সরকারি চাকরির নিয়োগে কোটা পদ্ধতি বাতিল এবং ২০১৮ সালের পরিপত্র পুনর্বহালের দাবিতে সারাদেশে সকাল-সন্ধ্যা সর্বাত্মক ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে শাহবাগ মোড় অবরোধ করেছেন ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীরা৷
Advertisement
অবরোধের ফলে শাহবাগসহ আশপাশের সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। এতে সেসব এলাকার সড়কে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়েছে, ভোগান্তিতে পড়েছেন নগরবাসী।
বুধবার (১০ জুলাই) দুপুর পৌনে ১২টায় শাহবাগ মোড় অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা। তবে বেলা ১১টা থেকেই খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে শাহবাগ মোড়ে জড়ো হন তারা। এর আগে সকাল ১০টায় তারা জড়ো হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে।
এদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি হল ও বিভাগ থেকে মিছিল নিয়ে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে জড়ো হতে থাকেন। সেখান থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে হলপাড়া-মুহসিন হল-ভিসি চত্বর-টিএসসি হয়ে শাহবাগে যান তারা। এরপর শাহবাগ মোড় অবরোধ করেন।
Advertisement
আরও পড়ুন
হাইকোর্টের রায়ে স্থিতাবস্থা, কোটা বাতিলের পরিপত্র বহাল ‘বাংলা ব্লকেড’: মোড়ে মোড়ে সতর্ক পুলিশ, বেশিরভাগ সড়ক ফাঁকামিছিল ও অবরোধের সময় শিক্ষার্থীরা ‘অবরোধ অবরোধ-সকাল সন্ধ্যা অবরোধ’, ‘দফা এক দাবি এক-কোটা নট কামব্যাক’, ‘বাধা দিয়ে আন্দোলন-বন্ধ করা যাবে না’, ‘কোটা না মেধা-মেধা মেধা’, ‘আপস না সংগ্রাম-সংগ্রাম সংগ্রাম’, ‘আঠারোর পরিপত্র-পুনর্বহাল করতে হবে’, ‘কোটাপ্রথা নিপাত যাক-মেধাবীরা মুক্তি পাক’, ‘সারা বাংলায় খবর দে-কোটা প্রথার কবর দে’, ‘আমার সোনার বাংলায়-বৈষম্যের ঠাঁই নাই’, ‘জেগেছে রে জেগেছে-ছাত্র সমাজ জেগেছে’, —ইত্যাদি স্লোগান দেন।
কোটাবিরোধী আন্দোলনে ঘোষিত এক দফা কর্মসূচি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে আজ সারাদেশে সকাল-সন্ধ্যা সর্বাত্মক ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচি পালন করছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।
একই দিন রাজধানীর শাহবাগে ‘বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ ও বীর মুক্তিযোদ্ধাদের কটূক্তির প্রতিবাদে’ বিক্ষোভ সমাবেশের ডাক দেয় বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান, প্রজন্ম ও মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তির সব সংগঠন।
Advertisement
সরকারি চাকরির নিয়োগে কোটা পদ্ধতি বাতিল এবং ২০১৮ সালের পরিপত্র পুনর্বহালসহ চার দফা দাবিতে শিক্ষার্থীরা গত শনিবার (৬ জুলাই) শাহবাগে অবস্থান কর্মসূচি শেষে সারাদেশে সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ স্থান, মহাসড়ক অবরোধ করার ঘোষণা দেন। এ কর্মসূচিকে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা ‘বাংলা ব্লকেড’ হিসেবে ঘোষণা করেন। পরে সেই আন্দোলন এক দফায় রূপ নেয়।
আরও পড়ুন
কোটা বণ্টনে সংস্কার জরুরি, সমাধানের সূত্র সরকারের হাতেইএরই ধারাবাহিকতায় রোববার বিকেল ৪টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে টানা চার ঘণ্টা ঢাকার গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে প্রথম দিনের ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচি পালন করেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। ওইদিন রাতেই নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করে পরদিন সোমবারও বিকেল সাড়ে ৩টা থেকে ঢাকাসহ সারাদেশে একই কর্মসূচি পালন করেন তারা।
দ্বিতীয় দিনের অবরোধ প্রত্যাহারের আগে মঙ্গলবার গণসংযোগ কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দেন আন্দোলনকারীরা। সেই কর্মসূচি শেষে আবারও আসে ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচির ডাক।
এমএইচএ/এমকেআর/এমএস