ফরিদপুর শহরতলীর টেপাখোলায় কুমার নদের স্লুইস গেট এলাকা এখন নতুন বিনোদনকেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। কুমার নদের উৎস মুখ স্লুইসগেট এলাকায় পানি প্রবাহ দেখতে প্রতিনিয়ত ভিড় করছেন হাজারো মানুষ। তাদের পদচারণায় মুখর হয়ে ওঠে এলাকাটি।
Advertisement
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জেলায় উন্মুক্ত বিনোদনের সু-ব্যবস্থা না থাকায় স্লুইসগেট এলাকায় পরিবার-পরিজন নিয়ে ছুটে যান বিনোদনপ্রেমীরা। তবে প্রতিদিনের তুলনায় শুক্র-শনিবার ও বন্ধের দিনে পর্যটকদের ঢল নামে সেখানে। নতুন এ বিনোদনকেন্দ্র ঘিরে স্থানীয়দের আয়ের পথ সৃষ্টি হয়েছে। বিভিন্ন দোকানপাট ছাড়াও নৌকা চালিয়ে অনেকেই ভালো রোজগার করছেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, খুলে দেওয়া হয়েছে মদনখালী স্লুইসগেট। পদ্মা নদী থেকে হু হু করে বিপুল গর্জনে পানি ঢুকছে কুমার নদে। আর এ দৃশ্য উপভোগ করতে প্রতিদিন দুপুর থেকে রাত পর্যন্ত ভিড় করছে দর্শনার্থীরা। কেউ বসে আড্ডা দিচ্ছেন, কেউ পানি প্রবাহ দেখছেন, আবার কেউ মোবাইল ফোনে ছবি-ভিডিও,সেলফি তুলছেন।
পরিবার নিয়ে আগত আলালপুরের তাবিদুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন,‘খুবই চমৎকার একটি জায়গা। এখানে আসলে খুবই ভালো লাগে।’
Advertisement
শীবরামপুর এলাকার বাসিন্দা পারভেজ হাসান রাজিব বলেন, ‘এটি ফরিদপুরের নতুন এক দর্শনীয় স্থান। সময় পেলেই বন্ধুদের নিয়ে ঘুরতে আসি। এখানে আসলে মন ভালো হয়ে যায়। সব মিলিয়ে এটি অসাধারণ জায়গা। প্রতিদিন দুপুর থেকে রাত পর্যন্ত গড়ে কয়েক হাজার মানুষের ভিড় জমে এখানে।’
ফরিদপুর রাজেন্দ্র কলেজের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী প্রেমা জাগো নিউজকে বলেন, ‘এখানে সবাই ঘুরতে আসেন। ঘোরার মতো একটা জায়গা। সকাল-বিকেল এমনকি রাত পর্যন্ত এখানে অসংখ্য মানুষ ঘুরতে আসে, আড্ডা দেয়। এখানে আসলে ভালো লাগে।
আরও পড়ুন বিস্ময়কর ৫ সমুদ্র সেতু, দেখলেই চোখ হবে ছানাবড়া ভারতের গোয়া ভ্রমণে সমুদ্রসৈকত ছাড়াও যা যা দেখবেনঘুরতে আসা শহরের বাসিন্দা সুমাইয়া আফরিন জাগো নিউজকে বলেন, এর আগে এখানে এতো মানুষ ছিল না। ইদানিং মানুষের প্রচুর ভিড় বেড়েছে। কাছের-দূরের অসংখ্য মানুষ এখানে আসেন। জায়গাটি খুবই মনোরম। নৌকাতেই ঘুরে বেড়ানো যায়।’
কুষ্টিয়া থেকে আগত কুলফি মালাই বিক্রেতা সিরাজ বলেন, ‘খাঁটি গাভীর দুধ দিয়ে নিজেই কুলফি মালাই তৈরি করে এখানে বিক্রি করি। বেচাবিক্রিও ভালো। প্রতিদিন গড়ে ২০০-৩০০ টাকা আয় হয়।’ অন্যদিকে খেলনা বিক্রেতা মোহাম্মদ বেপারি বলেন, ‘অন্যদিন কেনা-বেচা একটু কম হলেও শুক্র-শনিবার ও বন্ধের দিনে বেশ ভালো বিক্রি হয়।’
Advertisement
স্থানীয় বাসিন্দা ও নৌকার মাঝি পবিত্র মালো জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমার নিজের একটি নৌকা আছে। দর্শনার্থীরা অনেকেই নৌকায় ঘুরতে পছন্দ করেন। নৌকায় ঘুরতে জনপ্রতি এক ঘণ্টায় ৫০ টাকা নেওয়া হয়। ইদানিং ভালোই আয় হচ্ছে, যা দিয়ে সংসার চলে যায়।’
এ বিষয়ে ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক(ডিসি) মো. কামরুল আহসান তালুকদার বলেন, ‘শহরতলীর ধলার মোড় ও মদনখালী স্লুইসগেট এলাকা উন্নতকরণ ও দর্শনার্থীদের সুযোগ-সুবিধার লক্ষ্যে নানা ধরনের পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নের জোর চেষ্টা চলছে।’
এন কে বি নয়ন/জেএমএস/জিকেএস