জাতীয়

কোটাবিরোধী আন্দোলন: শিক্ষার্থীদের নামে পুলিশের মামলা

চলমান কোটাবিরোধী আন্দোলনে পুলিশের যানবাহন ভাঙচুর, পুলিশ সদস্যদের ওপর হামলা এবং মারধরের ঘটনায় শাহবাগ থানায় মামলা হয়েছে। মামলায় আসামি হিসেবে ‘অজ্ঞাতপরিচয় অনেক শিক্ষার্থী’ উল্লেখ করা হয়েছে।

Advertisement

শুক্রবার (১২ জুলাই) রাতে রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সের পরিবহন বিভাগের গাড়িচালক খলিলুর রহমান বাদী হয়ে রাজধানীর শাহবাগ থানায় এ মামলা করেন।

মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, ‘গত ১১ জুলাই কোটা বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পূর্ব ঘোষিত আন্দোলনের কর্মসূচি ছিল। সে অনুযায়ী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে অজ্ঞাতপরিচয় ছাত্ররা জড়ো হয়ে বিভিন্ন হলের সামনে দিয়ে প্রদক্ষিণ করে বিকেল ৪টার সময় স্লোগান দিতে দিতে শাহবাগ মোড়ের দিকে অগ্রসর হতে থাকেন। একপর্যায়ে আন্দোলনকারীরা শাহবাগ মোড় অতিক্রম করে বেআইনি জনতায় আবদ্ধ হয়ে দাঙ্গা সৃষ্টি করে সরকারি দায়িত্ব পালনে বাধা সৃষ্টি করেন। তারা শাহবাগ মোড়ে পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে ফেলেন ও পুলিশের সঙ্গে ধাক্কাধাক্কি করেন। এসময় কর্তব্যরত পুলিশ সদস্যদের মারধর করে সাধারণ জখম করেন।’

আরও পড়ুনশাহবাগে ধৈর্যের পরিচয় দিচ্ছে পুলিশ, শিক্ষার্থীদের বোধোদয় হোক শনিবার কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের প্রতিনিধি বৈঠক শিক্ষার্থীরা মনে হয় লিমিট ক্রস করে যাচ্ছে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী 

‘পরে তারা হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের দিকে অগ্রসর হতে থাকলে পুলিশের সিনিয়র কর্মকর্তারা ছাত্রদের বুঝিয়ে শুনিয়ে পুনরায় শাহবাগ মোড়ে ফিরিয়ে আনতে যার। এ সময় বিএসএমএমইউয়ের পাশে নিরাপদ স্থানে রাখা এপিসি-২৫ ও ওয়াটার ক্যাননের চারদিকে ঘেরাও করে অনেক সংখ্যক আন্দোলনকারীরা উঠে উদ্দাম নৃত্য শুরু করেন। তারা ওয়াটার ক্যানন চালককে গাড়ি থেকে জোর করে বের করার চেষ্টা ও গতিরোধ করেন। এর ফলে এপিসি ২৫ এর সামনের দুইটি এসএস স্ট্যান্ড, বনাটের উপরে বাম পাশে রেডিও অ্যান্টেনা এবং ডান পাশের পেছনের চাকার মার্টগার্ড চলি এবং ওয়াটার ক্যাননের বাম পাশের লুকিং গ্লাস ভেঙে অনুমানিক পাঁচ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি করেন। এ বিষয়ে শাহবাগ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়। ছাত্রদের অন্যান্য সিনিয়র স্যাররা বুঝিয়ে শুনিয়ে এপিসি-২৫ ও ওয়াটার ক্যানন থেকে নামিয়ে আনেন এবং পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করেন। কিন্তু তারা আরও ক্ষিপ্ত হয়ে পুলিশকে লক্ষ্য করে পানির বোতল, টেপটেনিস বল ও ইটের টুকরা ছুড়ে মারেন। এতে অনেক পুলিশ সমস্য আঘাতপ্রাপ্ত হন।’

Advertisement

মামলার এজাহারে আরও উল্লেখ করা হয়, ‘ঘটনাস্থলে উপস্থিত সব সিনিরয় কর্মকর্তা ও পুলিশ সদস্যরা অত্যন্ত ধৈর্যের সঙ্গে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করেন। একপর্যায়ে অজ্ঞাতপরিচয় ছাত্ররা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শাহবাগের আন্দোলনে যোগ দিয়ে বিভিন্ন স্লোগান দিয়ে বারডেম হাসপাতালের গেটের ব্যারিকেড ভেঙে পুলিশ সদস্যদের আহত করেন। তারা পুলিশকে উদ্দেশ্য করে বিভিন্ন ধরনের কটূক্তি করেন। ছাত্ররা কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়সহ অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদের ওপর হামলা এবং শাহবাগ থানায় ছাত্রদের ধরে নিয়ে গেছে বলে গুজব ছড়িয়ে পরিস্থিতি উত্তপ্ত করার চেষ্টা করেন। একপর্যায়ে পুলিশকে মারতে তেড়ে আসেন ও পুলিশকে বিভিন্ন ভয়ভীতি ও হুমকি দিয়ে শাহবাগ মোড় ত্যাগ করেন।’

বিবাদীরা বেআইনিভাবে জড়ো হয়ে দাঙ্গা সৃষ্টি করে সরকারি কাজে বাধা দেন। তারা স্বেচ্ছায় আঘাত করেন, গতিরোধ, দাঙ্গা দমনকারী কর্তব্যরতদের প্রতি আক্রমণ ও বাধা দিয়ে ক্ষতিসাধন ও ভয়ভীতি দেখান বলেও এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে।

এনএস/কেএসআর/এমএস

Advertisement