‘জাহাজভাঙার সঙ্গে জড়িত শ্রমিকরা বেশির ভাগ সময় চিকিৎসা সুবিধা ও অন্যান্য আইনি ক্ষতিপূরণ থেকে বঞ্চিত হন। ভারী পদার্থ নিয়ে কাজ হয় বিধায় এটি ঝুঁকিপূর্ণ। এই শিল্পকে দীর্ঘস্থায়ী করতে হলে শ্রমিকের স্বাস্থ্য ও ইয়ার্ডের অবকাঠামোগত নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।’
Advertisement
রোববার (৩০ জুন) সকালে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের ইপসা এইচআরডি সেন্টারে এক অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কে এম রফিকুল ইসলাম। বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজ (বিলস) অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
এসময় বক্তারা বলেন, জাহাজভাঙা মালিক সমিতির পক্ষ থেকে ভাটিয়ারীতে একটি হাসপাতাল তৈরি করা হলেও এটি এখন বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ভাড়া দেওয়ায় চিকিৎসা সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন শ্রমিকরা।
এসময় বক্তারা হাসপাতালটি আরও আধুনিক এবং মানসম্মত করে তা জাহাজভাঙা শ্রমিকদের জন্য বিশেষায়িত হাসপাতাল হিসেবে প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেওয়ার দাবি জানান। এছাড়া আহত শ্রমিকদের দ্রুত চিকিৎসা নিশ্চিতে জাহাজভাঙা শিল্প এলাকায় পর্যাপ্ত সংখ্যক অ্যাম্বুলেন্স রাখার দাবি জানানো হয়।
Advertisement
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কে এম রফিকুল ইসলাম বলেন, শিল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট মালিক-শ্রমিক এক হয়ে সততা ও আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করলে যে কোনো কঠিন সমস্যা সমাধান করা সহজ।
অনুষ্ঠানে জাহাজভাঙা শ্রমিকদের পেশাগত স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা এবং গ্রিভ্যান্স সাপোর্ট বিষয়ে প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৫ সাল থেকে ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত ১২৪ জন শ্রমিক নিহত হয়েছেন। তবে ২০২৩ সাল পর্যন্ত প্রতি বছর গড়ে ১৩ দশমিক ৫৫ জন শ্রমিক নিহত হলেও চলতি বছর জুন পর্যন্ত মাত্র একজন শ্রমিক নিহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এতে এ বছরের প্রথম ছয় মাসে জাহাজভাঙা শিল্পটির সেক্টরে কর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনা ও শ্রমিকের মৃত্যুর হার দুটোই কমেছে বলে প্রতীয়মান হয়।
জাহাজভাঙা শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন ফোরামের আহ্বায়ক তপন দত্তের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অতিথি ছিলেন সমাজ সেবা অধিদপ্তরের কর্মকর্তা লুৎফুন্নেছা, সীতাকুণ্ড ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের সিনিয়র স্টেশন কর্মকর্তা নুরুল আলম দুলাল, কুমিরা ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের সিনিয়র স্টেশন কর্মকর্তা আল মামুন, জাহাজভাঙা শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন ফোরামের যুগ্ম আহ্বায়ক ও জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দল চট্টগ্রাম বিভাগীয় সভাপতি এ এম নাজিম উদ্দিন, জাতীয় শ্রমিক লীগ সীতাকুণ্ড-বাড়বকুণ্ড আঞ্চলিক কমিটির সভাপতি মাহাবুবুল আলম ও জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের সাংগঠনিক সম্পাদক শ ম জামাল প্রমুখ।
Advertisement
এম মাঈন উদ্দিন/জেডএইচ/এমএস