কোটাবিরোধী আন্দোলনে ঘোষিত এক দফা কর্মসূচি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে আজ ঢাকাসহ সারাদেশে সকাল-সন্ধ্যা সর্বাত্মক ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচি পালনের ডাক দিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।
Advertisement
বাংলা ব্লকেডের কারণে জরুরি কাজ ছাড়া আজ সকাল থেকে রাজধানীতে সড়কে বের হননি অনেকেই। এ কারণে বেশিরভাগ সড়ক রয়েছে অনেকটা ফাঁকা। কোথাও কোনো সিগন্যাল ছাড়া পার হতে পারছে যানবাহন।
অন্যদিকে ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচিতে সতর্ক রয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। পূর্ব নির্ধারিত স্থানে মোড়ে মোড়ে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। সড়কে ব্যারিকেড প্রস্তুত রেখেছে পুলিশ। অপ্রীতিকর পরিস্থিতি মোকাবিলায় ব্যারিকেড দিয়ে সড়কের নিরাপত্তা দেবে পুলিশ।
বুধবার (১০ জুলাই) সকাল থেকে রাজধানীর বিজয় সরণি, ফার্মগেট, কারওয়ান বাজার, শাহবাগ, গুলিস্তান, সায়েন্সল্যাব, নীলক্ষেত ও আগারগাঁও ঘুরে এসব চিত্র দেখা গেছে।
Advertisement
সড়কে বাসসহ অন্যান্য যানবাহনের সংখ্যাও কম চলাচল করতে দেখা গেছে।
আরও পড়ুন:
শাহবাগ থেকে ফার্মগেট শিক্ষার্থীদের দখলে কোটা বণ্টনে সংস্কার জরুরি, সমাধানের সূত্র সরকারের হাতেইসড়কের পরিস্থিতি বিষয়ে ডিএমপির উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ফারুক হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, বাংলা ব্লকেডের বিষয়ে সকাল থেকে সতর্ক পুলিশ। মানুষ ও যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে মোড়ে মোড়ে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। কেউ যাতে অপ্রীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে না পারে সেজন্য যথেষ্ট প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
এদিকে রাজধানীর শাহবাগে ‘বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ ও বীর মুক্তিযোদ্ধাদের কটূক্তির প্রতিবাদে’ বিক্ষোভ সমাবেশের ঘোষণা দিয়েছে বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান, প্রজন্ম ও মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তির সব সংগঠন।
Advertisement
এর আগে গতকাল মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করে বলেন, সর্বাত্মক ‘বাংলা ব্লকেড’ অনুযায়ী বুধবার সারাদিন দেশের সব গুরুত্বপূর্ণ স্থান অবরোধ করা হবে। পাশাপাশি হাইওয়ে এবং রেলপথও এ ব্লকেডের আওতায় থাকবে।
তিনি বলেন, আমরা নিয়মতান্ত্রিকভাবে আমাদের কর্মসূচি পালন করছি। এ আন্দোলনের ফলে জনসাধারণের ভোগান্তি হচ্ছে, তার প্রতি আমরা সংবেদনশীল। কিন্তু এর দায়ভার সরকারকে বহন করতে হবে। কারণ, এতদিন আন্দোলনের পরও তারা আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেনি এবং বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করেনি।
নাহিদ ইসলাম বলেন, আমরা চূড়ান্ত সমাধান চাই। আমরা চাই, অনগ্রসর গোষ্ঠীর জন্য কোটাকে ন্যূনতম ৫ শতাংশে এনে সংসদে আইন পাস করে কোটা পদ্ধতিকে সংশোধন করা হোক। যেন পরবর্তী সময়ে এটি আবার সমস্যা হিসেবে সামনে না আসে।
সরকারি চাকরির নিয়োগে কোটা পদ্ধতি বাতিল এবং ২০১৮ সালের পরিপত্র পুনর্বহালসহ চার দফা দাবিতে শিক্ষার্থীরা গত শনিবার (৬ জুলাই) শাহবাগে অবস্থান কর্মসূচি শেষে সারাদেশে সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ স্থান, মহাসড়ক অবরোধ করার ঘোষণা দেন। এ কর্মসূচিকে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা ‘বাংলা ব্লকেড’ হিসেবে ঘোষণা করেন। পরে সেই আন্দোলন এক দফায় রূপ নেয়।
এরই ধারাবাহিকতায় রোববার বিকেল ৪টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে টানা চার ঘণ্টা ঢাকার গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে প্রথম দিনের ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচি পালন করেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। ওইদিন রাতেই নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করে পরদিন সোমবারও বিকেল সাড়ে ৩টা থেকে ঢাকাসহ সারাদেশে একই কর্মসূচি পালন করেন তারা।
দ্বিতীয় দিনের অবরোধ প্রত্যাহারের আগে মঙ্গলবার গণসংযোগ কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দেন আন্দোলনকারীরা। সেই কর্মসূচি শেষে আবারও আসে ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচির ডাক।
টিটি/জেএইচ/এএসএম