ঝালকাঠির রাজাপুরে ৩নং পূর্ব সাতুরিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির ক্লাসরুমের পলেস্তারাসহ বিম ধসে ৫ শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। রোববার (৭ জুলাই) ক্লাস চলাকালীন বেলা পৌনে ১১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
Advertisement
এ ঘটনায় ফয়সাল আজমের ছেলে পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র জুনায়েদ আজম, আবু বকর খানের ছেলে লিটন খান, হেলালের ছেলে রনি হাওলাদার, মানিক আকনের ছেলে আব্দুল্লাহ ও আলমগীর হোসেনের ছেলে তামিম আহত হয়েছে। আহতরা স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা নিয়েছে।
এ ঘটনার পর ওই স্কুলের প্রায় ১৪৩ জন শিক্ষার্থী ক্লাস বর্জনের ঘোষণা দেয়। ঘটনার পর থেকে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবদের মধ্যে ক্ষোভ ও আতঙ্ক বিরাজ করছে।
আহত শিক্ষার্থী জুনায়েদ, তারিম ও লিটন জানায়, আগ থেকেই কমবেশি পলেস্তারা ভেঙে পড়তো। রোববার ক্লাস চলাকালীন হঠাৎ বিমসহ অনেক স্থানের পলেস্তারা ধসে পড়ে বিকট শব্দ হয়। এতে ৫ শিক্ষার্থী মাথায় ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত পায়।
Advertisement
এতে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ভীতি ছড়িয়ে পড়ে এবং আতঙ্কিত হয়ে দিগবিদিক ছুটাছুটি শুরু করে। নতুন ভবন নির্মাণ না করা পর্যন্ত আর ওই ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে ক্লাস করবে না বলেও জানিয়েছে শিক্ষার্থীরা।
অভিভাবক হানিফ, কবির ও সুলতান বলেন, অনেকদিন ধরেই পলেস্তারা খসে পড়তো। কিন্তু কারো কোনো মাথাব্যথা নেই। এভাবে হঠাৎ বিম ভেঙে পড়ায় ওই স্কুলে আর কোনো পড়াশোনার পরিবেশ নেই। আল্লাহ কোমলমতি শিশুদের বড় রকমের দুর্ঘটনার হাত থেকে রক্ষা করেছেন। আজকে বড় রকমের প্রাণহানির ঘটনা ঘটতে পারতো। নতুন করে স্কুলের ভবন নির্মাণ না করা পর্যন্ত স্কুলে আর বাচ্চাদের পাঠাবো না।
৩নং পূর্ব সাতুরিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. সিদ্দিকুর রহমান জানান, ২০০৪ সালে পিডিটু প্রকল্পের আওতায় স্কুলের এ ভবন নির্মাণ করা হয়েছিল। ২-৩ বছর ধরেই বিভিন্ন স্থানের পলেস্তারা খসে পড়া দেখে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের অবহিত করেছিলাম। তারা মাঝে মাঝে এসে ঘুরে দেখে যেতেন, কিন্তু ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা না করায় ক্লাস চালিয়ে যাচ্ছিলাম।
তিনি বলেন, ভবনটি এখন খুবই ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে গেছে। শিক্ষার্থীরা বড় রকমের দুর্ঘটনার হাত থেকে বাঁচলেও অন্তত ৫ শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। কোনোভাবেই এ স্কুলে ক্লাস করার পরিবেশ নেই। শিক্ষার্থীদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। দ্রুত ভবন নির্মাণের দাবি করেন তিনি।
Advertisement
রাজাপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আক্তার হোসেন জানান, বিষয়টি শুনে ভিডিও কলে দেখেছি, ওখানে যাওয়া হয়নি। প্রধান শিক্ষককে একটি আবেদন করতে বলা হয়েছে এবং ওই কক্ষটিতে তালা লাগিয়ে দিতে বলা হয়েছে, যাতে কোনো শিক্ষার্থী ওখানে না যায়। উপজেলা ইঞ্জিনিয়ার পরিদর্শন করার পর ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করা হবে এবং পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।
মো. আতিকুর রহমান/এফএ/এমএস