অর্থনীতি

১০ হাজার টাকার আবেদনে মিললো ১১টি শেয়ার

দেশের শেয়ারবাজারের ইতিহাসে টেকনো ড্রাগস লিমিটেডের প্রাথমিক গণপ্রস্তাবে (আইপিও) রেকর্ড পরিমাণ আবেদন জমা পড়েছে। আইপিওতে ১০ হাজার টাকার আবেদনের বিপরীতে স্থানীয় সাধারণ বিনিয়োগকারীরা মাত্র ১১টি এবং প্রবাসীরা ২০টি করে শেয়ার পেয়েছেন।

Advertisement

মঙ্গলবার (২ জুলাই) এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এই শেয়ার বরাদ্দের ঘোষণা দেওয়া হয়। প্রো-রাটার ভিত্তিতে বিনিয়োগকারীদের শেয়ার বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এটি স্টক এক্সচেঞ্জ ইলেকট্রনিক সাবস্ক্রিপশন সিস্টেমের (ইএসএস) আইপিও শেয়ার বরাদ্দ দেওয়া ১০০তম প্রতিষ্ঠান।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, টেকনো ড্রাগস আইপিওতে শেয়ার ছেড়ে ১০০ কোটি টাকা উত্তোলন করবে। এই ১০০ কোটি টাকার বিপরীতে বিনিয়োগকারীরা ২ হাজার ৪৮৭ কোটি ১৮ হাজার ১০৪ টাকার আবেদন জমা দিয়েছে, যা ২৪ দশমিক ৬৪ গুণ বেশি। প্রতি ১০ হাজার টাকা আবেদনের বিপরীতে নিবাসী বাংলাদেশি বিনিয়োগকারীরা ১১টি শেয়ার এবং অনিবাসী বাংলাদেশি বিনিয়োগকারীরা ২০টি শেয়ার বরাদ্দ পেয়েছেন।

অনুষ্ঠানে ডিএসই’র লিস্টিং ডিপার্টমেন্টের সহকারী মহাব্যবস্থাপক মো. রবিউল ইসলাম ইএসএস সম্পর্কে বলেন, সফটওয়্যারটি ২০০৯ সালে পাবলিক ইস্যু রুল অনুযায়ী প্রবর্তন করা হয়। ২০১০ সালের ১ মার্চ দুবাইভিত্তিক ‘ইনফোটেক মিডল ইস্ট’ দ্বারা তৈরি করা হয়। সফটওয়্যারটি তৈরিতে ব্যয় ছিল ৭০ হাজার ৮৭৫ ডলার এবং বার্ষিক রক্ষণাবেক্ষণ চুক্তি ছিল ৪৫ হাজার ৩৬০ ডলার (প্রথম ৩ বছর) এবং পরবর্তী বছরগুলোর জন্য ১৭ হাজার ৭১৮ ডলার।

Advertisement

আরও পড়ুন

টেকনো ড্রাগসের আইপিওতে রেকর্ড আবেদন

‘বিশাল খরচ কমাতে এবং পাবলিক ইস্যু বিধিগুলোর ঘন ঘন সংশোধনের জন্য ডিএসই ২০১৪ সালে ডিএসই’র অভ্যন্তরীণ কর্মকর্তাদের দ্বারা সাম্প্রতিক প্রযুক্তি এবং আরও উন্নত বৈশিষ্ট্যসহ নতুন বুক বিল্ডিং সিস্টেম তৈরি করেছে, যা বর্তমানে ইলেকট্রনিক সাবস্ক্রিপশন সিস্টেম নামে পরিচিত। সিস্টেমটি ডিএসই ও সিএসই উভয় এক্সচেঞ্জের মালিকানাধীন।’ বলেন রবিউল ইসলাম।

ডিএসই’র চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. হাফিজ মুহম্মদ হাসান বাবু বলেন, প্রধানমন্ত্রী যে স্মার্ট বাংলাদেশের চিন্তা করছেন তার একটি ছোট নমুনা হলো ইএসএস সফটওয়্যারের ১০০তম ইস্যু পরিচালনা। ডিএসই স্মার্ট বাংলাদেশের অটোমেশনের হাব হতে পারে। বিশ্বব্যাপী ক্যাপিটাল মার্কেট ডিজিটালাইজেশন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে চলছে। এখন পুঁজিবাজারের অধিকাংশ কাজ টেকনোলজির মাধ্যমে চলছে। আজ ইএসএস সিস্টমে যে সফটওয়্যারটি ব্যবহার করছি তা দেশীয় একটি সফটওয়্যার।

তিনি বলেন, স্মার্ট বাংলাদেশ সেদিন বাস্তবায়িত হবে যেদিন আমরা নিজস্ব টেকনোলজি ব্যবহার করে আমাদের কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারবো। এই ইএসএস সফটওয়্যারের মাধ্যমে শুধু অর্থ সাশ্রয় করিনি। এতে আইপিও প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা বৃদ্ধি ও সময় কমিয়ে আনা হয়েছে। একই সঙ্গে এর মাধ্যমে আমরা সুশাসন নিশ্চিত করতে পারছি। আশা করছি ভবিষ্যতে এই সফটওয়্যার আরও বড় পরিসরে আসবে। বর্তমানে রাইট শেয়ার ইস্যুর বিষয়টি এই সফটওয়্যারে যুক্ত করার জন্য বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের কাছে আবেদন করা হয়েছে। বিএসইসি’র অনুমোদনের পর এই সফটওয়্যার পূর্ণতা পাবে বলে আমি মনে করি।

Advertisement

আরও পড়ুন

দীর্ঘদিন পর ডিএসইতে ৬০০ কোটি টাকার বেশি লেনদেন

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) সাত্তিক আহমেদ শাহ বলেন, শুরুতে ইএসএস বিদেশি সংস্থার সহযোগিতায় যাত্রা শুরু হলেও ২০১৬ সাল থেকে স্টক এক্সেচেঞ্জের নিজস্ব মেধা ও দক্ষতায় ইএসএস সফটওয়্যার তৈরি হয়েছে। রেগুলেটরি কমপ্লায়েন্স এবং স্বল্প সময়ে শেয়ার বণ্টন নিশ্চিতকরণে ইএসএস পুঁজিবাজারের আস্থার প্রতীক হয়ে উঠেছে। নিয়ন্ত্রক সংস্থার নির্দেশনামূলক বিভিন্ন রেগুলেটরি আপগ্রেডেশন, এমেন্ডমেন্ট স্বল্প সময়ে ইএসএস-এ সংযোজনের সক্ষমতা সত্যি প্রশংসনীয়। ইএসএস ভবিষ্যতে বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষায় এবং টেকসই পুঁজিবাজার গঠনে গতিশীল অবদান রাখবে।

টেকনো ড্রাগস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহ জালাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, ডিএসই ও ইস্যু ম্যানেজারদের অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলে আমাদের ডিএসইতে তালিকাভুক্তির কার্যক্রম চালু হয়েছে। আমি চাই নতুন নতুন মেডিসিন প্রোডাক্টগুলো বাংলাদেশে তৈরি হোক। এই কোম্পানির আইপিওতে ২৪ দশমিক ৬৪ গুণ বেশি সাবস্ক্রিপশন হয়েছে। যা আমাদের জন্য অত্যন্ত গর্বের। আমি আশা করি, আমরা বিনিয়োগকারীদের ভালো লভ্যাংশ দিতে পারবো।

অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের প্রধান রেগুলেটরি কর্মকর্তা খাইরুল বাসার আবু তাহের মোহাম্মদ, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের উপ-মহাব্যবস্থাপক হাসনাইন বারী, সিডিবিএল’র মহা-ব্যবস্থাপক রাকিবুল ইসলাম চৌধুরী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

এমএএস/ইএ/এমএস