দেশজুড়ে

রুটিতে লেখা তাবিজ, এলাকায় তোলপাড়

ভোলার চরফ্যাশন উপজেলায় তাবিজ লেখা একটি রুটি নিয়ে এলাকায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। উপজেলার জাহানপুর ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের হাওলাদার বাড়িতে এ ঘটনা ঘটেছে।

Advertisement

স্থানীয়রা জানান, প্রায় ১৩ বছর আগে চরফ্যাশন উপজেলার জাহানপুর ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের মৃত কাঞ্চন হাওলাদারের ছেলে মো. আল আমিন হাওলাদারের সঙ্গে বিয়ে হয় আসলামপুর ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের মিজি বাড়ির বারেক মিজির মেয়ে আরজু বেগমের। বিবাহিত জীবনে তাদের দুই সন্তান রয়েছে। ৩ বছর আগে জীবিকার তাগিদে আল আমিন সৌদি আরবে যান। স্বামী বিদেশে যাওয়ার পর আরজু বেগমের সঙ্গে ছোটখাট বিষয় নিয়ে শাশুড়ি শাহিনুর বেগম ও ননদদের মাঝেমধ্যে ঝগড়া হতো।

এ নিয়ে প্রায় ৬ মাস আগে আরজু বেগম তার দুই সন্তান নিয়ে বাবার বাড়িতে চলে যান। ৩-৪ দিন আগে আল আমিনের মা একটি কুকুরকে তাবিজ লেখা রুটি খেতে দিলে স্থানীয়দের নজরে পড়ে। এরপর ওই রুটিটি নিয়ে শুরু হয় তোলপাড়।

গৃহবধূ আরজু বেগম জানান, তার স্বামী প্রবাসে চলে যাওয়ার পর থেকেই শাশুড়ি ও বিবাহিত ননদরা তার সঙ্গে মাঝেমধ্যে ঝগড়া করতেন। তাই বাধ্য হয়ে তিনি শাশুড়ির ওপর অভিমান করে ৬ মাস আগে দুই মেয়েকে নিয়ে বাবার বাড়িতে চলে যান। দীর্ঘ ৬ মাসের মধ্যে তার শাশুড়ি একবারের জন্যও তার সঙ্গে যোগাযোগ করেননি। এমনকি তার স্বামী আল আমিনকেও ভুল বুঝিয়ে তার সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়েছেন।

Advertisement

তিনি বলেন, গত ৩-৪ দিন আগে আমি আমার শ্বশুরবাড়ির লোকজনের মাধ্যমে জানতে পারি একটি আটার রুটিতে আমার নাম, আমার বাবা-মায়ের ও নানার নামসহ তাবিজ লিখে কুকুরকে খেতে দেন আমার শাশুড়ি। পরে স্থানীয়রা কুকুরের কাছ থেকে ওই রুটি উদ্ধার করে স্থানীয় মসজিদের ইমামকে দেখিয়ে তাদের হেফাজতে রেখে আমাকে জানান। পরে আমি ওই রুটি দেখার জন্য গত সোমাবর (৮ জুলাই) শ্বশুরবাড়ি এলাকায় যাই।

আরজু দাবি করেন, তাকে স্বামীর কাছ থেকে আলাদা করতে তার শাশুড়ি এমন কাণ্ড ঘটিয়েছেন। এছাড়াও বিষয়টি তার স্বামীকে জানানোর পর কোনো উত্তর পাননি বলেও দাবি করেন। পরবর্তীতে তিনি আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলেও জানান।

তবে অভিযুক্ত শাশুড়ি শাহিনুর বেগম জানান, তিনি তার ছেলের বউ আরজু বেগম ও দুই নাতনিকে অনেক ভালোবাসেন। ছেলের বউ ছাড়াও তার বাড়িতে থাকতে অনেক কষ্ট হচ্ছে। তাই তিনি এক খনকারের সহযোগিতা নিয়েছেন। ওই খনকার রুটির মধ্যে তাবিজ লিখে তাকে কুকুরকে খাওয়াতে বলেন। এটি খাওয়ার কয়েক দিনের মধ্যে ছেলের বউ নাতনিদের নিয়ে বাড়ি ফিরে আসবেন। এজন্যই তিনি এসব করেছেন।

তবে জাহানপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. নাজিম হওলাদার জানান, গ্রাম এলাকার মানুষ এখনো তাবিজ-কবজে বিশ্বাস করেন। তাই এসব ঘটিয়েছেন। তবে এ বিষয়ে উভয় পক্ষ তার কাছে এলে দুই পক্ষকে মিলিয়ে দেওয়া হবে।

Advertisement

জুয়েল সাহা বিকাশ/এফএ/এএসএম