকাশচুম্বী। মাছ সপ্তাহে ও মাংস তো মাসে একদিন কিনতে হিমশিম খাই। ঘরে ছোট দুই ছেলে, তারা ডাল, মাছ ছাড়া খাবার খেতে চায় না।
সাতক্ষীরা নাগরিক কমিটির সভাপতি আজাদ হোসেন বেলাল বলেন, সিন্ডিকেটের কারণে দ্রব্যমূল্য বেড়েছে। তাদের বিরুদ্ধে তেমন কোনো পদক্ষেপ নিতে দেখা যায় না। প্রশাসনের নীরবতার কারণে সিন্ডিকেট সক্রিয়। সঠিকভাবে বাজার মনিটরিং করলে সিন্ডিকেট ভেঙে ক্রেতারা ন্যায্যমূল্যে পণ্য ক্রয় করতে পারবেন।
সাতক্ষীরা জেলার জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মো. নাজমুল হাসান বলেন, শাক-সবজির বাজার নিয়ন্ত্রণ করে মধ্যস্বত্ত্বভোগীরা। বর্ষায় ক্ষেত নষ্টের অজুহাত দেখিয়ে অনেক বাজারে অতিরিক্ত দাম নেওয়া হচ্ছে। ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর বাজার নিয়ন্ত্রণে নিয়মিত অভিযান চালাচ্ছে।
সাতক্ষীরা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকতা শোয়াইব আহমেদ জানান, বাজারে নিয়মিত নজর রাখা হচ্ছে। অসাধু সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হবে।
আহসানুর রহমান রাজীব/জেডএইচ/এএসএম