বিসিএস লিখিত আন্তর্জাতিক বিষয়াবলি ১০০ নাম্বারের পরীক্ষা মোটামুটি বড় সিলেবাস। তবে প্রয়োজনীয় টেকনিক গ্রহণের ফলে এই বিষয়ের প্রস্তুতি অনেকটাই সহজ হয়ে যায়। আন্তর্জাতিক বিষয়ের প্রস্তুতি ও গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ দিয়েছেন ৪৩তম বিসিএসে কৃষি ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত মো. ইমাম হোসেন জ্যোতি—
Advertisement
আন্তর্জাতিক বিষয়াবলি একটি মৌলিক বিষয়। আপনার চিন্তা, যৌক্তিকতা সবকিছুই লিখিত আন্তর্জাতিক বিষয়ে ব্যবহার করার সুযোগ পাবেন। ১০০ নাম্বারের আন্তর্জাতিক বিষয়াবলি প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য আপনাকে ৩টি অংশে বিষয়টি ভাগ করতে হবে। সঠিক প্রস্তুতির জন্য ৩টি অংশই একে অপরের পরিপূরক।
প্রথম অংশ (৪০ নাম্বার)কনসেপচুয়াল বিষয়: এ অংশে আপনার থেকে বিভিন্ন মৌলিক বিষয়ের ওপর স্পেসিফিক তথ্য চাওয়া হবে। সংজ্ঞা, নীতি, পার্থক্য, গঠন জানতে চাওয়া হবে। আপনার ধারণা না থাকলে এ ধরনের প্রশ্নে যৌক্তিকতা, ধারণা দিয়ে উত্তর করতে পারবেন না। জ্ঞানমূলক, অনুধাবনমূলক বিষয়গুলো এই অংশের। বিশ্ব রাজনীতির মূল ভিত্তিগুলোর ওপরই প্রশ্ন আসে এই অংশে। বাজারে প্রচলিত বইতে বিশ্ব রাজনীতি, অর্থনীতি, জলবায়ু, মৌলিক ভিত্তি ইত্যাদি প্রতিটি বিষয় অধ্যায়ভিত্তিক ভাগ করা আছে।
এ অংশের প্রস্তুতি১. বিষয়ের ওপর পরিষ্কার ধারণা রাখুন।২. বাজারে প্রচলিত বই থেকে বিগত প্রশ্ন পড়ে নিন।৩. মৌলিক বিষয়গুলো বিশেষজ্ঞদের বই থেকে পড়ে নিন।৪. পত্রিকা ও সংবাদের মাধ্যমে সমসাময়িক বিশ্ব রাজনীতি সম্পর্কে অবগত থাকুন।৫. সংজ্ঞাসহ উদাহরণ, বিশেষজ্ঞদের উক্তি এই অংশে গুরুত্বপূর্ণ। ৬. আনকমন অংশে আপনি তখনই অনুমানমূলক লেখা লিখতে পারবেন; যখন অনেক জানা থাকে। তাই জানার কোনো বিকল্প নেই।
Advertisement
৬০ নাম্বারের অ্যামপিরিক্যাল ও প্রবলেম সলভিং অংশে যৌক্তিকতা দিয়ে আপনার দক্ষতা, জ্ঞান, ধারণা সবকিছু জাহির করতে পারবেন। তার জন্য দরকার প্রচুর তথ্য জানা। এস্পিরিকাল অংশে মোট ৭টি অধ্যায় থাকলেও প্রশ্ন হয় গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক ইস্যু নিয়ে। বৈশ্বিক দ্বন্দ্ব, ঘটনা, প্রভাব, সমস্যা নিয়ে বিস্তারিত লিখতে হয়। ৪৫ নাম্বারের জন্য যথেষ্ট সময় পাবেন নিজেকে সর্বোচ্চ উপস্থাপন করতে।
আরও পড়ুন
বিসিএসের পুরো জার্নিটা উপভোগ করছি: ইমাম হোসেন জ্যোতি বছরে শেষ হবে একটি বিসিএস, সুফল পাবেন চাকরিপ্রার্থীরা এ অংশের প্রস্তুতি১. প্রতিদিন আন্তর্জাতিক সম্পাদকীয় পড়া, সংবাদ দেখা। প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ দেশের বর্তমান বিশ্ব রাজনীতিতে স্বার্থ, দ্বন্দ্বগুলো জানা।২. বিশ্ব মানচিত্র এ টু জেড বুঝতে পারা ও গুরুত্বপূর্ণ দেশগুলোর ভূ-রাজনীতি জানা।৩. সমসাময়িক বিষয় যেমন- যুদ্ধ, দ্বন্দ্ব, চুক্তি, পর্যবেক্ষণ, ব্যাখ্যা, ফলাফল ইত্যাদি নোট করে পড়া।৪. বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংগঠনগুলোর উৎপত্তি, বিকাশ, কার্যক্রম ও সংস্কার সম্পর্কে জানা।৫. বিশ্বমঞ্চে ঘটনার প্রেক্ষিতে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের উক্তি, ঘোষণা, প্রেক্ষাপট নোট করে পড়া রেফারেন্সসহ।৬. রেফারেন্স তৈরি করা, আন্তর্জাতিক আইনগুলোর ধারা প্রয়োগ করা। এজন্য সংবাদ শোনার পাশাপাশি বাজারের লিখিত সম্পাদকীয় গাইড বই যথেষ্ট।
সমস্যা সমাধানএ অংশে ১৫ নাম্বার থাকে। এখানে বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত কোনো এক সমস্যার সমাধান চাইবে অথবা বৈশ্বিক রাজনীতির সমস্যার সমাধান চাইতে পারে।
Advertisement
১. আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে বাংলাদেশের অবস্থান জানতে হবে। সমস্যা, সুবিধা ও ভবিষ্যৎ সম্পর্কে জানতে হবে।২. সমস্যা সমাধানে বিশেষজ্ঞ, সরকার, সংবিধান, পারিপার্শ্বিক মতামত জানা, বিশ্লেষণ নোট করতে হবে।৩. আপনার নিজস্ব চিন্তা থাকলে সেটির ব্যাখ্যা তৈরি করতে হবে, অবশ্যই প্রয়োজনীয় সূত্রসহ।৪. প্রতিটি সুপারিশে কোটেশন, মানচিত্র ও রেফারেন্স ব্যবহার করতে হবে।৫. দেশের বর্তমান সমস্যা, ভবিষ্যৎ স্বার্থ, অতীত ব্যর্থতার সমাধান ও সাফল্য বিষয়গুলো নোট করে পড়া।৬. নীল কালি, পেন্সিলের প্রয়োজনীয় ব্যবহার করতে হবে।৭. সময়ের প্রতি লক্ষ্য রাখতে হবে।
আন্তর্জাতিক বিষয় অনেক বড় সিলেবাস মনে হলেও কনসেপচুয়াল অংশের জন্য প্রিলিমিনারির পড়া রিভিশন দিয়ে এবং বাকি দুই অংশে সমসাময়িক বিষয়ের প্রতি আপডেট থাকলেই দ্রুত সময়ে ১০০ নাম্বারের প্রস্তুতি গুছিয়ে আসবে। এ ছাড়া বর্তমানে বাজারে বহু প্রচলিত বইগুলো গোছানো প্রস্তুতিতে সহায়তা করবে।
এসইউ/এএসএম