বিকেলেই যখন সংবাদটি প্রথমে বিভিন্ন টিভি চ্যানেলে স্ক্রল হিসেবে দেয়া শুরু করেছিল, তখনেই কেন যেন সন্দেহ জেগেছিল অনেকের মনে। ফেসবুকেই বাংলাদেশের ক্রিকেটপ্রেমীদের দেখা গেছে, খবরটা বিশ্বাস করতে কষ্ট হচ্ছে তাদের। হঠাৎ কোনো যুক্তিতে এক লাফে, ওয়ানডে র্যাংকিংয়ে সাত থেকে পাঁচে উঠে আসবে বাংলাদেশ? তবুও আইসিসি সভা থেকে ফিরে বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন নিজ মুখে বলেছেন বলেই সংবাদ প্রকাশ করেছে সবকটি মেইনস্ট্রিম গণমাধ্যমের অনলাইন সংস্করণ। সংবাদ-ভিত্তিক অনলাইন নিউজ পোর্টালগুলোও একই ভিত্তিতে নিউজ প্রকাশ করেছে।তবে সন্দেহ সৃষ্টি হওয়ার কারণে বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম থেকে যোগাযোগ করা হয় আইসিসির সঙ্গে। বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যমের মেইলের জবাবে আইসিসির মিডিয়া ম্যানেজার সামিউল হাসান বিষয়টির বিস্তারিত ব্যাখ্যা দিয়েছেন। তাতে দেখা যাচ্ছে, র্যাংকিং নিয়ে যে তথ্য বিসিবি সভাপতি জানিয়েছেন, তার সঙ্গে আইসিসির ব্যাখ্যার সম্পূর্ণ বিপরীত অবস্থান। বিসিবি প্রেসিডেন্ট যে হিসেবে বাংলাদেশকে সাত থেকে পাঁচ নম্বরে উঠিয়ে এনেছেন, তাতে কিছু ভুল বোঝাবুঝির অবকাশ রয়েছে। মূলত হালনাগাদ করার যে তথ্য বিসিবি প্রেসিডেন্ট জানিয়েছেন, তাতে বাংলাদেশ সাত নম্বরেই থেকে যাবে। পাঁচে উঠে আসার সুযোগ নেই।সামিউল হাসানের পক্ষ থেকে পাঠানো আইসিসির মেইলেই বিষয়টা বিস্তারিতভাবে বলা হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, ‘শুধুমাত্র ২০১৪-১৫ ও ২০১৫-১৬- এই দুই মওসুমের সিরিজগুলোর ফল হিসেব করলেই কেবল বাংলাদেশ র্যাংকিংয়ে ৫ নম্বরে উঠবে আসবে; কিন্তু আইসিসির নিয়ম হলো ওয়ানডে র্যাংকিং হালনাগাদ করার জন্য হিসেব ধরা হয় তিন বছর মেয়াদি চক্রে। সুতরাং, আগামী ২ মে প্রকাশিতব্য আইসিসি রাংকিংয়ের হিসাব হবে ২০১৩-১৪, ২০১৪-২০১৫ এবং ২০১৫-১৬ মেয়াদের চক্র ধরেই। এই পুরো মেয়াদের পরিসংখ্যান হিসাব করার পর বাংলাদেশ ৫ নয়, থাকবে ৭ নম্বরেই। কারণ হচ্ছে, ২০১৩-১৪ মৌসুমে বাংলাদেশের পারফরম্যান্স ছিল খুবই খারাপ।বিসিবি সভাপতিকে আইসিসির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল বাংলাদেশের অগ্রগতির বিষয়টিই। সে ক্ষেত্রে বিসিবি সভাপতি ৫ নম্বরে উঠে আসার খবর কিভাবে বললেন? সে ব্যাপারেও ব্যাখ্যা দেয়া হয়েছে। মূলত বিসিবি সভাপতির সামনে হিসাবটা এসেছিল ২০১৯ বিশ্বকাপের বাছাই পর্ব নিয়ে। ২০১৯ বিশ্বকাপে সরাসরি খেলতে হলে ২০১৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশকে থাকতে হবে সেরা আটের মধ্যে। যদি আয়োজন ইংল্যান্ডকে বাদ দেয়া হয়, তাহলে সেরা ৭টি দলই সরাসরি খেলবে বিশ্বকাপে। সে ক্ষেত্রে র্যাংকিং হালনাগাদ করতে গেলে হিসাব থেকে বাদ পড়বে ২০১৩-১৪ মওসুম। সেই হিসেবে ২০১৪-২০১৫ এবং ২০১৫-২০১৬ মওসুমের সঙ্গে যোগ হবে ২০১৬-২০১৭ মওসুম। সে হিসেবে হয়তো বাংলাদেশের র্যাংকিংয়ের পরিবর্তনও হতে পারে।তবে ২০১৬-২০১৭ যেহেতু এখনো শুরুই হয়নি। সে ক্ষেত্রে বাকি দুই মওসুম নিয়ে আলোচনা হয়েছে আইসিসির সভায়। সে হিসেবে কিন্তু বাংলাদেশ থাকে ৫ নম্বরেই। এ তথ্যটাই নাজমুল হাসান পাপন এসে আজ জানিয়েছেন বাংলাদেশের মিডিয়ার কাছে। তবে, এই ৫ নম্বর র্যাংকিংটা কিন্তু আলোচনার টেবিলেই। মূলত আসল র্যাংকিং কিন্তু ধরা হবে তিন মওসুমের হিসেবে। তখন বাংলাদেশ থাকবে সাত নম্বরেই।তবে বাংলাদেশের অবস্থান যখন এই অবস্থায় খুব ভালো, তখন ২০১৭ সালে হিসেবকৃত র্যাংকিংয়ে বাংলাদেশের অবস্থান ভালো হওয়ারই সম্ভাবনা বেশি। তাতে বাংলাদেশের ২০১৯ বিশ্বকাপে সরাসরি খেলার জোরালো সম্ভাবনাই তৈরি হবে।আএইচএস/বিএ
Advertisement