স্থানীয় সরকার নির্বাচনের সিটি করপোরেশন বিধি ও আচরণবিধিতে আমূল সংস্কার আনতে যাচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। দলীয় ও স্বতন্ত্রদের মধ্যে প্রার্থী হওয়ার ক্ষেত্রে যে বিভাজন ছিল, তা বাদ দেওয়া হচ্ছে। অর্থাৎ একজন স্বতন্ত্র প্রার্থীর সিটি নির্বাচনে প্রার্থী হতে হলে ৩০০ ভোটারের স্বাক্ষর যুক্ত করে মনোনয়নপত্র জমা দিতে হতো। সংশোধিত বিধিমালায় বিধানটি বিলুপ্ত করা হচ্ছে।
Advertisement
সম্প্রতি ইসি থেকে এই তথ্য জানা গেছে। আগামী জানুয়ারি মাসে রাজধানীর দুই (উত্তর -দক্ষিণ) সিটির ভোট হবে, ডিসেম্বরে হবে তফসিল। এই প্রস্তাবিত বিধিগুলো এর আগেই চূড়ান্ত করে আসন্ন সিটি ভোটে প্রয়োগ করার বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। এছাড়া আরও কিছু বিধির অসঙ্গতিও দূর করতে খসড়া প্রস্তাবনা তৈরি হচ্ছে।
সিটিতে ভোটারের সংখ্যানুপাতে ব্যয়সীমা ও ব্যক্তিগত ব্যয় করতে হয় মেয়র এবং সাধারণ ও সংরক্ষিত কাউন্সিলরদের। বর্তমান বিধানে সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদের প্রার্থীদের সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডে যত ভোটার থাকুক না কেন, জামানত ১০ হাজার টাকা, নির্বাচনী ব্যয় ৬ লাখ টাকা এবং ব্যক্তিগত ব্যয় ৫০ হাজার টাকা। আর মেয়র পদের প্রার্থীদের জন্য ১ লাখ টাকা জামানত, ২ লাখ টাকা ব্যক্তিগত ব্যয় এবং সর্বোচ্চ ৫০ লাখ টাকা নির্বাচনী ব্যয়। কমিশন এ বিধান রহিত করে নতুন করে জামানত ও ব্যয়সীমা নির্ধারণ করার উদ্যোগ নিয়েছে।
আরও পড়ুনদলীয় প্রতীক না থাকলে স্থানীয় সরকার নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হবে: ইসিপ্রস্তাবিত ও বিদ্যমান বিধানের মধ্যে সামঞ্জস্য রাখতে প্রার্থীদের জামানত বাড়ানোর প্রস্তাব করা হচ্ছে। এতে ভোটারভেদে প্রার্থীদের মধ্যে যে ব্যয়ের তারতম্য ছিল তা সহনীয় পর্যায়ে নামিয়ে আনতে কমিশন বিধিতে সংস্কার আনার উদ্যোগ গ্রহণ করতে যাচ্ছে।
Advertisement
ইসি সূত্র জানায়, নির্বাচনী আইনের মারপ্যাঁচে বিদ্যমান আইনে স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচন করা কঠিন। কোনোভাবে ৩০০ ভোটারের স্বাক্ষর সংগ্রহ সম্ভব হলেও রাজনৈতিক কারণে প্রার্থিতা টেকানোই দুরূহ ব্যাপার স্বতন্ত্রদের জন্য। কারণ ৩০০ ভোটারের কোনো একজন কারো দ্বারা প্ররোচিত হয়ে মনোনয়নপত্র বাছাইয়ের সময় অভিযোগ করলে প্রার্থিতা বাতিল হয়ে যাবে। স্বতন্ত্র প্রার্থীকে মনোনয়নপত্র দাখিলের সময় ওই ৩০০ ব্যক্তির নাম ও স্বাক্ষর রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে জমা দিতে হয়, যাদের অবশ্যই সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী এলাকার ভোটার হতে হয়।
স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থনসূচক ৩০০ ব্যক্তির স্বাক্ষর নির্বাচন কমিশন যাচাই করে দেখে। এ ক্ষেত্রে দ্বৈবচয়নের ভিত্তিতে পাঁচটি নাম ও স্বাক্ষর নির্ধারণ করা হয়। পাঁচ ব্যক্তির তথ্য সরেজমিনে তদন্ত করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা। এক্ষেত্রে তথ্যে কোনো গরমিল হলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির মনোনয়নপত্র বাতিল বলে গণ্য হয়। একইভাবে প্রার্থী হতে হলে প্রস্তাবক ও সমর্থককেও সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী এলাকার ভোটার হতে হয়। এই কঠিন বিধানটি সিটির বিধি থেকে তুলে দেওয়া হচ্ছে। এতে স্বতন্ত্র ও ক্লিন ইমেজের প্রার্থীদের প্রার্থী হওয়ার পথ সহজ হবে। নির্বাচনে অংশগ্রহণ ও প্রতিদ্বন্দ্বিতা বাড়বে।
এমওএস/এমএইচআর/জেআইএম
Advertisement