গ্রিসের মানোলাদা, লাপ্পাসহ বিভিন্ন গ্রামাঞ্চলে নেপালের নাগরিকদের পাচার ও শ্রমশোষণ চক্রে কয়েকজন বাংলাদেশি ও পাকিস্তানি নাগরিক জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে। তবে সম্প্রতি অনুসন্ধান ও অভিযান পরিচালনা করে নয় সদস্যের অপরাধী নেটওয়ার্ক ভেঙে দিয়েছে বলে জানিয়েছে গ্রিক পুলিশ।
Advertisement
বলকান ইনভেস্টিগেটিভ রিপোর্টিং নেটওয়ার্কের তথ্যে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ইনফোমাইগ্রেন্টস। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, গ্রিক পুলিশ গত ৪ জুলাই জানিয়েছে রোমানিয়া থেকে গ্রিসে পাচার এবং গুরুতর শোষণের সঙ্গে জড়িত একটি চক্র ভেঙে দিয়েছে গ্রিক পুলিশ। চক্রটির হোতারা বাংলাদেশ এবং পাকিস্তানের নাগরিক বলে জানিয়েছে এথেন্স পুলিশ। নেটওয়ার্কটি গ্রিসের গ্রামাঞ্চলে নেপালি কৃষি শ্রমিকদের শোষণে জড়িত ছিল।
পুলিশের তদন্ত অনুসারে, শোষণের শিকার নেপালি অভিবাসীরা মূলত বৈধ কাজের ভিসায় রোমানিয়ায় গিয়েছিলেন। সেখান থেকে তাদের উচ্চ বেতনের প্রলোভন দেখিয়ে গ্রিসে পাচার করতো চক্রটি। একবার গ্রিসে চলে এলে তাদের পাসপোর্টসহ যাবতীয় নথি আটকে রেখে গুরুতর শ্রমশোষণ করা হতো।
নেপালি অভিবাসীদের গ্রিসের গ্রামাঞ্চলে নিয়ে এসে ফসল তোলার কাজে মৌসুমি শ্রমিক হিসেবে কাজে লাগানো হতো। পুলিশের মতে, শোষণের হার ‘আধুনিক দাসত্বের’ সমমান ছিল।
Advertisement
সম্প্রতি অভিযানে গ্রিক পুলিশ নেপাল থেকে আসা এক ২৯ বছর বয়সী নারী এবং ৩০ বছর বয়সী একজন পুরুষকে গ্রেপ্তার করেছে। যারা নেটওয়ার্কটির হয়ে কাজ করতেন। এছাড়া এই অপরাধী সংগঠনের ৩৩ থেকে ৬১ বছর বয়সী অন্য পাঁচজন সদস্যকেও শনাক্ত করা হয়েছে। যাদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রেখেছে পুলিশ। তাদের বিরুদ্ধে মানবপাচার এবং অভিবাসন বিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
গ্রিক পুলিশের মুখপাত্র কনস্টান্টিনা ডিমোগ্লিডু অনুসন্ধানী সংবাদ মাধ্যম বলকান ইনভেস্টিগেটিভ রিপোর্টিং নেটওয়ার্ককে জানিয়েছেন, এই চক্রের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিরা বাংলাদেশ এবং পাকিস্তানের নাগরিক। এছাড়া গ্রিসের দুজন অপরাধী রয়েছে যাদের পরিচয় এখনও শনাক্ত করা যায়নি।
তিনি জানিয়েছেন, ভুক্তভোগী অভিবাসীরা গ্রিসের বিভিন প্রদেশের গ্রামে মৌসুমি শ্রমিক হিসেবে স্ট্রবেরি তোলার কাজ করেছিল।
পুলিশের মতে, চক্রটি ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর থেকে গ্রিসে সক্রিয় কার্যক্রম শুরু করেছিল। তারা অভিবাসীদের রোমানিয়া থেকে সার্বিয়া এবং উত্তর মেসিডোনিয়া হয়ে বেআইনিভাবে ব্যক্তিগত গাড়ি দিয়ে গ্রিসে নিয়ে যেতো। তারা অভিবাসীদের প্রথমে থেসালোনিকি নিয়ে যেতো। পরে সেখান থেকে রাজধানী এথেন্সে পাঠাতো। পরে পাসপোর্ট নিয়ে জব্দ করে কাজে নিযুক্ত করে অভিবাসীদের চূড়ান্ত গন্তব্যে চক্রটির সদস্যরা পৌঁছে দিতো।
Advertisement
এমআরএম/এমএস