দেশজুড়ে

পুলিশ সুপারের কার্যালয়সহ বিভিন্ন অফিসে পানি, দাপ্তরিক কাজ বন্ধ

নোয়াখালীতে ছয় ঘণ্টার টানা বর্ষণে গুরুত্বপূর্ণ সরকারি অফিসসহ রাস্তা-ঘাটে পানি উঠেছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন বিভিন্ন অফিসে আসা সেবাগ্রহীতারা। মঙ্গলবার (২ জুলাই) সকাল পর্যন্ত টানা এ বৃষ্টি হয়। এসময় ৮২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়।

Advertisement

সরেজমিনে দেখা গেছে, পানিতে পুলিশ সুপার কার্যালয়, গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) কার্যালয় ভরে গেছে। ডুবে গেছে জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার ও সিভিল সার্জনের বাসভবনের একমাত্র সড়ক। এছাড়া পানি প্রবেশ করেছে আবহাওয়া অফিস, জেলা মৎস্য অফিসসহ গুরুত্বপূর্ণ সরকারি-বেসরকারি বেশ কয়েকটি অফিসে।

পুলিশ সুপার কার্যালয়ে আসা সামছুন্নাহার নামের একজন সেবাপ্রার্থী বলেন, এ এক আজব শহর। এমন বাজে পরিস্থিতিতে আগে কখনো পড়িনি। পুলিশ সুপার কার্যালয়ের নিচতলা সম্পূর্ণ পানিতে ডুবে গেছে। অল্প বৃষ্টিতে এমন অবস্থা। এতে বুঝা যায় এ শহর বসবাসের অযোগ্য।

মাইজদি হাউজিংয়ের বাসিন্দা আবু বক্কর ছিদ্দিক বলেন, সড়কের থেকে ড্রেনের উচ্চতা বেশি। তাই পানি উল্টো রাস্তায় আসে। বেশিরভাগ ড্রেন-নালা বন্ধ রয়েছে।

Advertisement

জেলা মৎস্য অফিসের সামনে মো. রায়হান বলেন, অফিসের মধ্যে মাছ চাষ করা যাবে। পুরোনো জেলা শহরে যদি এ অবস্থা হয় তাহলে আমাদের বলার কিছু থাকে না। যারা ভোগান্তিতে পড়েছে তারাই বুঝবে কতো কষ্ট।

জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের কর্মচারী মো. তারেক বলেন, ডিসি স্যারের বাংলোর সামনের সড়কে পানি উঠে গেছে। আমি একরুমে থাকি সেখানেও পানি। আরেকটু বৃষ্টি হলে বাংলোতেও পানি ঢুকবে। এক ভয়াবহ অবস্থার ভেতরে আছি।

আরও পড়ুন

টানা বর্ষণে বরিশালের বিভিন্ন সড়কে জলাবদ্ধতা টানা বৃষ্টিতে সিলেটে জলাবদ্ধতা, বাসাবাড়িতে ঢুকে পড়েছে পানি টানা বর্ষণে বান্দরবানে পাহাড়ধসের শঙ্কা

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) মো. ইব্রাহিম বলেন, পুলিশ সুপার কার্যালয়ের নিচ তলায় আমার অফিসে পানি। বসা তো দূরে থাক ঢোকাই যায় না। দাপ্তরিক কাজ বন্ধ রেখে গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র সরাতে ব্যস্ত অফিস স্টাফরা। আমি নিজেই জলাবদ্ধতায় আটকে রয়েছি।

Advertisement

এ বিষয়ে আবহাওয়া কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, সোমবার সকাল ৬টা থেকে মঙ্গলবার সকাল ৬টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় ১০৯ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। দিনেও বৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে। ভারী বর্ষণের ফলে আমার অফিস ও সড়ক ডুবে গেছে। আমিও জলাবদ্ধতায় আটকে আছি।

পানি উন্নয়ন বোর্ড নোয়াখালীর নির্বাহী প্রকৌশলী মুন্সি আমির ফয়সাল বলেন, জলাবদ্ধতা রোধে শহর ও আশপাশের ১৬১ কিলোমিটার খাল খনন করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। সঙ্গে সঙ্গে নোয়াখালী খালও খনন করা হয়েছে। যেটা নোয়াখালীর দুঃখ ছিল। তবে পুরোপুরি জলাবদ্ধতা থেকে মুক্তি পেতে ড্রেন ও নালা রক্ষণাবেক্ষণ প্রয়োজন।

নোয়াখালীর পৌরসভার মেয়র সহিদ উল্যাহ খান সোহেল বলেন, সরকারি অফিসসহ বিভিন্নস্থানে জলাবদ্ধতার ফলে ভোগান্তির বিষয়ে আমি খবর পেয়েছি। আসলে ড্রেনগুলো পরিষ্কার না থাকায় এমন হয়েছে। পৌরসভার কর্মীরা কাজ করছে।

ইকবাল হোসেন মজনু/আরএইচ/এমএস