তথ্যপ্রযুক্তি

‘জি-ব্রেইন’ উদ্বোধন, এআই আইনের খসড়া সেপ্টেম্বরে

আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সভিত্তিক (এআই) সরকারি জিপিটি প্ল্যাটফর্ম ‘জি-ব্রেইন’ (গভর্নমেন্ট ব্রেইন) উদ্বোধন করা হয়েছে। চ্যাট জিপিটির আদলে তৈরি করা এ প্ল্যাটফর্মটি প্রথমে সংবিধান, বাজেট ও স্টার্টআপ ফিচার নিয়ে তৈরি হয়েছে। পরে ধীরে ধীরে আরও বিভিন্ন ফিচার এতে যুক্ত করা হবে।

Advertisement

বুধবার (৩ জুলাই) সকালে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে আইসিটি টাওয়ারে আয়োজিত অনুষ্ঠানে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নির্ভর এ টুলসটির উদ্বোধন ঘোষণা করেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।

জি-ব্রেইনের পর শিগগির একটি এডিপিজিপিটি তৈরির কাজও শুরু করছে সরকার এবং আগামী সেপ্টেম্বরে এআই আইনের খসড়া তৈরি করা হবে বলেও জানিয়েছেন প্রতিমন্ত্রী পলক।

দেশের সংবিধান, বাজেট ও স্টার্টআপ-এ তিনটি জিপিটি ফিচার নিয়ে জি-ব্রেইনবিডি.এআই প্ল্যাটফর্মটি যৌথভাবে তৈরি করেছে ওরিয়ন ইনফরমেটিকস ও বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি। ২৫ লাখ টাকার উদ্ভাবনী অনুদানের অর্থে জি-ব্রেইন তৈরি করা হয়েছে।

Advertisement

জি-ব্রেইনের বৈশিষ্ট্য ও আর্কিটেকচার উপাস্থাপন করেন বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটির বোর্ড অব ট্রাস্টি কাজী জামিল আজহার। তিনি জানান, এআই অনেকটাই মানুষের মস্তিষ্কের মতো কাজ করে। মানুষের ব্রেইন যেভাবে চিন্তা করে, এটাও একইভাবে চিন্তা করতে সক্ষম।

কাজী জামিল আজহার আরও বলেন, কি-ওয়ার্ড সার্চের ক্ষেত্রে ‘ভেক্টর বেইজড’ বড় ইস্যু। তাই এআই মানুষের মতো ডিটারমেনিক নয়। তার ফলাফল সবসময় একই থাকবে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে থাকা ডাটা সেন্টার থেকে তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে এআই সেবা পেতে তাদের ডাটার বিপরীতে অর্থ পাঠিয়ে ফলাফল পেতে হয়। এজন্য জাতীয়ভাবে নিজস্ব এআই থাকা দরকার। এতে বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় হবে।

ওরিয়ন ইনফরমেটিকস চেয়ারম্যান স্থপতি ইকবাল হাবিব বলেন, সারা বিশ্ব যখন এআই-কেন্দ্রিক প্রস্তুতি নিচ্ছে, বাংলাদেশও তখন থেমে থাকবে না এটা স্বাভাবিক। আমরাও এআই ব্যবহারে এগিয়ে থাকতে চাই। পরিবর্তনের সময় নিজেদের বদলাতে না পারলে ছিটকে পড়তে হবে। এক্ষেত্রে তিনটি জিপিটি তৈরির মাধ্যমে আমরা প্রমাণ করেছি চ্যাটজিপিটির দিকে চেয়ে আমরা বসে থাকবো না।

আরও পড়ুন:

Advertisement

এআই ব্যবহারে হারিয়ে যাবে যে ১০ চাকরি ঝুঁকি কমাতে এআই আইন করতে চায় সরকার: পলক সরকারি সেবায় এআই কাজে লাগাতে শিগগির জি-ব্রেইন চালু: পলক

প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, এআই খুব দ্রুত শক্তিশালী হয়ে উঠছে। সৃজনশীলতার মাধ্যমে এটি দৈত্যকার হয়ে উঠছে। ভালোভাবে এর ব্যবহার শিখতে হবে। পরিবর্তনের সঙ্গে দ্রুত নিজেদের খাপ খাইয়ে নিতে হবে, সক্ষমতাও অর্জন করতে হবে। এজন্য সরকারি-বেসরকারি যৌথ অংশীদারত্বে সরকার সর্বাত্মক গুরুত্ব দিচ্ছে।

শিক্ষার্থীদের শিখন ও মূল্যায়ন প্রক্রিয়ায় জিপিটি ব্যবহার শুরুর কথা জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, দেশের নিম্ন-মাধ্যমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষার্থীরাও যেন এআই শিখতে পারে, সেই উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। একজন শিক্ষার্থীর জন্য ৪০টি জিপিটি তৈরি করা হচ্ছে। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, রাজনীতি, সাংবাদিকতা সব ক্ষেত্রেই এআই শিখতে হবে।

এআইকে পারমাণবিক বোমার সঙ্গে তুলনা করে পলক বলেন, এআই নিজে কাজ করতে পারে বলে এতে মারাত্মক ঝুঁকিও রয়েছে। ডিপফেক, সোশ্যাল মিডিয়াগুলোতে আমাদের চাওয়া-পাওয়া, রাগ-ক্ষোভ সব জেনে যাচ্ছে। এই যেমন একজন কোটিপতি অসুস্থ হওয়ার পর তার কোম্পানির শেয়ারের দরপতন ঘটে।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন বাংলাদেশ কম্পিটার কাউন্সিলের (বিসিসি) নির্বাহী পরিচালক রনজিৎ কুমার, আইসিটি বিভাগের সচিব সামসুল আরেফিন, আইডিয়া প্রকল্প পরিচালক আনোয়ার হোসেন প্রমুখ।

এএএইচ/এসএনআর/এএসএম