পশ্চিমবঙ্গে পেঁয়াজ বাংলাদেশে চলে যাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী। আর এ কারণেই বেশ কয়েকদিন ধরে পশ্চিমবঙ্গে পেঁয়াজের দাম সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে চলে গেছে বলে দাবি তার।
Advertisement
বেশ কয়েকদিন ধরে পশ্চিমবঙ্গের বাজারে সবজির দাম আকাশছোঁয়া। আলু, পেঁয়াজ, বেগুন থেকে শুরু করে সব সবজির দামই সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে। অধিকাংশ শাক-সবজির দাম ৮০ থেকে ১০০ রুপির বেশি হয়েছে।
মঙ্গলবার (৯ জুলাই) পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সচিবালয়ে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণে বাজার কমিটি, রাজ্য সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরের মন্ত্রীর পাশাপাশি রাজ্য পুলিশের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন মমতা ব্যানার্জী। সেখানেই তিনি পশ্চিমবঙ্গে পেঁয়াজ বাংলাদেশে চলে যাওয়ার অভিযোগ করেন।
এদিনের বৈঠকের থেকে ১০ দিনের মধ্যে সবজির দাম কমানোর কঠোর নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা।
Advertisement
মমতা ব্যানার্জীর অভিযোগ, বড় ব্যবসায়ীরা আলু হিমঘরে আটকে রেখেছেন। বাজারে যাতে আলুর যোগান অব্যাহত থাকে, সে বিষয়ে স্পষ্ট নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। একই সঙ্গে বাজারের প্রয়োজনীয় আলু যাতে বাইরে চলে না যায়, সেজন্য সীমান্তে নজরদারি চালানোরও নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
বৈঠকে মমতা বলেন, কৃষকেরা দাম পাচ্ছেন না, অথচ বাজারে বিক্রি হচ্ছে বেশি দামে। সবজির দাম বাড়িয়ে অতিরিক্ত টাকা কামাচ্ছেন মুনাফাখোররা। এই জিনিস কেন চলবে?
আলুর দাম বৃদ্ধি হওয়া নিয়ে তিনি বলেন, আলুর দাম গত বছর এই সময় ছিল ২২ রুপি করে। এবার সেটা ৩৫ রুপি। বাজারে কৃত্রিম চাহিদা তৈরির জন্য বড় ব্যবসায়ীদের একাংশ হিমঘরে আলু আটকে রেখেছেন। এমন করা চলবে না।
এরপরই মুখ্যমন্ত্রী পশ্চিমবঙ্গের পেঁয়াজ বাংলাদেশে চলে যাওয়া অভিযোগ করে বলেন, আলু রাজ্যের বাইরে বিক্রি করে দেওয়া হচ্ছে না তো? সীমান্তে নজরদারি চালানো হবে। আমার রাজ্যের চাহিদা আগে মিটবে, তারপর আমি বাইরে যাবে।
Advertisement
তিনি আরও বলেন, আমার পেঁয়াজ চলে যাচ্ছে বাংলাদেশে। আমি যেতে বারণ করিনি। আমার পোষাবে, তারপর আপনি দেবেন। মহারাষ্ট্রের নাসিক থেকে নিক। কোনো অসুবিধা নেই, নাসিকে পেঁয়াজ বেশি হয়। আমার পেঁয়াজ এখানে বিক্রি না করে, মুনাফাখোররা তুলে নিয়ে যাচ্ছে অন্য দেশে। আর আমার রাজ্য কেন ভুক্তভোগী হবে। এটা কি আমার দেখার দায়িত্ব? এটা দেখার দায়িত্ব কৃষি মন্ত্রণালয়ের।
পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন বাজারে বেশি দামে সবজি বিক্রি আটকাতে টাস্ক ফোর্সকে আরও সক্রিয় হওয়ার নির্দেশ দেন মমতা ব্যানার্জী। মুখ্যমন্ত্রীর কড়া নির্দেশ, যতদিন না দাম কমছে, ততদিন বাজারে নিয়মিত নজরদারি চালাবে ট্রাস্ক ফোর্সের সদস্যরা। এর সঙ্গে নজর রাখবে পুলিশ। এর পাশাপাশি নিয়মিত বৈঠকে বসতে হবে তাদের। আর সেই বৈঠকে থাকবেন মুখ্যসচিব রাজ্য পুলিশের ডিজি। প্রতি সপ্তাহে সেই রিপোর্ট দিতে হবে মুখ্যমন্ত্রীকে। এরপরই মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ দেন, ১০ দিনের মধ্যে দাম কমাতে হবে।
প্রত্যেক বছর বর্ষা এলেই কারা কোন উদ্দেশ্যে দাম এতটা বাড়িয়ে দিয়েছে, তা নিয়ে এদিনের বৈঠকে প্রশ্ন তোলেন মমতা। কিছু লোক অতিরিক্ত লোভের আশায় দাম বাড়াচ্ছে বলে দাবি করেন মুখ্যমন্ত্রী। অন্যান্য সবজিও যাতে সংরক্ষণ করা যায় সেই জন্য রাজ্যে মাল্টি পারপাস কোল্ড স্টোরেজ তৈরির নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
ডিডি/এসএএইচ