আন্তর্জাতিক

টিউলিপের পর যুক্তরাজ্যের নতুন সরকারে দায়িত্ব পেলেন রুশনারা আলী

বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত আরও এক নারী যুক্তরাজ্যের নতুন সরকারে দায়িত্ব পেয়েছেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাতনি টিউলিপ সিদ্দিকের পর এবার রুশনারা আলীকে নতুন সরকারের গৃহায়ণ, কমিউনিটি ও স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের পার্লামেন্টারি আন্ডার সেক্রেটারি করা হয়েছে। এ নিয়ে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত দুই নারী দেশটির গুরুত্বপূর্ণ দুই পদে নিযুক্ত হলেন।

Advertisement

রুশনারা আলী লন্ড‌নের বাংলাদেশি-অধ্যুষিত টাওয়ার হ্যামলেটসের বেথনাল গ্রিন এবং স্টেপনি আসন থেকে ১৫ হাজার ৮৯৬ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন। তিনি টাওয়ার হ্যামলেটসের আসনে ২০১০ সাল থেকে টানা এমপি হিসেবে নির্বাচিত হয়ে আসছেন। যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টের প্রথম বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত এমপি রুশনারা এ নিয়ে পঞ্চমবারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হলেন।

রুশনারা আলীর জন্ম সি‌লেটে। সাত বছর বয়সে পরিবারের সঙ্গে যুক্তরাজ্যে পাড়ি জমান তিনি। অক্সফোর্ডের সেন্ট জনস কলেজ থেকে দর্শন, রাজনীতি ও অর্থনীতিতে স্নাতক সম্পন্ন করেছেন রুশনারা আলী। ২০১০ সাল থেকেই আন্তর্জাতিক উন্নয়নবিষয়ক ছায়ামন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন রুশনারা। এরপর তিনি ২০১৩ সালে ছায়া শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী নিযুক্ত হন।

যুক্তরাজ্যের ‘সিটি মিনিস্টার’ হিসেবে দায়িত্ব পেলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাতনি টিউলিপ সিদ্দিক।যুক্তরাজ্যের অর্থ মন্ত্রণালয়ের অধীনে আর্থিক সেবা খাত নিয়ন্ত্রণ করে এই দপ্তর। যুক্তরাজ্যের অর্থ মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে টিউলিপ সিদ্দিককে নতুন পার্লামেন্টারি সেক্রেটারি (ইকোনোমিক সেক্রেটারি টু দ্য ট্রেজারি অ্যান্ড সিটি মিনিস্টার) হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। সাধারণত দেশটির অর্থ মন্ত্রণালয়ের অধীনে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ দপ্তর থাকে এবং তারই একটির নেতৃত্বে থাকছেন টিউলিপ।

Advertisement

এর আগে ৪ জুলাইয়ে নির্বাচনে বিশাল ব্যবধানে জয়লাভ করে টিউলিপের দল লেবার পার্টি। এর মাধ্যমে কনজারভেটিভ পার্টির ১৪ বছরের শাসনামলের অবসান ঘটিয়ে দেশটির ক্ষমতায় আসেন লেবার পার্টির নেতা কেইর স্টারমার।

নির্বাচনে ৪১২টি আসনে জয়ী হয়েছে দলটি। অন্যদিকে কনজারভেটিভ পার্টি পেয়েছে ১২১টি আসন। যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টের মোট ৬৫০টি আসনের মধ্যে সরকার গঠনের জন্য কোনো দলকে এককভাবে পেতে হয় ৩২৬টি আসন। এবার নারী সংসদ সদস্য হিসেবে জয়ী হয়েছেন ২৪২ জন।

যদিও গত কয়েক নির্বাচনে ধীরে ধীরে নারী আইনপ্রণেতাদের জয়ী হওয়ার প্রবণতা বেড়েছে। এর আগে ২০১৯ সালে যুক্তরাজ্যের নির্বাচনে নারী এমপি নির্বাচিত হন ২২০ জন। তারও আগে ২০১৭ সালে এমপি হন ২০৭ জন এবং ২০১৫ সালে জয়ী হন ১৯৬ জন। অর্থাৎ এবার রেকর্ড সংখ্যক নারী নিয়ে গঠিত হয়েছে ‍যুক্তরাজ্যের নতুন সরকার।

বিবিসির এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, যুক্তরাজ্যের আগের সব রেকর্ড ভেঙে ২৪ সদস্যবিশিষ্ট নতুন মন্ত্রিসভায় এবার জায়গা করে নিয়েছেন ১১ জন নারী। এছাড়া দেশটির ইতিহাসে এবারই প্রথম একজন নারীকে অর্থমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

Advertisement

এদিকে এই নির্বাচনের মাধ্যমে টানা চতুর্থবারের মতো জয় পান টিউলিপ সিদ্দিক। লন্ডনের হ্যাম্পস্টেড অ্যান্ড হাইগেট আসন থেকে লেবার পার্টির হয়ে লড়েন তিনি।

নির্বাচনে টিউলিপ সিদ্দিক পান ২৩ হাজার ৪৩২ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী কনজারভেটিভ পার্টির ডন উইলিয়ামস পেয়েছেন ৮ হাজার ৪৬২ ভোট। আরেক প্রতিদ্বন্দ্বী গ্রিন পার্টির লরনা জেন রাসেল পান ৬ হাজার ৬৩০ ভোট।

আরও পড়ুন যুক্তরাজ্যে লেবার পার্টির নিরঙ্কুশ জয়  কিয়ার স্টারমারকে বিশ্ব নেতাদের অভিনন্দন  টানা চতুর্থবারের মতো জয়ী হলেন টিউলিপ সিদ্দিক 

এর আগে টিউলিপ সিদ্দিক যুক্তরাজ্যে ছায়া অর্থমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তার আগে তিনি লেবার ছায়া মন্ত্রিসভার সংস্কৃতি, মিডিয়া ও ক্রীড়া উপমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন।

ব্রিটেনের রয়েল সোসাইটি অব আটর্সের ফেলো টিউলিপ সিদ্দিক ২০১৫ সালে প্রথমবার ব্রিটিশ সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। লন্ডনে জন্ম নেওয়া টিউলিপ মাত্র ১৬ বছর বয়সে লেবার পার্টির সদস্য হয়ে ব্রিটিশ রাজনীতিতে যুক্ত হন।

টিটিএন