ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পাঁচটি লিফটের তিনটিই দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ। ফলে রোগী ও রোগীর স্বজনদের ভোগান্তির যেন অন্ত নেই।
Advertisement
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, হাসপাতালটির ৯তলা বিশিষ্ট নতুন ভবনে মোট পাঁচটি লিফট রয়েছে। এর মধ্যে তিনটিই বন্ধ। শুধুমাত্র দুটি লিফট চালু রয়েছে। দুটি লিফটেও মাঝেমধ্যে সমস্যার সৃষ্টি হয়। এতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে আগত রোগী ও রোগীর স্বজনদের। তবে এ নিয়ে তেমন কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের।
ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালটি দক্ষিণাঞ্চলের প্রান্তিক মানুষের অন্যতম চিকিৎসা সেবার ভরসাস্থল। প্রতিদিন ফরিদপুর ছাড়াও পার্শ্ববর্তী জেলা রাজবাড়ী, মাগুরা, মাদারীপুর, গোপালগঞ্জের অসংখ্য মানুষ এখানে চিকিৎসা সেবা নিতে আসেন। হাসপাতালটি ২৫০ বেড বলে পরিচিতি পেলেও নতুন এই ভবন নির্মাণের পর ৫০০ বেডে রূপান্তর করা হয়।
হাসপাতালের নতুন নয়তলা ভবনটিতে একটি মাত্র সরু সিঁড়ি রয়েছে। এছাড়া পাঁচটি লিফট স্থাপন করা হয়। পাঁচটি লিফটের মধ্যে তিনটি লিফট বন্ধ রয়েছে। অপর দুটি চালু থাকলেও বিদ্যুৎ চলে গেলে একটি লিফট চালু রাখা হয়।
Advertisement
সরেজমিনে দেখা যায়, ৯তলা ভবনের একটি লিফটের সামনে রোগী ও রোগীর স্বজনদের প্রচণ্ড ভিড় রয়েছে। কেউ রোগীকে ট্রলিতে শুইয়ে, কেউ ব্যাগ, ওষুধ, রোগীর প্রয়োজনীয় উপকরণ হাতে নিয়ে লিফটের জন্য অপেক্ষা করছেন। কেউ আবার পাশের টুলে বসে আছেন লিফটের অপেক্ষায়। কিন্তু তাদের অপেক্ষা যেন ফুরাচ্ছে না। আবার অসুস্থ রোগী নিয়ে দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করতে হচ্ছে। অনেকেই আবার একটি মাত্র সরু সিঁড়ি দিয়ে ওপরে যাচ্ছেন। এই সরু সিঁড়ি ব্যবহারেও রয়েছে ভোগান্তি।
মাদারীপুর থেকে আগত রোগীর স্বজন সুমন হাওলাদার বলেন, প্রায় দুই মাস ধরে রোগীর চিকিৎসা চলছে। প্রথম দিকে তিনটি লিফট চালু ছিল। কিন্তু কিছুদিন পর আরেকটি লিফট বন্ধ হয়ে যায়। গত এক সপ্তাহ ধরে একটি লিফট চালু রয়েছে। এই একটি মাত্র লিফটে রোগী, রোগীর ব্যবহৃত ও খাবারের ট্রলি, হাসপাতালের প্রয়োজনীয় মালামাল নেওয়া হচ্ছে। দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে থেকেও মানুষ ওঠার সুযোগ পাচ্ছে না।
রাজবাড়ী থেকে আগত গোবিন্দ মন্ডল বলেন, হাসপাতালের সিঁড়িটি অনেক সরু। লিফট বন্ধ থাকায় মানুষ ঠেলাঠেলি করে ওপরে উঠছে ও নিচে নামছে। এখানে কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে সব মানুষ নেমে আসতে পারবে না। কয়েকদিন আগে আগুন লেগেছিল, সেদিন সব মানুষ নামতে পারেনি। সিঁড়ি দিয়ে ওপরে উঠতে গিয়ে কষ্টের যেন শেষ নেই।
এ বিষয়ে হাসপাতালটির উপ-পরিচালক দীপক কুমার বিশ্বাস বলেন, লিফটের সমস্যা নিয়ে শুধু রোগী ও রোগীর স্বজনরাই নয়, আমাদেরও ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে। এ বিষয়ে গণপূর্তকে চিঠিও দেওয়া হয়েছে। তারা জানিয়েছেন পর্যাপ্ত ফান্ড না থাকায় আপাতত লিফটের কাজ করা যাচ্ছে না।
Advertisement
এফএ/এএসএম