মাত্র তিনদিনের ব্যবধানে চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে খুচরা পর্যায়ে দেশি পেঁয়াজের দাম কেজিপ্রতি ৩০ টাকা বেড়েছে। এতে নতুন করে বেকায়দায় পড়েছেন স্থানীয় নিম্নআয়ের মানুষেরা।
Advertisement
উপজেলার বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, তিনদিন আগে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ খুচরা পর্যায়ে বিক্রি হয়েছিল ১০০ টাকায়। তিনদিনের ব্যবধানে তা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১৩০ টাকা কেজি দরে। দাম বাড়ায় পণ্যটির বিক্রি কমেছে বলে জানিয়েছেন দোকানিরা।
ক্রেতাদের অভিযোগ, কখনো বৃষ্টি, কখনো গরম, কখনো আন্দোলন আবার কখনো সড়কে চাঁদাবাজির অজুহাতেই পেঁয়াজের দাম বাড়িয়ে যাচ্ছেন অসাধু ব্যবসায়ীরা। এসব দেখার যেন কেউ নেই।
তারা বলছেন, রাত পোহালেই বিভিন্ন নিত্যপণ্যের দাম বেড়ে যায়। বাজারে গিয়ে হিমশিম খেতে হয়। কিন্তু পণ্যের দামের মতো আয়তো প্রতিদিন বাড়ে না। এভাবে চললে সব পণ্যই ভোক্তার নাগালের বাইরে চলে যাবে। সরকারের উচিত এখনই দামে লাগাম টানা।
Advertisement
আরও পড়ুন
অস্থির পেঁয়াজের বাজার, এবার কোথায় গিয়ে ঠেকবে দাম?বড়দারোগাহাট বাজারে জহির উদ্দিন নামের এক ক্রেতার সঙ্গে কথা হলে তিনি জাগো নিউজকে বলেন, যেভাবে সবকিছুরই দাম বাড়ছে তাতে পরিবার নিয়ে খেয়েপরে বাঁচাই কঠিন। বাজার সিন্ডিকেট ভাঙা যাচ্ছে না। এক দোকানে দাম বাড়ানো হলে মুহূর্তে সব দোকানে বেড়ে যায়।
মিরসরাই পৌর সদরে বাজার করতে আসা নুর হোসেন জানান, দিনদিন ধরে পাগলা ঘোড়ার মত বাড়ছে পেঁয়াজের দাম। ৭০ টাকা থেকে শুরু করে দেড় মাসের ব্যবধানে দাম উঠেছে ১৩০ টাকায়। তিনদিনে বেড়েছে ৩০ টাকা।
মিজানুর রহমান নামের আরেক ক্রেতা বলেন, দেশে কোনো জিনিসের দাম কমছে না, বরং বাড়ছে। এক কেজি পেঁয়াজ ১৩০ টাকা, এক কেজি আলু ৬০-৬৫ টাকা। মানুষ কী করে চলবে, কী খেয়ে বাঁচবে। ব্যবসায়ীরা নিজেদের খেয়াল খুশি মতো দাম বাড়িয়ে ভোক্তাদের পকেট কাটছে।
Advertisement
বারইয়ারহাট পৌর বাজারের পেঁয়াজ বিক্রেতা রফিকুজ্জামান বলেন, আমরা ফেনী থেকে পাইকারি দরে পেঁয়াজ নিয়ে আসি। ২৫ কেজির বস্তায় এখন ৫০০ টাকা বেড়ে গেছে। যে কারণে দাম বাড়িয়ে বিক্রি করা ছাড়া উপায় নেই। এছাড়া প্রতি বস্তায় কিছু পেঁয়াজ নষ্টও থাকে।
আরও পড়ুন
চালের দাম আরও বাড়লো, সবজি আলু পেঁয়াজেও অস্বস্তিবড়দারোগাহাট বাজারের ব্যবসায়ী আবুল কালাম তোতা বলেন, গত সপ্তাহে দেশি পেঁয়াজ ৯৫ থেকে ৯৮ টাকা কেজিতে বিক্রি করেছি। এ সপ্তাহে ১৩০ টাকা হয়েছে। এত দাম শুনলে ক্রেতারা কিনতে চান না, দুই কেজির জায়গায় আধা কেজি কেনেন।
‘ভারতীয় পেঁয়াজের দাম কম হলেও বাজারে ভারতীয় পেঁয়াজ মিলছে না। পাইকারি বাজারে দেশি পেঁয়াজের সঙ্গে নিম্নমানের ভারতীয় পেঁয়াজ মিশিয়ে বিক্রি করছেন অনেকে। ফলে দেশি পেঁয়াজের দামে বিক্রি হচ্ছে কম দামি ভারতীয় পেঁয়াজ’- বলেন এ ব্যবসায়ী।
জানতে চাইলে কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সহ-সভাপতি এসএম নাজের হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, সরকার বাজার ব্যবস্থাপনা নিয়ে কোনো নীতিমালা তৈরি করেনি। এ কারণে অসাধু ব্যবসায়ীরা সামান্য সুযোগেও ভোক্তাদের নাজেহাল করছেন। যখন-তখন পণ্যের দাম বাড়াচ্ছেন। এসব বিষয়ে সরকারের কঠোর নজরদারি প্রয়োজন।
এমএমডি/এমকেআর/এমএস