যশোরের শার্শায় পটোল চাষ করে স্বাবলম্বী হয়েছেন রায়হান উদ্দিন (৬০) নামে এক কৃষক। রায়হান উদ্দিন উপজেলার শার্শা ইউনিয়নের বেড়ী গ্রামের তোফাজ্জেল খন্দকারের ছেলে। দীর্ঘদিন ধরে পটোল চাষ করে অভাবের সংসারে স্বচ্ছলতা এনেছেন তিনি। গত কয়েক বছর আগেও তাদের সংসারে অভাব-অনটন লেগেই থাকতো। পটোল চাষ করে তিনি ঘুরিয়েছেন ভাগ্যের চাকা।
Advertisement
জানা যায়, কৃষক রায়হান ৩৩ শতক জমিতে মাচায় বোম্বাই জাতের পটোলের চাষ করেছেন। সারিতে সারিতে রোপণ করা পটোল গাছের একদিকে থোকায় থোকায় ফুটেছে ফুল; অন্যদিকে দেখা মিলছে ছোট-বড় পটোল। তার ক্ষেত থেকে পটোল উত্তোলন করা যাবে এখনো ২-৩ মাস। অন্য ফসল থেকে পটোলে বেশি লাভ হওয়ায় ভবিষ্যতে আরও জমিতে চাষ করবেন তিনি।
উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্যমতে, এ বছর শার্শা উপজেলায় ৩৪৫ হেক্টর জমিতে পটোল চাষ হয়েছে। ফলন ও লাভ ভালো হওয়ায় এ উপজেলার কৃষকেরা পটোল চাষে আগ্রহী হচ্ছেন।
পটোল চাষি রায়হান উদ্দিন জানান, একসময় তার সংসারে অভাব-অনটন লেগেই থাকতো। বর্তমানে পটোল চাষ করে তার সংসারে স্বচ্ছলতা ফিরেছে। এখন তার অভাব কেটে গেছে। এবার ১ বিঘা জমিতে পটোল চাষ করেছেন। এই জমিতে পটোল চাষ করে খরচ হয়েছে প্রায় ২০ হাজার টাকা। খরচ বাদ দিয়ে এ পর্যন্ত তিনি ৭০ হাজার টাকার পটোল বিক্রি করেছেন। তার ক্ষেত থেকে সপ্তাহে দুবারে প্রায় ১৫-২০ মণ পটোল তোলেন।
Advertisement
উত্তোলন করা পটোল তিনি উপজেলার সবচেয়ে বড় কাঁচাবাজার নাভারণ কাঁচামালের আড়তে ২৫-৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করেন। অনেক সময় আবার পাইকারি ব্যবসায়ীরা মাঠ থেকেই পটোল নিয়ে যান। আবহাওয়া ভালো থাকলে তার এই জমি থেকে আরও ১ লাখ থেকে দেড় লাখ টাকার পটোল বিক্রি করতে পারবেন বলে তিনি আশাবাদী। অন্য ফসলের তুলনায় পটোলে বেশি লাভ হওয়ায় আগামীতে বেশি জমিতে চাষ করবেন বলেও জানান তিনি।
কয়েকজন পটোল চাষি জানান, তারা দীর্ঘদিন ধরে পটোল চাষের সঙ্গে যুক্ত। পটোল চাষে তাদের দ্বিগুণ লাভ হয়। এ বছর আবহাওয়া ভালো থাকায় বেশি ফলন পাচ্ছেন। বাজারে বেশ ভালো দামে বিক্রি করতে পারছেন। এ বছর পটল চাষে তারা লাভবান হবেন। সারাবছর চাহিদা থাকায় এবং অন্য ফসলের থেকে বেশি লাভ হওয়ায় আগামীতে আরও বেশি জমিতে পটোলের চাষ করবেন।
উপজেলা কৃষি অফিসার দীপক কুমার সাহা জানান, পটোল একটি জনপ্রিয় সবজি। সারাবছরই কম-বেশি পাওয়া যায়। চলতি মৌসুমে শার্শা উপজেলায় অনেক চাষি পটোল চাষ করে বেশ সাফল্য পেয়েছেন। এ বছর শার্শা উপজেলায় ৩৪৫ হেক্টর জমিতে পটোল চাষ করেছেন কৃষকেরা। কৃষকদের অর্থনৈতিকভাবে লাভবানের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে নিরাপদ সবজি চাষে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে।
তিনি আরও জানান, উপজেলা কৃষি অফিস সব সময় আধুনিক পদ্ধতিতে পটোল উৎপাদন, পোকামাকড় ও রোগ দমনে আইপিএম পদ্ধতিসহ বিভিন্ন কার্যকর পরামর্শ দিয়ে থাকেন। কৃষি অফিস থেকে বীজ ও সার দিয়ে কৃষকদের ধানের পাশাপাশি সবজি চাষে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে।
Advertisement
মো. জামাল হোসেন/এসইউ/জেআইএম