পড়াশোনা নষ্ট করে ছেলেমেয়েদের কোটাবিরোধী আন্দোলনের কোনো যৌক্তিকতা নেই বলে দাবি করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রোববার (৭ জুলাই) গণভবনে বাংলাদেশ যুব মহিলা লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভায় তিনি এ দাবি করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, কোটা বন্ধ করা হয়েছিল। কিন্তু হাইকোর্টের রায়ে বহাল হয়েছে। হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে পড়াশোনা নষ্ট করে ছেলেমেয়েরা আন্দোলন করছে। হাইকোর্টের রায় এটার বিরুদ্ধে এভাবে আন্দোলন করা, এটাতো সাবজুডিস, কারণ আমরা সরকারে থেকে কিন্তু এভাবে কথা বলতে পারি না। হাইকোর্ট রায় দিলে সেখানে (সমাধানও) হাইকোর্ট থেকে আবার আসতে হবে। কিন্তু আজকে আন্দোলনের নামে যেটা করা হচ্ছে, পড়াশোনার সময় নষ্ট করা। এটার কোনো যৌক্তিকতা আছে বলে আমি মনে করি না।
Advertisement
তিনি বলেন, হাইকোর্টের রায় আমরা সব সময় মেনে নেই। কিন্তু আমরা দেখলাম এখন কোটাবিরোধী আন্দোলন আবার গড়ে তোলার চেষ্টা হচ্ছে। ছেলেমেয়েরা পড়াশোনা নষ্ট করে এখন কোটাবিরোধী আন্দোলন করছে। সেখানে মেয়েরাও আন্দোলন করছে। এখানে আমার একটা প্রশ্ন, যারা এর আগে কোটাবিরোধী আন্দোলন করেছিল, তারা কতজন পাবলিক সার্ভিস কমিশনে পরীক্ষা দিয়েছিল, আর কতজন পাস করেছিল সেটা বের করা দরকার।আরও পড়ুন: ‘পেনশন স্কিম-কোটা আন্দোলন গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছি’ কোটা বাতিলের দাবিতে রোববার ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচি কোটা বাতিলের দাবিতে ফের শাহবাগ অবরোধ
শেখ হাসিনা বলেন, কোটা কিন্তু একবার বাতিল করা হয়েছিল। কিন্তু ফলাফলটা কী? পাবলিক সার্ভিস কমিশনের হিসাব যদি দেখা যায়, তখন দেখা যাবে যে, আগে কোটা থাকতে মেয়েরা যে পরিমাণ সুযোগ পেতো সে পরিমাণ সুযোগ কিন্তু এই কয় বছরে আর পায়নি। এটা হলো বাস্তবতা, এমনকি অনেক জেলা, প্রত্যন্ত অঞ্চল সেসব অঞ্চলের মানুষগুলো কিন্ত বঞ্চিত থেকে গেছে। তারাও চাকরি পাচ্ছে না। এ রকম বঞ্চিত হওয়ার কারণেই কেউ মামলা করে, হাইকোর্ট একটা রায় দেয়। নারীর ক্ষমতায় ও অগ্রগতিতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছিলেন জানিয়ে তিনি বলেন, আন্দোলন-সংগ্রামে যুব মহিলা লীগ সব সময় ভূমিকা পালন করেছে। দেশের মানুষের অধিকার আদায়ে কাজ করেছে সংগঠনটি। মহিলা লীগের কর্মীদের পেনশন স্কিমে যোগ দেওয়ার পরামর্শ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সবার জন্য পেনশন স্কিম করা হয়েছে। জীবনের নির্ভরতার জন্য পেনশন। আমরা চাই সবাই একটু ভালোভাবে বাঁচুক।’
বিএনপি ক্ষমতায় থাকার সময় যেভাবে নারী নেত্রীদের ওপর নিযার্তন করেছে তা নিন্দারও যোগ্য নয় মন্তব্য করে তিনি বলেন, দলটি ভোট চুরি করে মাত্র দেড় মাস টিকেছে। গ্যাস বিক্রির মুচলেকা দিয়ে ২০০১ সালে ক্ষমতায় গিয়েছিল বিএনপি। ভোট চুরির অপবাদে দুইবার ক্ষমতাচ্যুত হয়েছে তারা। বিএনপির নির্যাতনের চিত্র মানুষের সামনে তুলে ধরতে হবে। তারা সমাজের অভিশপ্ত বোঝা। তাদের অত্যাচার-নির্যাতন যেন আবার ফিরে না আসে, সেদিকে সজাগ থাকতে হবে।’
Advertisement
অনুষ্ঠানে যুব মহিলা লীগের ওয়েবসাইট উদ্বোধন করেন শেখ হাসিনা। যুব মহিলা লীগের সভাপতি আলেয়া সরওয়ার ডেইজির সভাপতিত্বে সাধারণ সম্পাদক শারমিন সুলতানা লিলিসহ কেন্দ্রীয় ও মহানগর নেতাকর্মীরা অনুষ্ঠানে অংশ নেন।
এসইউজে/জেএইচ/এমএস