ময়মনসিংহ সদরে আশিকুর রহমান লিখন (৩১) নামের এক যুবকের রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় লিখনের প্রেমিকাসহ তার মাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে পুলিশ।
Advertisement
বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) দিনগত মধ্যরাতে উপজেলার পনঘাগড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত লিখন ওই গ্রামের ফজলুল হকের ছেলে। তিনি একজন ডিস ব্যবসায়ী ছিলেন বলে জানা গেছে।
ময়মনসিংহ কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাইন উদ্দিন জাগো নিউজকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
নিহত লিখনের ভাই নেয়ামত আলী জাগো নিউজকে জানান, আশিকুর রহমান লিখন তানিয়া নামের এক মেয়েকে বিয়ে করেছিলেন। তাদের একটি সন্তান রয়েছে। লিখনের একটি মেয়ের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। বিষয়টি তার স্ত্রী তানিয়া জানতে পারলে দাম্পত্য জীবনে কলহ শুরু হয়। কোরবানি ঈদের পর তানিয়াকে তালাক দেন লিখন।
Advertisement
ঘটনার দিন রাতে খাওয়া-দাওয়া করে লিখন বাড়ি থেকে বের হয়ে যান। পরে মধ্যরাতে লিখনের প্রেমিকা (কিশোরী) তার বাড়িতে খবর দেয়, ‘আপনার ছেলেকে আমার বাড়ির পেছনের ধানক্ষেত থেকে নিয়ে যান’। পরে স্বজনরা প্রেমিকার জানালার পাশের ধানক্ষেত থেকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়ার পথে লিখন মারা যান। পরে মেয়েটি ফোন করে জানতে চায় লিখন মারা গেছে কি না। নেয়ামত আলীর দাবি, তার ভাইকে ওই মেয়ে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে।
তবে কিশোরী ও তার পরিবারের দাবি, দুই বছর ধরে লিখন মেয়েটিকে প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে উত্ত্যক্ত করে আসছিলেন। সে স্থানীয় একটি উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী। প্রেমের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় এর আগেও তিনবার বিষপানে আত্মহত্যাচেষ্টা করেছিলেন লিখন।
বৃহস্পতিবার রাতেও মেয়েটির বাড়িতে এসে প্রেমের প্রস্তাব দিতে থাকে। প্রস্তাবে সাড়া না দেওয়ায় হঠাৎ ঘরের জানালার বাইরে প্যান্ট থেকে বেল্ট খুলে গলায় ফাঁস দিয়ে ঝুলে পড়েন। কিছুক্ষণ পর মেয়েটি লিখনের কোনো সাড়াশব্দ না পেয়ে দা দিয়ে বেল্টটি কেটে দেয় এবং পরিবারকে ফোন দিয়ে বিষয়টি জানায়।
ওসি মাইন উদ্দিন বলেন, এটা আত্মহত্যা নাকি হত্যা তা ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়ার পর বলা যাবে। তবে এ ঘটনায় তদন্ত কার্যক্রম চলছে। মরদেহ ময়নাতদন্ত শেষে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
Advertisement
জিজ্ঞাসাবাদের জন্য প্রেমিকা ও তার মাকে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। তবে শুক্রবার (১২ জুলাই) বিকেল ৫টা পর্যন্ত নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়নি বলেও জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।
মঞ্জুরুল ইসলাম/এসআর/এএসএম