প্রবাস

মানুষের মূল্য

আপনি যখনই গতানুগতিকতার বাইরে ভিন্ন কিছু বলবেন, করবেন বা করতে যাবেন, আপনি একা হয়ে যাবেন, ভয়ঙ্কর একা। যে সাথে ছিলো সেও পিছিয়ে যাবে। যার সাথে জীবনে কোনো কিছু নিয়ে আলোচনা করেননি সেও আসবে ভুল ধরতে। যে সত্য-মিথ্যা ঠিকঠাক কিছুই জানে না সেও আসবে জ্ঞান দিতে। যে সারাজীবন খাল বিলের চেয়ে বড় জলাশয় দেখেনি সেও আসবে সমুদ্রের ঢেউকে কটাক্ষ করতে...

Advertisement

আপনি কুঁকড়ে যাবেন, ভেতরে ভেতরে দুমড়ে মুচড়ে যাবেন, জীবন বিষণ্ন স্থবির হয়ে যাবে, এরপর একটা সময় আবার ঘুরে দাঁড়াবেন, আপনার মতো করে কাজ করে যাবেন, আবারও কথার বিষ শুরু হবে, যাদের কোনো অধিকার নেই তারাও খোঁচা দেবে, যারা জীবনে কখনোই কোনো যোগাযোগের মধ্যে নাই তারাও হিংসা করবে, চারপাশে সীমা লঙ্ঘন হতেই থাকবে এবং তারা কেউ বিন্দুমাত্র অনুশোচনায় ভুগবে না। ততদিনে আপনি বধির, কানে তুলো তবে এই চক্র কখনো থামবে না, চলতেই থাকবে।

কিন্তু শতাব্দীর পর শতাব্দী পরে আপনি যখন ইতিহাস হয়ে যাবেন তখন সবাই আপনার কাজের প্রশংসা করবে, কথার প্রশংসা করবে, আপনার করে যাওয়া কাজকে, বলে যাওয়া কথাকে মূল্যায়ন করবে। তারা কেন আপনার সময়ে জন্মাননি, আপনাকে দেখে যেতে পারেননি এজন্য আফসোস করবে।

জগতের সব জ্ঞানী, গুণী, মনীষী, দার্শনিক, বিজ্ঞানী সবার জীবনই কমবেশি এমন করেই কেটেছে। কারো কারো জীবনের চেয়েও আরও বেশি ভয়ানক দুর্বিসহ কেটেছে। খুব কম বিখ্যাত মানুষই তাদের জীবদ্দশায় যশস্বী হতে পেরেছেন, বেশিরভাগই পারেননি কিন্তু তাই বলে তারা হারিয়েও যাননি। নিজ প্রজন্ম মূল্যায়ন না করলেও উত্তর প্রজন্ম তাদের মূল্যায়ন করেছে, এখানেই তাদের জীবনের সার্থকতা।

Advertisement

কিন্তু যারা সারাক্ষণ ভুল ধরেছিল, না জেনে বুঝে জ্ঞান দিয়েছিল, কষ্ট দিতে কটাক্ষ করেছিল তারা নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে কালের স্রোতে, কোথাও কারোর লেশ মাত্র নেই।

মানুষ বাঁচে তার কর্মে, কারো নিন্দায় বা সমালোচনায় না।

এমআরএম/এএসএম

Advertisement