ধর্ম

দাফনের পর কবরের পাশে আজান দেওয়া কি সুন্নত?

আমাদের দেশের কোনো কোনো অঞ্চলে মৃত ব্যক্তিকে দাফনের পর কবরের পাশে দাঁড়িয়ে আজান দেওয়ার প্রচলন রয়েছে। এ আমলটির কোনো ভিত্তি নেই। নবিজি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ও তার সাহাবিদের যুগে বা তাদের পরবর্তী যুগেও মুসলমানদের মধ্যে এ রকম কোনো আমল প্রচলিত ছিল বলে জানা যায় না। তাই এ ধরনের মনগড়া আমল থেকে বিরত থাকা জরুরি।

Advertisement

ইসলামের উৎস হলো কোরআন ও রাসুলের সুন্নত অর্থাৎ তার কথা, কাজ ও সমর্থন। কোরআন ও রাসুলের সুন্নত ছাড়া অন্য কোনো সূত্রে আমলের নতুন কোনো ধরন উদ্ভাবন করে তাকে বিশেষ ফজিলতপূর্ণ মনে করলে তা হয় দীনের মধ্যে নতুন উদ্ভাবন বা বিদআত। আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন,

إِنَّ أَصْدَقَ الْحَدِيثِ كِتَابُ اللهِ وَأَحْسَنَ الْهَدْيِ هَدْيُ مُحَمَّدٍ وَشَرُّ الأُمُوْرِ مُحْدَثَاتُهَا وَكُلُّ مُحْدَثَةٍ بِدْعَةٌ وَكُلُّ بِدْعَةٍ ضَلاَلَةٌ وَكُلُّ ضَلاَلَةٍ فِي النَّارِ

নিশ্চয় সর্বোত্তম বাণী আল্লাহর কিতাব এবং সর্বোত্তম আদর্শ মুহাম্মদের (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আদর্শ। আর সবচেয়ে নিকৃষ্ট বিষয় হল (দীনের মধ্যে) নব উদ্ভাবিত বিষয়। আর নব উদ্ভাবিত প্রত্যেক বিষয় বিদআত এবং প্রত্যেক বিদআত হল ভ্রষ্টতা এবং প্রত্যেক ভ্রষ্টতার পরিণাম জাহান্নাম। (সুনানে নাসাঈ: ১৫৬০)

Advertisement

আমাদের দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে মৃতদেহ কবর দেওয়ার পর মৃতের নাজাতের জন্য এমন কিছু বিশেষ ধরনের আরও কিছু আমলের প্রচলন দেখা যায় যেগুলোর কোনো ভিত্তি নেই। যেমন নতুন কবরের চার কোণে চারজন কোণে দাঁড়িয়ে চার কুল (অর্থাৎ সূরা কাফিরুন, ইখলাস, ফালাক, নাস) পড়া, কবরের চার কোণে চারটি তাজা ডাল পুঁতে দেয়া অথবা চারটি খুঁটি হাতে নিয়ে চার কুল পড়া এবং কবরে গেড়ে দেওয়া বা রেখে দেওয়া ইত্যাদি। এসব ভিত্তিহীন আমলকে বিশেষ ফজিলতপূর্ণ বা মৃতের মুক্তির উপায় বলে বিশ্বাস করা জায়েজ নেই।

মৃত ব্যক্তিকে কবর দেওয়ার পর তার জন্য বেশি বেশি দোয়া করা উচিত, দান-সদকা, কোরআন তেলাওয়াত বা অন্যান্য আমল করে তার জন্য সওয়াব পাঠানো উচিত যেভাবে ইসলাম আমাদের শিখিয়েছে।

ওএফএফ/জিকেএস

Advertisement