জাগো জবস

বিসিএস লিখিত প্রস্তুতি: বাংলাদেশ বিষয়াবলি

বিসিএস লিখিত পরীক্ষায় বাংলাদেশ বিষয়াবলিতে ২০০ নাম্বারের জন্য অনেক বড় সিলেবাস। তবে প্রয়োজনীয় টেকনিক গ্রহণের ফলে এ বিষয়ের প্রস্তুতি অনেকটাই সহজ হয়ে যায়। বাংলাদেশ বিষয়াবলির প্রস্তুতি ও গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ দিয়েছেন ৪৩তম বিসিএসে কৃষি ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত মো. ইমাম হোসেন জ্যোতি—

Advertisement

সিলেবাসের দিকে লক্ষ্য করুন

১. লিখিত সিলেবাসে মোট ১৪টি অধ্যায় রয়েছে। যার মধ্যে ৩, ৯ ও ১৪ নং অধ্যায় আন্তর্জাতিক বিষয়ের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। অর্থাৎ আন্তর্জাতিক বিষয়ের প্রস্তুতির সময় আপনি এই অধ্যায়গুলো পড়ার পরিকল্পনা করলে বাংলাদেশ বিষয়াবলি প্রস্তুতির অংশ কমে আসবে।

২. ৫, ১২ ও ১৫ নং অধ্যায়ের জন্য ৩টি রচনা প্রস্তুত করুন। এতে বিগত লিখিত পরীক্ষার সব প্রশ্নের ও বর্তমান তথ্যের সমন্বয় করবেন।> জলবায়ু পরিবর্তন (অধ্যায় ৫)> ডিজিটাল বাংলাদেশ (অধ্যায় ১২) ও> নারীর ক্ষমতায়ন (অধ্যায় ১৫)এ অধ্যায়ের সমন্বিত তথ্য আপনি আগেই হয়তো বাংলা ও ইংরেজি বিষয়ের রচনা অংশের জন্য প্রস্তুতি নিয়ে থাকবেন। তাই খুব দ্রুতই এ অংশ আপনার প্রস্তুত হয়ে যাবে।

৩. সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়গুলো হচ্ছে ৪, ৬, ৭, ৮ ও ১৬ নং অধ্যায়।

Advertisement

> বাংলাদেশের অর্থনীতি (৪র্থ অধ্যায়) ডাটা নির্ভর অধ্যায়। ভাইভা এবং লিখিত অংশের সর্বোচ্চ প্রস্তুতির ক্ষেত্রই হচ্ছে এই অধ্যায়। এই অধ্যায়ের রেফারেন্স দিয়ে লিখিত ২০০ নাম্বারকে পরীক্ষার খাতায় সাজাতে পারবেন। এর জন্য প্রত্যেকটি সাব-টপিকের জন্য সবশেষ তথ্য, সূত্র, ডাটা, কোটেশন নোট করুন এবং যেহেতু অধ্যায়টি অনেক বড়, তাই সাব-টপিকসের ছোট নোট সংগ্রহ করুন এবং সেগুলো রিভিশন দিন।

> প্রাকৃতিক সম্পদ (৬ নং অধ্যায়) চ্যাপ্টারে কৃষি, শিল্প ও সেবা খাতের বিস্তারিত পড়ুন। আপাতদৃষ্টিতে এই চ্যাপ্টার ছোট মনে হলেও প্রচুর সূত্রসহ তথ্য আপনি চার্ট, বক্স আকারে উল্লেখ করার মতো সুযোগ পাবেন এ অধ্যায়ের বিষয়গুলো থেকে। প্রধান খাতের উপখাতভিত্তিক সম্ভাবনা, সাফল্য, সরকারের পদক্ষেপ ও চ্যালেঞ্জসমূহ নোট করে নিন পত্রিকা ও বাজেট আলোচনা থেকে।

> বাংলাদেশ বিষয়াবলির পরীক্ষার খাতায় প্রশ্নের উত্তরের প্রাণ হচ্ছে সংবিধানের রেফারেন্স। লিখিত পরীক্ষার্থীর জন্য সংবিধান প্রথম থেকে শেষ জেনে ও বুঝে পড়া খুবই জরুরি। এরমধ্যে সংবিধান ৭ নং অধ্যায়ের জন্য বিগত প্রশ্ন এবং ১-৪৭ নং অনুচ্ছেদ বেশি গুরুত্বপূর্ণ। এই অংশের সবটুকু আপনি বাংলাদেশ বিষয়াবলির বাকি প্রশ্ন, বাংলা ও ইংরেজি বিষয়ের রচনা, আন্তর্জাতিকে বাংলাদেশ সম্পর্কিত বিষয়ে ব্যবহার করতে পারবেন খুবই স্ট্রং সোর্স, রেফারেন্স হিসেবে।

আরও পড়ুন

Advertisement

বিসিএসের পুরো জার্নিটা উপভোগ করছি: ইমাম হোসেন জ্যোতি

> সংবিধানের সঙ্গে সামঞ্জস্য করে সরকারের অঙ্গসমূহ (৮ নং অধ্যায়) থেকে বিগত প্রশ্ন ভালোভাবে পড়ুন। এ অধ্যায় থেকে সরকার কাঠামো, নির্বাচন সংক্রান্ত যাবতীয় বিগত প্রশ্ন গুরুত্বপূর্ণ।

> মুক্তিযুদ্ধ (১৬ নং অধ্যায়) থেকে অবশ্যই প্রশ্ন থাকবে। বিগত প্রশ্নের আলোকে দেখা যায়, রচনা আকারে কমপক্ষে প্রায় ২০ নাম্বারের প্রশ্ন ছিল। ১৯৫৭-১৯৭১ সাল পর্যন্ত প্রতিটি ঘটনা গুরুত্বপূর্ণ যা সংক্ষিপ্ত, টীকা ও রচনামূলক প্রশ্ন আকারে আসার সম্ভাবনা প্রবল। তাই ধারাবাহিকভাবে প্রতিটি ঘটনা জেনে নিতে হবে। এ অধ্যায়ের প্রিলিমিনারির জন্য পড়া বিষয়গুলো রিভিশন দেওয়া সবচেয়ে বেশি কার্যকর প্রস্তুতির অংশ। বঙ্গবন্ধুর অবদান, মুক্তিযুদ্ধের কোটেশন, স্থান, সূত্র অবশ্যই সঠিকভাবে লিখতে হবে। মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে দেওয়া বিখ্যাত ও গুরুত্বপূর্ণ কোটেশন নোট করে নিন। এ অধ্যায়ের উত্তর সময়ের মধ্যে নাম্বার অনুযায়ী লিখুন।

৪. বাকি ১, ২, ৩, ১০, ১১, ১৩; এই ০৬টি অধ্যায়। এ অধ্যায়গুলোতে পড়া কম তাই নোট করে পড়ুন।

> অধ্যায়-১, এখানে বাংলাদেশের মানচিত্র, ভূপ্রকৃতি, ভৌগোলিক অবস্থান উল্লেখযোগ্য টপিকস। চিত্র, রেখা, পয়েন্ট আকারে উপস্থাপন গুরুত্বপূর্ণ। তাই তথ্যগুলোর সমন্বয়ে নোট করে নিতে হবে পরীক্ষার পূর্বে।

> অধ্যায় ২ ও ৩ নং; এ অধ্যায়গুলোতে জনমিতি লভ্যাংশ, পরিসংখ্যান, উপজাতি বিষয়গুলো গুরুত্বপূর্ণ। সরকারের বর্তমান পরিকল্পনাগুলো বর্তমান বাজেট অংশ থেকে পড়ে নিলে এ অংশের প্রস্তুতি সম্পন্ন হবে। এ ছাড়া বাকি অধ্যায়গুলো থেকে কী পয়েন্ট, বিগত প্রশ্ন সমাধান করলেই যথেষ্ট।

লিখিত পরীক্ষায় ভালো করতে

১. বাংলাদেশ বিষয়াবলি পরীক্ষায় প্রেজেন্টেশন সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। হাতের লেখা যেমনই হোক, সেটা যেন পড়ার মতো থাকে।

আরও পড়ুন

বাবা বেঁচে থাকলে ভীষণ খুশি হতেন: জাবীর হুসনাইন

২. গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্যারা বা পয়েন্ট করে লিখুন।

৩. যৌক্তিক ডাটা, তথ্য, কোটেশন, চার্ট, গ্রাফ ব্যবহার করুন পেন্সিল ও নীল কালি দিয়ে।

৪. জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উক্তি, বক্তৃতার অংশ রেফারেন্স হিসেবে ব্যবহার করুন। ইংরেজি এবং বাংলা উভয় নোট নিন।

৫. অবশ্যই দৈনিক পত্রিকা পড়ুন এবং পত্রিকার লেখাকে আপনার স্ট্যান্ডার্ড হিসেবে মাপুন।

৬. সময়ের দিকে খেয়াল করুন। প্রত্যেকটি প্রশ্ন লিখে আসার চেষ্টা করুন।

এসইউ/এমএস