এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে কক্সবাজারের সর্বত্র মাঝারি ও ভারী বর্ষণ চলছে। অতিবৃষ্টির ফলে পাহাড়চাপায় নিহত হয়েছেন রোহিঙ্গাসহ দুজন। আহত হয়েছেন আরও বেশ কয়েকজন।
Advertisement
বুধবার (৩ জুলাই) ভোরে উখিয়ার ক্যাম্প-৪ এক্সটেনশনে এ পাহাড়ধসের ঘটনা ঘটে। উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শামীম হোসেন বিষযটি নিশ্চিত করেছেন।
এ সময় ডজনাধিক ক্যাম্পে জলাবদ্ধতা ও পানিতে শতাধিক শেল্টার ক্ষতির মুখে পড়েছে। একইভাবে একাধিক স্পটে পাহাড়ধসের মাটির সড়কে আসায় কক্সবাজার মেরিন ড্রাইভে বেশ কয়েক ঘণ্টা যান চলাচলে বিঘ্ন ঘটে। পরে সেনাবাহিনী স্কেভেটর দিয়ে মাটি সরিয়ে বেলা ১১টার যান চলাচল স্বাভাবিক করে বলে জানিয়েছেন কক্সবাজার দক্ষিণ বন বিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তা সমীর রঞ্জন সাহা।
উখিয়া থানার ওসি শামীম জানান, ভারী বর্ষণে পাহাড়ধসে উখিয়ার ক্যাম্প-৪ এ দুজন নিহত হয়েছেন।
Advertisement
নিহতরা হলেন- উখিয়ার ক্যাম্প-১১ ব্লক ১ এফের দিল মোহাম্মদের ছেলে মো. আনোয়ার হোসেন (২১) ও টেকনাফের লেদার মো. আলমের ছেলে মো. সিফাত (১৩)।
রোহিঙ্গাদের বরাত দিয়ে ওসি আরও জানান, টানা ভারী বৃষ্টির কারণে বুধবার ভোরে রোহিঙ্গা ক্যাম্প-১১ এফ ১ ব্লক এবং ক্যাম্প-৮ ইস্ট, ব্লক-৪১ বালুখালীতে পাহাড়ের উপরে থাকা শেল্টার ধসে পড়লে মো. আনোয়ার হোসেন মাটিচাপা পড়ে মারা যান। অপরদিকে মো. সিফাত (১৩) তার মামার শেডে বেড়াতে এসে মাটিচাপা পড়ে নিহত হয়। তার বাড়ি টেকনাফের লেদায় বলে জানা গেছে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে উদ্ধার তৎপরতা চালিয়ে মরদেহ দুটি উদ্ধার করে।
অপরদিকে উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্প- ১ ইস্ট, ওয়েস্ট-৩, ৪, ৬, ৭, ১১, ১২ এবং ২০ এক্স এ বিভিন্ন ব্লকে ভারি বৃষ্টির পানিতে শতাধিক শেল্টার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সৃষ্টি হয়েছে জলাবদ্ধতার।
আবহাওয়া অধিদফতর কক্সবাজার স্টেশনের সহকারী আবহাওয়াবিদ আবদুল হান্নান জানান, লঘুচাপের প্রভাবে গত দেড় সপ্তাহ ধরে কক্সবাজার জেলায় বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে। মঙ্গলবার সকাল ৬টা থেকে বুধবার সকাল ৬টা পর্যন্ত কক্সবাজারে বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়েছে ৭৪ মিলিমিটার। দিনের বেলা বৃষ্টির তীব্রতা কম হলেও মঙ্গলবার মাঝরাত থেকে অতিশয় ভারী বর্ষণ হয়েছে। আবহাওয়ার পূর্বাভাস মতে আরও কয়েকদিন অব্যাহত থাকতে পারে বৃষ্টিপাত। সঙ্গে পাহাড়ধসেরও সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানান তিনি।
Advertisement
কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মুহম্মদ শাহীন ইমরান বলেন, টানা বর্ষণে পাহাড়ধসে মৃত্যু এড়াতে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় থাকাদের সরে যেতে মাইকিং করা হয়েছে। ভারী বর্ষণে প্লাবনের আশঙ্কাও রয়েছে। জেলার নদীগুলোতে ঢল নামলে এর ক্ষয়ক্ষতি থেকে নিরাপদ থাকার আগাম প্রস্তুতি নিতে ইউএনওদের নির্দেশনা দেওয়া রয়েছে।
সায়ীদ আলমগীর/এফএ/জেআইএম