দেশজুড়ে

কাজ শেষ হওয়ার আগেই দেবে গেল সেতুর পিলার

সেতুর কাজ চলমান রয়েছে। এরইমধ্যে দেবে গেছে সেতুর মাঝখানের চারটি সিসি পিলার। ঘটনাটি ঘটছে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার বেলকা ইউনিয়নের খেয়াঘাটে তিস্তা নদীর উপর নির্মাণাধীন সেতুতে।

Advertisement

সরেজমিনে দেখা যায়, ঝুঁকিপূর্ণ কাঠের সেতু দিয়ে চলাচল করছে মানুষ। অপরদিকে শিশুরা সেতু থেকে ঝাঁপ দিয়ে নদীতে গোসল করছে। তবে স্রোত বাড়লে যেকোনো মুর্হূতে ধসে যেতে পারে সেতুটি।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, ঠিকাদারের গাফলতির কারণে সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার আগেই মাঝের পিলার দেবে গেছে।

স্থানীয়রা জানায়, দীর্ঘদিন ধরে উপজেলার বেলা ইউনিয়নের খেয়াহাটে নৌকা যোগে নদী পারাপার চলতো। দুপাশের মানুষের যোগাযোগের একমাত্র ভরসা ছিল নৌকা। স্থানীয়দের দাবির প্রেক্ষিতে ঘাটে একটি কাঠের সেতু নির্মাণ করে এলজিইডি। উপজেলা বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) অর্থায়নে সুন্দরগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী কার্যালয় এটি বাস্তবায়ন করে।

Advertisement

সুন্দরগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০২২ সালের অগাস্টের শেষের দিকে সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হয়। ২০২৩ সালের মে-তে কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। কাজের দায়িত্ব পায় গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ছানা এন্টারপ্রাইজ।

বেলকা গ্রামের মৃত আবদুল খালেক সরকারের ছেলে মো. আবদুর রাজ্জাক মিয়া বলেন, ‘এ পথ দিয়েই আমার যাতায়াত। সে কারণে কাজটা কী ধরনের হয়েছে তা জানা আছে। ঠিকাদার ও তার লোকজন পিলারের গোড়া মাটির খুব একটা গভীরে দেয়নি। সে কারণে পিলার দেবে গেছে।’

সাবেক ইউপি সদস্য মো. আবদুল মান্নান মিয়া বলেন, ‘পিলারের গোড়া বেশি গভীরে দেয়নি। এ বিষয়ে বার বার বলাও হয়েছে। কিন্তু তারা কাজ করেছেন মনগড়া। সে কারণে এ অবস্থা। দুর্ভোগ আমাদের থেকেই গেলো!’

বেলকা ইউপি চেয়ারম্যান ইব্রাহিম খলিলুল্যাহ বলেন, এখানে সেতু নির্মাণের দাবিটা ছিলো দীর্ঘদিনের। নির্মাণ কাজ দেখে খুশিও হয়েছিল নদীর দুইপাশের মানুষ। কিন্তু হঠাৎ পিলার দেবে যাওয়ায় দুর্ভোগ আরও বেড়ে গেলো।

Advertisement

তিনি আরও বলেন, গত কয়েকদিন থেকে নদীতে প্রবল স্রোত শুরু হয়েছে। সে কারণে খুঁটির নীচ থেকে বালু সরে যাওয়ায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। তবে খুঁটির গভীরতা বেশি দিলে হয়তো এ অবস্থা হতো না।

এবিষয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ছানা এন্টারপ্রাইজের সত্ত্বাধীকারী মো. ছানা মিয়ার মোবাইলে একাধিকবার রিং করা হলেও তিনি রিসিফ করেননি।

উপজেলা প্রকৌশলী আবদুল মান্নাফ বলেন, ‘সিসি পিলার দেবে যাওয়ার বিষয়টি শুনেছি। আমি জয়েন করার আগেই সেতুর কাজ প্রায় শেষ করছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এজন্য এ বিষয়ে তেমন কিছু জানি না। সরেজমিনে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. তরিকুল ইসলাম বলেন, ‘দেবে যাওয়া সেতুর বিষয়ে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্য কমিটি প্রতিবেদন জমা দেবে। তদন্তে অনিয়ম পাওয়া গেলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এএইচ/এমএস