দ্রব্যমূল্যের উত্তাপ ক্রমেই বাড়ছে। সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে জীবনযাত্রার ব্যয়ভার। তবে সে তুলনায় মানুষের আয় বাড়ছে না। ব্যয়ের বাড়তি চাপ সামাল দিতে সাধারণ মানুষ হিমশিম খাচ্ছেন। এ অবস্থায় হয় তারা ঋণ করছেন অথবা জমানো সঞ্চয়ে হাত দিচ্ছেন।
Advertisement
মূল্যস্ফীতির বাজারে মানুষ সঞ্চয়পত্র ভাঙতে বাধ্য হচ্ছেন। এতে সঞ্চয়পত্রের নিট বিক্রিও কমছে। সদ্য বিদায়ী অর্থবছরের প্রথম ১১ মাসে (জুলাই-মে) সঞ্চয়পত্রের নিট বিক্রির পরিমাণ ঋণাত্মক হয়েছে। এসময়ে নতুন সঞ্চয়পত্র বিক্রির চেয়ে আগে কেনা সঞ্চয়পত্রের মূল্য পরিশোধ বেশি হয়েছে।
আরও পড়ুনসঞ্চয়পত্রে নির্ভরতা আরও কমাচ্ছে সরকারমেয়াদ পূর্তির পূর্বে সঞ্চয়পত্র ভাঙাবেন যেভাবেখাত সংশ্লিষ্টদের মতে, সদ্য শেষ হওয়া ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বার্ষিক মূল্যস্ফীতি ছিল ৯ দশমিক ৭৩ শতাংশ। ২০১০-১১ অর্থবছরের পর থেকে বিগত ১৩ বছরে মূল্যস্ফীতির এমন আকাশচুম্বী হার দেখা যায়নি। অর্থবছরজুড়ে সংকটের কারণে টিকে থাকতে দুর্দিনের সঞ্চয় ভাঙিয়ে চলছেন সাধারণ মানুষ। এতে নিট বিক্রির পরিমাণ ঋণাত্মক হয়ে গেছে।
জাতীয় সঞ্চয়পত্র অধিদপ্তরের পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, গত মে মাসে সঞ্চয়পত্রের নিট বিক্রি ঋণাত্মক হয়েছে তিন হাজার ৬৫৩ কোটি টাকা। আর সদ্যবিদায়ী ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম ১১ মাসে নিট বিক্রি ঋণাত্মকের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৭ হাজার ৭৪২ কোটি টাকা।
Advertisement
এর আগে ২০২২-২৩ অর্থবছরের একই সময়েও নিট বিক্রি ঋণাত্মক ধারায় ছিল। তখন এর পরিমাণ ছিল তিন হাজার ২৮ কোটি টাকা। সে হিসাবে ২০২২-২৩ অর্থবছরের তুলনায় ২০২৩-২৪ অর্থবছরের একই সময়ে (প্রথম ১১ মাসে) সঞ্চয়পত্রে নিট বিক্রি কমেছে ৩৮৬ শতাংশ।
আরও পড়ুনসঞ্চয়পত্র বিক্রির চেয়ে পরিশোধ বেশিচলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে সঞ্চয়পত্র থেকে সরকারের নিট ঋণ নেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১৫ হাজার ৪০০ কোটি টাকা। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের সঞ্চয়পত্র বিক্রি থেকে নিট ঋণ নেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ১৮ হাজার কোটি টাকা। এরও আগে ২০২২-২৩ অর্থবছরে এ লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩৫ হাজার কোটি টাকা।
তবে ওই অর্থবছর (২০২২-২৩) শেষে নিট বিক্রি হয়েছিল ঋণাত্মক প্রায় তিন হাজার ২৯৫ কোটি টাকা। পুরো অর্থবছরজুড়ে সঞ্চয়পত্র থেকে সরকার এক টাকারও ঋণ নেয়নি। এসব দিক বিবেচনায় রেখেই ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে সঞ্চয়পত্র থেকে সরকারের ঋণ নেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা আরও কমানো হয়েছে।
ইএআর/এমকেআর/জেআইএম
Advertisement