আঞ্চলিক বাণিজ্য প্রসারে নেপাল, ভুটান ও ভারতের সঙ্গে সড়ক যোগাযোগের উপর জোর দিচ্ছে বাংলাদেশ সরকার। এজন্য আড়াই হাজার কোটি টাকার প্রকল্প হাতে নেয়া হচ্ছে। এর মাধ্যমে এশিয়ান হাইওয়ে সাউথ এশিয়া সাব রিজিয়নাল ইকোনমিক কো-অপারেশন (সাসেক) ও বাংলাদেশ, ভারত, চীন ও মিয়ানমারের মধ্যে প্রস্তাবিত অর্থনৈতিক করিডরে (বিসিআইএম) নতুন করে বাংলাদেশের ৮টি মহাসড়ক যুক্ত হবে।এই সড়কগুলোর দৈর্ঘ্য হবে প্রায় ৬০০ কিলোমিটার। মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নিবার্হী কমিটি (একনেক) সভায় এ সংক্রান্ত এক প্রকল্প অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হতে পারে।জানা গেছে, প্রস্তাবিত এ প্রকল্পের নাম দেয়া হয়েছে ‘ক্রস বর্ডার রোড নেটওয়ার্ক ইম্প্রুভমেন্ট প্রজেক্ট`। এতে ব্যয় হবে ২ হাজার ৫১৪ কোটি ৩৮ লাখ টাকা। এর মধ্যে জাপানভিত্তিক দাতা সংস্থা জাইক’র ঋণ হিসাবে দিবে ১ হাজার ৮৫১ কোটি ৭৭ লাখ টাকা। আর সরকারি খাত থেকে ৬৬২ কোটি ৬১ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হবে। প্রকল্পটি ২০১৬ থেকে ২০২২ মেয়াদে বাস্তবায়ন করবে সড়ক ও জনপদ অধিদফতর।পরিকল্পনা কমিশন সূত্র জানায়, প্রকল্পের মাধ্যমে এশিয়ান করিডর-১ এবং এশিয়ান হাইওয়ে করিডর-৪ এ অবস্থিত ১৭টি মাঝারি আকারে সেতু ও সাতটি কালভার্ট নির্মাণ করা হবে। দুটি এক্সল লোড কন্ট্রোল স্টেশন স্থাপনসহ অর্থনৈতিক জোনের সঙ্গে সড়ক সংযোগ স্থাপন এবং দেশের ব্যবসা বাণিজ্যের উন্নয়ন করা হবে। এছাড়া আঞ্চলিক ও উপ-আঞ্চলিক সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন করে নির্বিঘ্ন ও নিরাপদ আন্তঃদেশীয় সড়ক যাতায়াত নিশ্চিত হবে বলে মনে করা হচ্ছে।প্রকল্পের প্রধান প্রধান কার্যাবলীর মধ্যে রয়েছে-ভূমি অধিগ্রহণ ও পুনর্বাসন ৩০ দশমিক ৩০ হেক্টর, আড়াই হাজার বর্গ মিটার কোর অফিস বিল্ডিং, ১৭টি অ্যাপ্রোচ সড়কে ব্রিজ, সাতটি কালভার্ট, একটি টোল গেট, দুটি এক্সেল লোড কন্ট্রোল ও ৫৫২ সিটি নির্মাণসহ ৫৫২ জন নিরাপত্ত্বাকর্মী নিয়োগ দেয়া হবে। এশিয়ান হাইওয়ে নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে যশোর জেলার সারসা, ঝিকরগাছা, নড়াইল জেলার সদর, লোহাগড়া, গোপালগঞ্জের সদর, কাশিয়ানী, চট্টগ্রামের মিরশ্বরাই, ফটিকছড়ি, পটিয়া, চন্দনাইশ ও চকরিয়া উপজেলাকে বাস্তবায়নের এলাকা হিসেবে ধরে নেয়া হয়েছে।সওজ সূত্র আরও জানায়, বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ যোগাযোগ ব্যবস্থার প্রায় ৭০ শতাংশই সড়কপথ নির্ভর। এশিয়ান হাইওয়ের মত আন্তর্জাতিক সড়কপথ বাংলাদেশে মধ্য দিয়ে অতিক্রম করেছে। অথচ দেশের বিভিন্ন সেক্টর, কাস্টমস, সীমান্তব্যবস্থাপনা অপর্যাপ্ত। এমনকি আভ্যন্তরীণ এবং সীমান্ত এলাকার জরাজীর্ণ রাস্তা ও সেতুর দুরবস্থার জন্য আন্তর্জাতিক সড়ক পথ গুলিতে সঠিকভাবে যান চলাচল সম্ভব হচ্ছে না। সেজন্যই এই অঞ্চলের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের স্থায়ী, অস্থায়ী সমন্বিত প্রয়াসের মাধ্যমে আঞ্চলিক ট্রানজিট যানবাহন চলাচলের পরিকল্পনা করা হয়েছে। বিভিন্ন স্থায়ী অবকাঠামো উন্নয়ন করা সরকারের পরিকল্পনা আছে।প্রসঙ্গে সড়ক ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এমএন সিদ্দিক বলেন, নেপাল, ভুটান ও ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের ৮টি মহাসড়কের ৬০০ কিলোমিটার সড়ক যুক্ত হতে যাচ্ছে। এই সব রুটে অসংখ্যা জরাজীর্ণ সেতু রয়েছে যেগুলো নতুনভাবে নির্মাণ করা হবে। প্রকল্পের আওতায় নতুনভাবে সেতুগুলো নির্মাণ করা হবে। এশিয়ান হাইওয়ের মান রাখতে হলে সেতুগুলো নতুনভাবে নির্মাণ করা জরুরি।একে/পিআর
Advertisement