অর্থনীতি

পাহাড়ি ঢল থেকে রক্ষা পাবে বান্দরবান, ব্যয় ৪৮ কোটি টাকা

পাহাড়ি ঢল ও মাতামুহুরী নদীর আকস্মিক ভাঙন রোধে ৪৮ কোটি ৬৫ লাখ টাকা ব্যয় করবে সরকার। ‘বান্দরবান জেলার লামা উপজেলায় আনসার ব্যাটালিয়ন সদর দফতর ও লামাবাজার রক্ষাকল্পে মাতামুহুরী নদীতে প্রতিরক্ষা কাজ বাস্তবায়ন’ শীর্ষক একটি প্রকল্প প্রস্তাব করা হয়েছে পরিকল্পনা কমিশনে।

Advertisement

পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবিত প্রকল্প নিয়ে সম্প্রতি প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির সভা করেছে পরিকল্পনা কমিশন।

পরিকল্পনা কমিশন জানায়, প্রকল্পের উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবে (ডিপিপি) লামা উপজেলায় ১ দশমিক ৫৫ কিলোমিটার নদী তীর প্রতিরক্ষামূলক কাজ বাবদ ৪৫ কোটি ৮৬ লাখ টাকা (প্রতি মিটার ২ লাখ ৯৫ হাজার) টাকার সংস্থান রাখা হয়েছে। নদীর তীর প্রতিরক্ষা কাজের জন্য প্রস্তাবিত ডিজাইনে বন্যার পানির উচ্চতা, তীব্রতা, গতিবেগ ইত্যাদি বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে।

এছাড়া প্রকল্পে মাতামুহুরী নদীর ডান তীরে ৬০০ মিটার দীর্ঘ তীর প্রতিরক্ষা কাজের প্রতি মিটার ২ লাখ ৫৩ হাজার টাকা ব্যয় ধরা হয়। বাম তীর ৯৫০ মিটার তীর প্রতিরক্ষা কাজে প্রতি মিটারে ৩ লাখ ২৩ হাজার টাকা ব্যয় ধরা হয়। সমসাময়িক অন্যান্য প্রকল্পে তীর প্রতিরক্ষা কাজের মিটার প্রতি প্রাক্কলন ব্যয়ের তুলনামূলক চিত্র নিয়েও সভায় জানতে চাওয়া হয়।

Advertisement

পরিকল্পনা কমিশন জানায়, প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি বান্দরবান জেলাটি পার্বত্য চট্টগ্রামের তিন জেলার মধ্যে অন্যতম। জেলাটি সাতটি উপজেলা ও ২৯টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত।

অন্যদিকে মাতামুহুরী নদীটি বান্দরবান জেলার আলীকদম উপজেলার চোখইং ইউনিয়নের উৎপন্ন হয়ে জেলার বিস্তীর্ণ পাহাড়ি অঞ্চলের ভেতর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে কক্সবাজার জেলার চকরিয়া উপজেলায় এসে বঙ্গোপসাগরের মহেশখালী চ্যানেলে গিয়ে পড়েছে। পাহাড়ি এই খরস্রোতা নদীগুলো বান্দরবান পর্বতশ্রেণির বিপুল পরিমাণ জলরাশি বয়ে নিয়ে আসে। নদীগুলো ফ্লাসি ও সাইনুসাইডাল হওয়ায় বর্ষায় অত্যন্ত ভয়ঙ্কর, খরস্রোতা ও আগ্রাসী রূপ ধারণ করে।

ফলে সরকারি-বেসরকারি স্থাপনা, অসংখ্য গ্রোথ সেন্টার, শিক্ষাকেন্দ্র, স্বাস্থ্যকেন্দ্র, কবরস্থান, ইউনিয়ন পরিষদ, বাজার, কাঁচা-পাকা সড়ক, বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন, ধর্মীয় উপাসনালয় এবং বির্স্তীর্ণ উর্বর ফসলি জমি নদী ভাঙনের হুমকির সম্মুখীন। এছাড়াও অতি বৃষ্টির কারণে সৃষ্ট পাহাড়ি ঢলে প্রতি বছরেই বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়ে থাকে। তাই এই গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা রক্ষা করে দীর্ঘমেয়াদি টেকসই প্রতিরক্ষা কাজ বাস্তবায়ন প্রয়োজন।

এ অবস্থায় প্রকল্পের স্থানে প্রতিরক্ষাকাজসহ ওয়াওয়ে নির্মাণ একাধারে নদীর তীরের দীর্ঘমেয়াদি সুরক্ষা দেবে এবং নদী তীর সংলগ্ন এলাকায় পর্যটন শিল্পের বিকাশে ভূমিকা রাখবে।

Advertisement

এমওএস/এমআরএম/জিকেএস