কোটা বাতিলের দাবিতে আন্দোলন অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়ে শিক্ষার্থীরা তাদের সীমা লঙ্ঘন (লিমিট ক্রস) করছে বলে মনে করছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান।
Advertisement
বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) সচিবালয়ে মাদকের অপব্যবহার ও পাচারবিরোধী আন্তর্জাতিক দিবস নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এ কথা বলেন।
শিক্ষার্থীদের কোটা বাতিলের আন্দোলন অব্যাহত রাখার বিষয়ে জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আদালতের যে নির্দেশনাটা এসেছিল, শিক্ষার্থীরা মনে করেছেন তাদের যে চিন্তা-ভাবনা, সেটা থেকে তাদের দূরে সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। সেজন্য তারা রাস্তায় চলে এসেছিলেন। আমাদের নিরাপত্তা বাহিনী, বিশেষ করে পুলিশকে আমরা বলেছি, এদের ডিমান্ড যেটা আছে, সেটা আমরা শুনবো। কিন্তু শোনারও একটা লিমিট বোধহয় থাকে। তারা বোধহয় এগুলো ক্রস করে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, বেশ কয়েকদিন হলো তারা (আন্দোলনরত শিক্ষার্থী) কিন্তু একই কাজ করছেন। এরই মধ্যে প্রধান বিচারপতি একটা নির্দেশনা দিয়েছেন। তিনি স্পষ্ট বলেছেন, যে নির্দেশনা হাইকোর্ট দিয়েছেন সেটি স্থগিত। যে মামলাটি চলছে সেটির রায় না হওয়া পর্যন্ত স্থগিত থাকবে। তাই হাইকোর্ট যে নির্দেশনা (কোটা বহাল করে) দিয়েছিলেন সেটি অচল, সেটি এখন নেই।
Advertisement
আরও পড়ুনশিক্ষার্থীদের ক্লাসে ফেরার আহ্বান ছাত্রলীগেরকোটাবিরোধী আন্দোলন: নেপথ্যে কারা?
‘আমার মনে হয় ছাত্রদের এক্ষেত্রে বোঝা উচিত, জানা উচিত। রায় যখন নেই তাহলে আন্দোলন করছে কেন? তাদেরও আত্মীয়-স্বজনকে বিভিন্ন কাজে ছুটতে হয়, হাসপাতালে যেতে হয়, চাকরির জন্য বিভিন্ন জায়গায় যেতে হয়। রাস্তা বন্ধ করে দিলে কীভাবে চলবে?’
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ছাত্ররা আদালতে গিয়ে তাদের যা বলার তা যাতে বলে। এটা স্পষ্ট সুন্দরভাবে বলে দিয়েছেন। কাজেই এরপর রাস্তায় থেকে তাদের কষ্ট করার কোনো প্রয়োজন আমার মনে হয় নেই। তারা যেটা চেয়েছিলেন সেদিকেই তো যাচ্ছে।
‘আমি শিক্ষার্থীদের অনুরোধ করবো, অযথা যাতে ভিড় না করেন। তারা তাদের লেখাপড়া ছেড়ে বসে থাকবেন, জনগণের দুর্ভোগ হবে। এটাও যাতে তাদের মাথায় থাকে।’
Advertisement
আসাদুজ্জামান খান আরও বলেন, তাদের দাবির প্রতি সরকার সব সময় খেয়াল রাখছে। যেহেতু বিষয়টি কোর্টে আছে এজন্য কোর্টের মাধ্যমে এটি নিষ্পত্তি হবে।
জনপ্রশাসন মন্ত্রী বলেছেন একটি পক্ষ ছাত্রদের ব্যবহার করার চেষ্টা করছে। এ বিষয়ে মন্তব্য জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমাদের মন্ত্রী মহোদয় যথার্থই বলেছেন। এ ধরনের পরিস্থিতি হলে ঘোলাপানি তৈরি করার লোকের অভাব হয় না। আমরাও তথ্য পাচ্ছি, মন্ত্রী মহোদয় হয়তো একটু খোলামেলাই বলেছেন। অনেকেই তাদের ব্যবহার করার জন্য দৌড়ঝাঁপ শুরু করে দিয়েছেন। আমি মনে করে আমাদের ছাত্রসমাজ তাদের কুমন্ত্রণা কানে নেবে না। যেহেতু একটি মীমাংসা হয়ে গেছে, তারা তাদের স্ট্রাইক উইথড্র করে ফিরে যাবেন, এটি আমি আশা করি।
শিক্ষার্থীরা অনুরোধ না রাখলে আপনারা অ্যাকশনে যাবেন কি না, জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, প্রথম কথা হলো তারা শিক্ষিত, মেধাবী। তারা কেন রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে যাবেন? তারা এসব কিছু পর্যবেক্ষণ করে ফিরে যাবেন।
আসাদুজ্জামান খান বলেন, পুলিশের অ্যাকশনটা কখন আসে? যখন অপারগ হয়ে যায়, যখন অগ্নিসংযোগ করতে যায়, যখন ধ্বংস করতে যায়, যখন জানমালের নিশ্চয়তার অভাব হয়ে যায়, যখন অনৈতিকভাবে কোনো সিচুয়েশন তৈরি হয়। সেগুলো করলে পুলিশ বসে থাকবে না।
আরএমএম/এমএইচআর/জেআইএম