আন্তর্জাতিক

কর্মীদের বেতন বাড়ালেই মালিকদের জেলে দিচ্ছে মিয়ানমার

দেশীয় মুদ্রার অবমূল্যায়ন আর আকাশছোঁয়া মূল্যস্ফীতির কারণে বিপাকে রয়েছে মিয়ানমারে সাধারণ মানুষজন। এ অবস্থায় কর্মীদের সুবিধার কথা বিবেচনায় বেতন বাড়িয়ে দিয়েছিলেন ব্যবসায়ী উ পিয়া ফিও জাও। মান্দালয় শহরে মোবাইল ফোনের তিনটি দোকান রয়েছে তার। বেতন বাড়ানোর খবরে দারুণ খুশি হয়েছিলেন কর্মীরা। ফেসবুকে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে এই দোকানমালিকের উদারতার কথা।

Advertisement

কিন্তু বিষয়টিকে ভালোভাবে নেয়নি মিয়ানমারের সামরিক জান্তা। খবর ছড়াতেই ফিও জাওকে গ্রেফতার করে সামরিক বাহিনী। বন্ধ করে দেওয়া হয় তার তিনটি দোকান। তার বিরুদ্ধে মানুষকে উসকানি দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে।

আরও পড়ুন>>

মিয়ানমারে তীব্র সংঘাত/ বাংলাদেশে ঢুকতে পারে আরও রোহিঙ্গা রাখাইনের নিয়ন্ত্রণ হারানোর পথে মিয়ানমার সেনাবাহিনী রাখাইনের বাসিন্দাদের বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী এলাকা ত্যাগের নির্দেশ

ফিও জাও একাই নন, কর্মীদের বেতন বাড়ানোর কারণে সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে অন্তত ১০ জন ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করেছে জান্তা প্রশাসন।

Advertisement

দেশটির একজন আইনজ্ঞ জানান, মিয়ানমারে বেতনবৃদ্ধি অবৈধ নয়। মূলত গ্রেফতার ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, কর্মীদের বেতন বাড়ানোর মাধ্যমে তারা মানুষদের বিশ্বাস করাচ্ছেন যে, দেশে মূল্যস্ফীতি বাড়ছে। এতে সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে বলে মনে করছে জান্তা।

ফিও জাওয়ের একটি দোকানের বাইরে সেনারা একটি নোটিশ টানিয়ে দিয়েছেন। সেখানে লেখা, ‘সমাজের শান্তি ও আইনশৃঙ্খলায় বিঘ্ন ঘটানোর কারণে’ দোকানটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুন>>

ভারতের ৬ গ্রামে স্থানীয়দের ছাড়িয়ে গেছে মিয়ানমার নাগরিকের সংখ্যা অনুপ্রবেশের চেষ্টা, রোহিঙ্গাবোঝাই নৌকা ফিরিয়ে দিলো বিজিবি বিপাকে পড়ে এখন রোহিঙ্গাদের কাজে লাগাচ্ছে মিয়ানমার সেনাবাহিনী

অভিযুক্তদের তিন বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে বলে জানা গেছে। এ বিষয়ে জান্তা সরকারের কারও মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

Advertisement

নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মী বলেন, আমরা বেতনবৃদ্ধির জন্য খুব কৃতজ্ঞ ছিলাম। কিন্তু এখন দোকান বন্ধ, আর বেতন পাবো না। তিনি বলেন, জিনিসপত্রের চড়া দামের কারণে আমাদের মতো সাধারণ মানুষ কষ্ট পাচ্ছে।

২০২১ সালে সামরিক বাহিনীর অভ্যুত্থান এবং এর বিরুদ্ধে পরবর্তীতে গণতন্ত্রকামীদের বিদ্রোহ মিয়ানমারে ভয়াবহ অর্থনৈতিক সংকট তৈরি করেছে।

বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদন অনুসারে, ২০১৯ সালের পর থেকে দেশটির অর্থনৈতিক উৎপাদন নয় শতাংশ কমে গেছে। মিয়ানমারের এক-তৃতীয়াংশ মানুষ এখন দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করছে।

সূত্র: দ্য নিউইয়র্ক টাইমসকেএএ/