দেশজুড়ে

কুড়িগ্রামে বাড়ছে পানি, গো-খাদ্য সংকটে বিপাকে বানভাসিরা

কুড়িগ্রামের ১৬টি নদ-নদীর পানি গত দু’দিন ধরে কিছুটা কমে আবারো বাড়তে শুরু করেছে। ফলে জেলার ৯ উপজেলার ৫৫ ইউনিয়নের প্রায় দুই লাখ পানিবন্দি মানুষের দুর্ভোগ বেড়েছে। শুকনা খাবার, বিশুদ্ধ পানি আর গবাদিপশুর খাদ্যের সংকট দেখা দিয়েছে চরম আকারে। জেলা প্রশাসন থেকে ত্রাণ সহায়তা কার্যক্রম চলমান থাকলেও গো-খাদ্য নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন বানভাসিরা।

Advertisement

কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্যমতে, ব্রহ্মপুত্র, ধরলা, দুধকুমার নদের ৪টি পয়েন্টের পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সকাল ৯টার দেওয়া তথ্য অনুসারে ব্রহ্মপুত্র নদে পানি ২৬.৮ সেন্টিমিটার, ধরলা নদীর পানি ৩০.৫৯ সেন্টিমিটার, দুধকুমার নদের পানি ২৯.৬৩ সেন্টিমিটার ও তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমার ২৯.৮ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, গত ১০ দিন ধরে জেলার দুই লাখ পানিবন্দি মানুষের দুর্ভোগের শেষ নেই। রাস্তাঘাট তলিয়ে যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। কয়েকদিনের বন্যায় নাগেশ্বরী উপজেলার ২টি বাঁধ ভেঙে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। চর, দ্বীপ চর ও নিম্নাঞ্চলের মানুষের ঘরে চাল ডাল থাকার পরও রান্না করে খেতে পারছেন না। ফলে খেয়ে না খেয়ে কোনো রকম বেঁচে আছেন বানভাসি মানুষগুলো। অনেকে ঘরবাড়ি ছেড়ে পরিবারের লোকজন নিয়ে উঁচু স্থানে অবস্থান করছেন। উপায় না পেয়ে অনেকে নৌকায় রাত কাটাচ্ছেন। এমন দুর্ভোগে সরকারি ও বেসরকারি সহযোগিতার আশা করছেন বানভাসিরা।

সদর উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়নের রলাকাটা গ্রামের বাসিন্দা মো. আজগার আলী বলেন, টানা ১০ দিন ধরে ঘরে বাইরে পানি। মাঁচার ওপর ছোট বাচ্চাদের নিয়ে খুব কষ্টে আছি। কাজ কামাই নাই, খাওয়ার কষ্ট, থাকার কষ্ট।

Advertisement

আরেক বাসিন্দা মো. নুর মামুন বলেন, পনি কমে আবার বাড়ছে। গরু-ছাগল নিয়ে আমরা বিপাকে পড়েছি। পানিতে কতক্ষণ গরু দাঁড়িয়ে থাকে, দূরে এক জায়গায় রেখে আসবো সে ভরসাও পাই না। কখন যে চুরি হয়ে যায়।

জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. আব্দুল হাই সরকার বলেন, জেলার বন্যা কবলিতদের জন্য বুধবার দুপুর পর্যন্ত ৫৪২ মেট্রিক টন চাল, ৩২ লাখ ৮৫ হাজার টাকা ও ২৩ হাজার ১২০ প্যাকেট শুকনো খাবার ৯ উপজেলায় বিতরণ চলমান ছিল। তবে গো-খাদ্যের কোনো বরাদ্দ নেই।

ফজলুল করিম ফারাজী/এফএ/এএসএম

Advertisement