চাঁদপুর লঞ্চঘাটে যাত্রী হয়রানি যেন থামছেই না। যাত্রীদের মালপত্র ও ব্যাগ নিয়ে অটোরিকশাচালকের টানাটানি নিত্য ঘটনায় পরিণত হয়েছে। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ভুক্তভোগী যাত্রীরা।
Advertisement
সম্প্রতি সকাল ১০টা থেকে বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত চাঁদপুর লঞ্চঘাটের দ্বিতীয় পন্টুনে অবস্থান করে দেখা যায়, ঢাকা থেকে যাত্রী নিয়ে আসা এমভি ইমাম হাসান-৭ নামে লঞ্চের সামনে বহু অটোরিকশাচালক দাঁড়িয়ে। যাত্রীরা লঞ্চ থেকে নামতেই তাদের ব্যাগ নিয়ে টানাটানি শুরু করে দেন তারা। অটোরিকশাচালকরা রায়পুর, ফরিদগঞ্জ ও হাইমচর বলে হাঁকডাক দিচ্ছিলেন।
ঢাকা থেকে আসা হাইমচরের যাত্রী সোলায়মান মিয়া বলেন, ‘স্ত্রী-সন্তান নিয়ে এসেছি। লঞ্চ থেকে নেমে এক জায়গায় স্থির হয়ে দাঁড়ানোর আগেই চালকরা টানাটানি শুরু করেন। এটি বিরক্তিকর। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর এদিকে দৃষ্টি দেওয়া উচিত।’
লঞ্চঘাটের টিকিট কাউন্টারের পাশেই অটোরিকশা স্ট্যান্ড। সেখানকার চিত্র আরও ভয়াবহ। যাত্রীরা টিকিট কাউন্টার পার হলেই চালকদের তোপের মুখে পড়তে হয় তাদের। পুরুষ যাত্রীদের হাত ধরে এবং নারী যাত্রীদের ব্যাগ ধরে টানাটানি শুরু করেন চালকরা। এসময় যাত্রী নিয়ে কাড়াকাড়ি করতে গিয়ে মারামারি শুরু হয়ে যায় চালকদের মধ্যে।
Advertisement
ঢাকা থেকে আসা ফরিদগঞ্জের যাত্রী আরিফ হোসেন বলেন, ‘ঢাকা থেকে চাঁদপুর ঘাট পর্যন্ত কোনো হয়রানি নেই। খুবই আরামদায়ক ভ্রমণ। তবে নিজ এলাকায় এসে ঘাটের মধ্যে চালকদের বিশৃঙ্খল অবস্থায় পড়তে হয়। তারা কে কার আগে যাত্রী নেবেন এবং অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করার প্রতিযোগিতায় নামেন। যে কারণে আমাদের মতো সাধারণ যাত্রীরা খুবই বিব্রতকর অবস্থায় পড়েন।’
ঘাটের টিকিট কাউন্টারে থাকা বিআইডব্লিউটিএর একাধিক কর্মচারী জানান, ঘাটে যাত্রী হয়রানি খুবই সাধারণ দৃশ্যে পরিণত হয়েছে। যাত্রীর সংখ্যা বাড়লে বিশৃঙ্খলা আরও বাড়ে।
এ বিষয়ে চাঁদপুর নৌথানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুজ্জামান মনির বলেন, ‘যাত্রীদের হয়রানি থেকে রক্ষায় আমরা অনেকবার চালকদের আটক করেছি এবং আইনের আওতায় এনেছি। এখনো নৌপুলিশ সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করছে। সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে হয়রানি করা চালকদের এনে বোঝানো হয়। তারপরও তাদের দীর্ঘদিনের অভ্যাস নিয়ন্ত্রণে আসছে না।’
চাঁদপুর বিআইডব্লিউটিএর উপ-পরিচালক মোহাম্মদ নাহিদ হোসেন বলেন, লঞ্চঘাটে এই পরিস্থিতির জন্য ঈদের সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে আমি নিজে দাঁড়িয়ে থেকে বিষয়টি নিয়ন্ত্রণ করেছি। এখনো যদি একই চিত্র হয়, তাহলে আবারও নৌপুলিশকে বিষয়টি জানানো হবে। আমাদের কর্মকর্তাদেরও প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হবে।
Advertisement
শরীফুল ইসলাম/এসআর/জিকেএস