ধর্ম

অজু অবস্থায় ব্যান্ডেজ পরিবর্তন করলে কি অজু ভেঙে যাবে?

ক্ষতস্থানে বাঁধা ব্যান্ডেজ অজুর জন্য খোলা যদি সহজ না হয় বা ব্যান্ডেজ খুলে ধৌত করলে ক্ষত শুকাতে দেরি হওয়ার আশংকা থাকে, তাহলে অজু বা ফরজ গোসলের সময় ব্যান্ডেজ বাঁধা জায়গা ধোয়ার পরিবর্তে ব্যান্ডেজের ওপর মাসাহ করা জায়েজ। আলী (রা.) বলেন,

Advertisement

انْكَسَرَتْ إِحْدَى زَنْدَيَّ فَسَأَلَتُ رَسُولَ اللَّهِ - صلى الله عليه وسلم - فَأَمَرَنِي أَنْ أَمْسَحَ عَلَى الْجَبَائِرِ

আমার একটি কবজি ভেঙ্গে যাওয়াতে আমি আল্লাহর রাসুলকে (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) করণীয় সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলাম। তিনি আমাকে ব্যান্ডেজের ওপর মাসাহ করার নির্দেশ দিলেন। (সুনানে ইবনে মাজা: ৬৫৭)

ব্যান্ডেজের ওপর মাসাহ করার জন্য পবিত্র অবস্থায় ব্যান্ডেজ বাঁধা জরুরি নয়। তাই ব্যান্ডেজ বাঁধার সময় যদি কারো অজু না থাকে বা গোসল ফরজ থাকে, তাহলেও পরবর্তীতে অজু-গোসলের সময় ব্যান্ডেজের ওপর মাসাহ করা যায়।

Advertisement

ব্যান্ডেজের ওপর মাসাহ করার পর ব্যান্ডেজ পরিবর্তন করলে অর্থাৎ যে ব্যান্ডেজের ওপর মাসাহ করা হয়েছে তা খুলে নতুন ব্যান্ডেজ লাগালে অজু বা মাসাহ ভঙ্গ হয় না। নতুন ব্যান্ডেজের ওপর মাসাহ করে নেওয়া উত্তম, জরুরি নয়। তবে যদি ক্ষতস্থান শুকিয়ে যাওয়ার কারণে ব্যান্ডেজ খোলা হয়, ওই জায়গা ধৌত করা যদি ক্ষতিকর না থাকে, তাহলে ব্যান্ডেজ খোলার পর আগের মাসাহ বাতিল হয়ে যাবে। অজু বহাল রাখতে হলে মাসেহকৃত জায়গা ধুয়ে নিতে হবে।

ইমাম যদি আহত হওয়ার কারণে ব্যান্ডেজ বাঁধে এবং অজু করার সময় ব্যান্ডেজের ওপর মাসেহ করে, তাহলে তার ইমামতিতে পূর্ণ অজুকারীদের নামাজ শুদ্ধ হবে।

নবিজির (সা.) যুগের একটি ঘটনা

জাবের (রা.) বলেন, কোন এক সফরে যাওয়ার সময় আমাদের এক ব্যক্তির মাথা পাথরের ঘাতে জখম হয়। এ অবস্থায় তার স্বপ্নদোষ হলে সে তার সঙ্গীদের জিজ্ঞাসা করে, এ অবস্থায় আমি কি তায়াম্মুম করতে পারি? তারা বলে, যেহেতু তুমি পানি ব্যবহারে সক্ষম তাই আমাদের দৃষ্টিতে তোমার তায়াম্মুম করার সুযোগ নেই। ওই ব্যক্তি তাদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গোসল করে এবং তার মৃত্যু হয়।

সফর থেকে ফিরে তারা নবিজিকে (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এ ঘটনা শোনায়। নবিজি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন,

Advertisement

‏قَتَلُوهُ قَتَلَهُمُ اللَّهُ أَلاَّ سَأَلُوا إِذْ لَمْ يَعْلَمُوا فَإِنَّمَا شِفَاءُ الْعِيِّ السُّؤَالُ إِنَّمَا كَانَ يَكْفِيهِ أَنْ يَتَيَمَّمَ وَيَعْصِرَ عَلَى جُرْحِهِ خِرْقَةً ثُمَّ يَمْسَحَ عَلَيْهَا وَيَغْسِلَ سَائِرَ جَسَدِهِ

তার সঙ্গীরা তাকে হত্যা করেছে, আল্লাহ তাদের ধবংস করুন! (তিনি রাগান্বিতভাবে এ রকম উক্তি করেন)। যখন তারা জানতো না- তখন জিজ্ঞাসা করল না কেন? অজ্ঞতার ওষুধ হল জানতে চাওয়া। তার জন্য তায়াম্মুম করা এবং আহত স্থানে ব্যান্ডেজ বেঁধে তার উপর মাসাহ করাই যথেষ্ট ছিল। অতঃপর নিজের সমস্ত শরীর ধুয়ে নিতে পারত। (সুনানে আবু দাউদ: ৩৩৬)

ওএফএফ/এএসএম