রাজশাহীর বাঘার পদ্মায় হঠাৎ করেই ভারত থেকে আসা নদীর পানি ঢুকে পড়েছে। এতে প্লাবিত হয়েছে পদ্মানদী অববাহিকার চরাঞ্চলের নিম্নাঞ্চল। তলিয়ে গেছে বাদাম ও তিলের ক্ষেত। অথচ কয়েকদিনের মধ্যে ফসল ঘরে তোলার কথা ছিল। কিন্তু ফসল পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় প্রায় দেড়শ’ কৃষকের স্বপ্নও ভেঙেছে। কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, ক্ষতি নিরূপণে কাজ করছে তারা।
Advertisement
উপজেলার কালিদাসখালি গ্রামের ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক সহিদুল ইসলাম বলেন, তার ৩২ বিঘা বাদামের ক্ষেত বন্যার পানিতে ডুবে গেছে। আর কয়েকদিনের মধ্যে ফসল ঘরে উঠতো। গত সোমবার বিকেল থেকে পদ্মার পানি লোকালয়ে ঢুকতে থাকে। তাই সব ক্ষেত তলিয়ে গেছে।
চকরাজাপুর গ্রামের হাবিবুর রহমান বলেন, বাদাম আবাদে প্রতি বিঘায় ২১-২২ হাজার টাকা খরচ হয়েছে।
তিনি আরও জানান, রাজা সেখ, হাশেম ফকির, রহমান শিকদার, শুকুর সেখ, ইউসুফ শেখ, ওয়াহব আলী শেখসহ ১৫০ জন কৃষকের ৬০০-৭০০ বিঘা জমির বাদাম ফসল তলিয়ে গেছে। এছাড়া আবাদ করা ৪-৫ বিঘা তিল ফসলও এখন পানির নিচে।
Advertisement
চকরাজাপুর, কালিদাশখালি ও লক্ষীনগর এলাকায় চরাঞ্চলে জেগে উঠা পদ্মার চরে এক হাজার বিঘা জমিতে বাদাম আবাদ করেছিলেন এসব কৃষকরা।
লক্ষীনগর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ফজলু সেখ বলেন, বন্যার কারণে ক্ষতির শিকার হয়েছেন কৃষকরা। অনেকেই তলিয়ে যাওয়া অপরিপক্ব বাদাম তুলেছেন। সেটাতেও লাভ হবে না, কারণ পানিতে বাদাম পচে যায়।
চকরাজাপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আজিজুল আযম বলেন, পদ্মার নদীতে জেগে উঠা চকরাজাপুর, কালিদাশখালি চরে বন্যার পানিতে বাদাম ও তিল তলিয়ে গেছে।
বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান ডিএম মনোয়ার হোসেন বাবুল দেওয়ান বলেন, তার ইউনিয়নে দেড় শতাধিক কৃষকের ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের তালিকা করা হচ্ছে।
Advertisement
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শফিউল্লাহ সুলতান বলেন, এবার চরে ৪৭৩ হেক্টর জমিতে বাদামের আবাদ হয়। পদ্মায় পানি আসায় কৃষকের ফসলের ক্ষতি নিরূপণে কাজ করছে কৃষি বিভাগ। তবে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে ক্ষতি বেশি হবে।
রাজশাহীর পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুর রহমান বলেন, মঙ্গলবার পানির উচ্চতা ছিল ১১ দশমিক ৬২ মিটার। বিপৎসীমা হলো ১৮ মিটার। এতে দীর্ঘমেয়াদী বন্যা হওয়ার আশংকা নেই।
বাঘা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তরিকুল ইসলাম বলেন, সব ধরনের বন্যা মোকাবিলার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। তাৎক্ষণিকভাবে যেখানে প্রয়োজন হবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সাখাওয়াত হোসেন/জেডএইচ/জেআইএম