একজন নারী-পুরুষের মধ্যে ভালোবাসার সম্পর্ক যতটা সময় নিয়ে তৈরি হয়, তার থেকেও হয়তো কম সময়ে তা ভেঙে যেতে পারে। এর পেছনে থাকতে পারে শত শত অভিমান, অবিশ্বাস, সন্দেহ, কটূক্তি, কিছু না পাওয়া বেদনা, তৃতীয় ব্যক্তির প্রবেশ ইত্যাদি।
Advertisement
তবে কোনো সম্পর্কই হঠাৎ ভেঙে যায় না, বা দু’জন ভালোবাসার মানুষ কখনো হুট করে বদলে যান না। এর পেছনে নানা কারণ থাকতে পারে, যা দুজনের উপরই বর্তায়। সম্পর্কে ভালো থাকা ও রাখা দুটো বিষয়েই দু’জনের অবদান রাখা জরুরি। না হলে একঘরে থাকার পরও দুজন মানুষ ধীরে ধীরে অপরিচিত হয়ে ওঠেন।
বর্তমানে কর্মব্যস্ত জীবনে পরিবারকে সময় দিতে পারেন খুব কম মানুষই। এমনও দেখা যায়, একই পরিবারের স্বামী-স্ত্রী দুজনেই কাজ করছেন। ফলে সংসারে খুব কম সময়ই তারা একে অন্যের জন্য বরাদ্দ রাখছেন। এরপরও যদি তারা কিছুটা কোয়ালিটি টাইম পার না করেন, তাহলে সম্পর্কে দূরত্ব তৈরি হতে বেশিদিন লাগবে না।
তখন একঘরে থেকেও স্বামী-স্ত্রী একে অন্যের প্রতি দূরত্ব অনুভব করতে পারেন। কখনো দু’জন আবার কখনো একজনই তা অনুভব করতে পারেন। এমন ক্ষেত্রে খোলাখুলি আলোচনা করলে ও সম্পর্কে কিছুটা সময় দিলে সেই দূরত্বটা কাটতে পারে।
Advertisement
এ বিষয়ে সম্পর্কবিদ লুসিল শ্যাকলটন তার ইনস্টাগ্রাম পোস্টে জানান, দাম্পত্যে কৌতূহলী হওয়া ভালো। এতে একে অপরের সঙ্গে বোঝাপড়া ভালো থাকে ও সম্পর্ক আরও উন্নত হয়। একঘরে থেকেও কেউ কারও প্রতি কৌতূহলী না হলে বা কারও প্রতি অভিযোগ বা অভিমান না থাকাটাই বরং সম্পর্কে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।
কারণ প্রিয় মানুষটির প্রতি কৌতূহল হারানো হতে পারে সম্পর্কে দূরত্বের একটি লক্ষণ। মনে রাখতে হবে, মানুষ সর্বদা পরিবর্তনশীল। তাই সম্পর্ক ভালো রাখতে বেশ কিছু নিয়ম মেনে চলা জরুরি। যেমন-
আরও পড়ুন
বয়সে ছোট সঙ্গীরাই নারীদের বেশি সুখে রাখেন, বলছে গবেষণা ঘরেও তৈরি করা যায় কন্ডিশনার, ব্যবহারের নিয়ম জানুন সময় দিন, যোগাযোগ রাখুনস্বামী-স্ত্রী হোক বা প্রেমিক-প্রেমিকা, সম্পর্কে ভালো রাখতে সব সময় যোগাযোগ রাখতে হবে একে অন্যের সঙ্গে। তার মানে এই নয় যে, দীর্ঘক্ষণ কথা বলতে হবে ফোনে বা বেশি সময় কাটাতে হবে দু’জনে।
Advertisement
কর্মব্যস্ত জীবনে সবারই উচিত নিজের রুটিন থেকে কিছুটা সময় বের করে সঙ্গীর সঙ্গে কাটানো। যাতে সঙ্গীর মনে না হয় যে, আপনি তাকে সময় দিচ্ছেন না। এছাড়া সারাদিনে তাকে বেশ বেশ কয়েকবার ফোন করে বা টেক্সট করেও খোঁজ নিতে পারেন।
একে অন্যের প্রতি বিশ্বাস রাখুনসারাদিন আপনি কিংবা আপনার স্ত্রী যতই ব্যস্ত থাকুক না কেন বা যে যতই দূরে থাকুক, মনে কখনো সন্দেহ পুষবেন না। এটি কিন্তু এক সময় ব্যাধিতে পরিণত হতে পারে। আপনার মনে যেন কোনো সন্দেহ না আসে এজন্য সব কথা সঙ্গীর সঙ্গে খোলাখুলি শেয়ার করুন। এতে করে একজনের আরেকজনের প্রতি বিশ্বাস রাখা সহজ হবে।
ঝগড়ার সহজ সমাধান করুনসব দম্পতির মধ্যেই ছোট-বড় নানা কারণে ঝগড়া হতে পারে। এটি স্বাভাবিক বিষয়। তবে অনেকে আছেন ঝগড়ার রেশ ধরে রাখেন ও একে অন্যকে দোষারোপ করেন কিংবা কটূক্তি করেন। এতে করে সমস্যা আরও বাড়তে থাকে। তাই যখনই ঝগড়া বা দ্বন্দ্ব হোক না কেন পরক্ষণেই তা মিটমাট করে নিন। এতে দু’জনের মধ্যে দূরত্বেরও সৃষ্টি হবে না।
গুরুত্ব দিন সঙ্গীকেসঙ্গীর মতামতকেও গুরুত্ব দিন। অনেক দম্পতির মধ্যেই এ নিয়ে অশান্তি হয়। দেখা যায়, কোনো সংসারে পুরুষরাই সব সিদ্ধান্ত নেন আবার অনেক সংসারে নারীর সিদ্ধান্তকেই প্রাধান্য দেন তার স্বামী বা পরিবার। তবে স্বামী-স্ত্রী দু’জনের সিদ্ধান্তেই কিন্তু সংসারের হাল ফিরতে পারে। আপনার সঙ্গীর যাতে মনে না হয় যে, আপনি তাকে গুরুত্ব দিচ্ছেন না। তাই সব বিষয়ে সঙ্গীর গুরুত্ব বিবেচনায় রাখুন।
ঘুরতে যানযখনই সময় পাবেন, তখনই কাছে কিনারে গিয়ে ঘুরে আসুন সঙ্গীকে নিয়ে। এতে করে দু’জনের মধ্যে দূরত্ব কমবে। দু’জন আরও কাছাকাছি অনুভব করবেন নিজেদেরকে। আর এই ফাঁকে সম্পর্ক ঝালাই করে নিতে পারেন।
জেএমএস/এএসএম