ঈদের পর শেয়ারবাজারে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা দেখা দিলেও ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট পাসের দিন দরপতন হয়েছে। প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং অন্য শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) সবকটি মূল্যসূচক কমেছে। সেই সঙ্গে দাম কমার তালিকায় নাম লিখিয়েছে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। তবে দুই বাজারেই লেনদেনের পরিমাণ বেড়েছে।
Advertisement
এর আগে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাব উপস্থাপনের আগেই গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ে শেয়ারবাজারে ক্যাপিটাল গেইন ট্যাক্স আরোপ করা হচ্ছে। এর প্রেক্ষিতে এক মাসের বেশি সময় ধরে শেয়ারবাজারে দরপতন হয়।
তবে ঈদের আগে গুঞ্জন ছড়ায় চূড়ান্ত বাজেটে ক্যাপিটাল গেইন ট্যাক্স থাকবে না। এতে ঈদের আগে দুদিন এবং ঈদের পর শেয়ারবাজারে উর্ধ্বমুখী প্রবণতা দেখা যায়। কিন্তু প্রস্তাবিত বাজেটে শেয়ারবাজারে ক্যাপিটাল গেইন ট্যাক্স আরোপের যে ঘোষণা অর্থমন্ত্রী দিয়েছিলেন সেখান থেকে সরে আসেননি। শেয়ারবাজারে ক্যাপিটাল গেইন ট্যাক্স রেখেই ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাব পাস হয়েছে।
আরও পড়ুন
Advertisement
সুখী, সমৃদ্ধ, উন্নত ও স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গীকার করে গত ৬ জুন ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য জাতির সামনে ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকার বাজেট প্রস্তাব দেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। বিভিন্ন পক্ষের আলোচনা শেষে রোববার (৩০ জুন) নতুন অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট পাস হয়।
এই বাজেট পাসের দিন শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হয় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমার মাধ্যমে। ফলে লেনদেনের শুরুতে সূচক ঋণাত্মক হয়ে পড়ে। বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমার ধারণা অব্যাহত থাকায় এক পর্যায়ে ডিএসইর প্রধান সূচক ৬০ পয়েন্ট কমে যায়। তবে লেনদেনে লেনদেনের শেষদিকে সূচকের পতন মাত্রা কিছুটা কমে।
দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে ৯২টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। বিপরীতে দাম কমেছে ২৬৮টি প্রতিষ্ঠানের। আর ৩৮টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
এতে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স ২৭ পয়েন্ট কমে ৫ হাজার ৩২৮ পয়েন্টে নেমে গেছে। অন্য দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৩ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ১৮০ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আর বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ১২ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৯০৯ পয়েন্টে অবস্থান করছে।
Advertisement
সবকটি মূল্যসূচক কমলেও লেনদেনের গতি বেড়েছে। দিনভর বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৭১২ কোটি ৬৮ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৭০৫ কোটি ৮৩ লাখ টাকা। সে হিসেবে লেনদেন বেড়েছে ৬ কোটি ৮৫ লাখ টাকা। এর মাধ্যমে গত ১৩ মে’র পর ডিএসইতে সর্বোচ্চ লেনদেন হলো।
এই লেনদেন বাড়াতে সব থেকে বড় ভূমিকা রেখেছে লিন্ডে বাংলাদেশের শেয়ার। কোম্পানিটির ১৫ কোটি ৭৮ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছ। দ্বিতীয় স্থানে থাকা সাইফ পাওয়ার টেকের ১৪ কোটি ৮ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ১০ কোটি ৪ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে সিটি জেনারেল ইন্স্যুরেন্স।
এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে-বিচ হ্যাচারি, আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজ, বেক্সিমকো ফার্মা, ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো, ক্যাপটিভ গ্রামীণ ব্যাংক গ্রোথ ফান্ড, ওয়ালটন এবং স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস।
অন্য শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই কমেছে ২১ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ২৩৩টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৬৩টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৩৬টির এবং ৩৪টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ৬২৪ কোটি ৩০ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ১১৫ কোটি ৯২ লাখ টাকা।
এমএএস/এমআইএইচএস/এএসএম