এশিয়ান হাইওয়ের সঙ্গে নিরাপদ যোগাযোগ ব্যবস্থা নিশ্চিতকরণ এবং ভারতের মধ্যে উচ্চ সম্ভাবনাময় অর্থনৈতিক জোন তৈরির সুযোগ সৃষ্টির লক্ষ্যে ‘ক্রসবর্ডার নেটওয়ার্ক ইম্প্রুভমেন্ট প্রজেক্ট (বাংলাদেশ)’ উন্নয়ন প্রকল্পের চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)। এই প্রকল্পের মোট ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে ২ হাজার ৪৭২ কোটি ৯৩ লাখ টাকা। এছাড়া এই প্রকল্পটিসহ ৬ হাজার ৯৯ কোটি ৬৮ লাখ টাকা ব্যয়ে ৯টি প্রকল্পের চূড়ান্ত অনুমোদন দেয়া হয়েছে।মঙ্গলবার শেরেবাংলা নগর এনইসি সম্মেলন কক্ষে একনেক চেয়ারপারসন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সভাপতিত্বে একনেক বৈঠকে প্রকল্পটি চূড়ান্ত অনুমোদন দেয়া হয়। বৈঠক শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান। তিনি বলেন, আজকে প্রত্যেকটি প্রকল্প অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ৬ হাজার ৯৯ কোটি ৬৮ লাখ টাকা ব্যয়ে ৯টি প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নে সরকারি অর্থায়ন ২ হাজার ৫৪৩ কোটি ৫০ লাখ টাকা, সংস্থার নিজস্ব তহবিল ১৫৫ কোটি ২২ লাখ টাকা এবং প্রকল্প সাহায্য ৩ হাজার ৪০০ কোটি ৯৬ লাখ টাকা ব্যয় করা হবে।পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, উন্নয়ন সহযোগি সংস্থা জাইকার সহায়তায় ‘ক্রসবর্ডার নেটওয়ার্ক ইম্প্রুভমেন্ট প্রজেক্ট (বাংলাদেশ)’ প্রকল্পের কাজ হাতে নেওয়া হয়েছে। এশিয়ান হাইওয়ে বাংলাদেশের মধ্যদিয়ে অতিক্রম করেছে। এ প্রকল্প বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তবর্তী জরাজীর্ণ সড়ক ও সেতুর উন্নয়ন করা হবে। প্রকল্পটি সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ প্রকল্পটি মে ২০১৬ হতে ২০২২ সালের জুনের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে বলে জানান তিনি।মুস্তফা কামাল বলেন, আজকের অনুমোদন পাওয়া অপর গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প হচ্ছে ‘আমিনবাজার-মাওয়া-মংলা ৪০০ কেভি সঞ্চালন লাইন’ প্রকল্প। সেতু কর্তৃপক্ষের আপত্তি ও যানবাহন চলাচলে নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে পদ্মা সেতুতে কয়লাভিত্তিক তাপ বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন টানা হচ্ছে না। এটি এখন টানা হবে পদ্মা সেতু থেকে প্রায় দেড় কিলোমিটার দূরে নদীর গভীর দিয়ে। সাভারের আমিনবাজার-মুন্সিগঞ্জ জেলার লৌহজং (মাওয়া) ও খুলনা জেলার বাগেরহাট মংলা জেলা দিয়ে। আমিনবাজার-মাওয়া-মংলা ৪০০ কেভি সঞ্চালন লাইন নির্মাণের মাধ্যমে ভবিষ্যতে মাওয়ায় বিদ্যুত কেন্দ্রের উৎপাদিত বিদ্যুৎ ইভাকুয়েট করার ব্যবস্থা করা যাবে। এ লক্ষ্যে প্রকল্পটি অনুমোদন দেয়া হয়েছে। প্রকল্পটির মোট ব্যয় ধরা হচ্ছে ১ হাজার ৩৫৬ কোটি ৫৯ লাখ টাকা। অনুমোদিত অন্য প্রকল্পগুলো হলো: ‘দিনাজপুর-চিরিরবন্দর-পার্বতীপুরসড়ক প্রশস্তকরণ (জেড-৫০২৫)’ প্রকল্প। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ব্যয় ধরা হয়েছে ৪৫ কোটি ২৭ লাখ টাকা। ‘ঢাকাস্থ শের-ই-বাংলা নগরে বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের প্রধান কার্যালয়ে ভবন নির্মাণ’। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৪ কোটি ৫০ লাখ টাকা। ‘ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় অধিকতর উন্নয়ন’ প্রকল্প। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে ২৭৭ কোটি ৫০ লাখ টাকা। ‘নদী তীর সংরক্ষণের মাধ্যমে মেঘনা নদীর ভাঙ্গণ হতে ভোলা জেলার তজুমুদ্দিন উপজেলা সদর সংরক্ষণ’ প্রকল্প। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে ৪৪৯ কোটি ৩৯ লাখ টাকা। ‘পানি ভবন নির্মাণ (১মপযায়)’ প্রকল্প। প্রকল্পটি ব্যয় ধরা হয়েছে ২১০ কোটি ৯৪ লাখ টাকা। ‘কিশোরগঞ্জ জেলার গুরুত্বপূর্ণ গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন’ প্রকল্প। এতে ব্যয় ধারা হয়েছে ৩৪৭ কোটি ২৪ লাখ টাকা। ‘বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল উন্নয়ন প্রকল্প-১ম পর্যায়’ প্রকল্প। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে ৯০৫ কোটি ৩২ লাখ টাকা।জেএইচ/আরআইপি
Advertisement