মেঘনা উপকূলীয় জেলা লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে বহুল আলোচিত বিষধর ‘রাসেলস ভাইপার’ সাদৃশ্য একটি সাপ দেখা গেছে। সাপটি দেখতে পেয়ে পিটিয়ে মেরে ফেলেছেন পথচারীরা। শুক্রবার (২৮ জুন) সকালে উপজেলার মাতাব্বরহাট বেড়িবাঁধের পশ্চিমে মেঘনা নদীর তীরে সাপটি দেখা যায়। তবে সাপটি রাসেলস ভাইপার ছিল না বলে জানিয়েছেন উপজেলা বন কর্মকর্তা মো. কামরুল হাসান।
Advertisement
এদিকে ঘটনাস্থল মাতাব্বরহাট বেড়িবাঁধটি জেলার অন্যতম বিনোদন কেন্দ্র। ছুটির দিনে সেখানে বিভিন্ন এলাকার ভ্রমণপ্রিয় মানুষদের ভিড় থাকে। এতে মাতাব্বরহাট বেড়িবাঁধসহ নদী সংশ্লিষ্ট এলাকায় সতর্ক হয়ে চলাফেরার পরামর্শ স্থানীয়দের।
লক্ষ্মীপুরের পাশের চাঁদপুর ও নোয়াখালী জেলাতেও বিষধর রাসেলস ভাইপার পাওয়া গেছে। এনিয়ে গণমাধ্যমে খবর প্রকাশ পেয়েছে। এমনকি রাসেলস ভাইপার ভেবে বিভিন্ন প্রজাতির সাপ মেরে ফেলছেন বিভিন্ন জেলার বাসিন্দারা।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ঘটনার সময় কয়েকজন পথচারী ঘটনাস্থল দিয়ে যাচ্ছিলেন। এসময় রাসেলস ভাইপার সাদৃশ্য সাপটি তাদের নজরে পড়ে। এতে তাৎক্ষণিক তারা লাঠি দিয়ে পিটিয়ে সাপটিকে মেরে ফেলেন। গণমাধ্যমসহ ফেসবুকে রাসেলস ভাইপারের ছবিসহ এর আক্রমণাত্মক বিষয়গুলো এখন সবার জানা রয়েছে। এতে দেখা মাত্রই সাপটি মেরে ফেলেছেন বলে পথচারীরা জানান। জানে গেছে, লক্ষ্মীপুরের দক্ষিণ ও পশ্চিমাঞ্চলে প্রায় ৭০ কিলোমিটার এলাকা মেঘনা নদী বেষ্টিত। রামগতি থেকে চাঁদপুরের হাইমচর পর্যন্ত এর বিস্তৃতি। এ নদীর বিভিন্ন এলাকা বিনোদনকেন্দ্র হিসেবে জনপ্রিয়। এরমধ্যে আলেকজান্ডার বেড়িবাঁধ, মাতাব্বরহাট বেড়িবাঁধ, মতিরহাট বেঁড়িবাধ, আলতাফ মাস্টার ঘাট, সাজু মোল্লার ঘাট অন্যতম। এসব স্থানে ছুটির দিনে মানুষের ভিড় থাকে। মেঘনা নদী এলাকায় রাসেলস ভাইপার দেখা যাওয়ার সম্ভাবনা বেশি। এতে বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে সচেতনতার সঙ্গে চলাফেরার পরামর্শ সচেতন মহলের।
Advertisement
উপজেলা রেড ক্রিসেন্টের স্বেচ্ছাসেবী রিমন রাজু বলেন, খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থল যাই। সেখানে সাপটি এখনো পড়ে আছে। দেখতে হুবহু রাসেলস ভাইপারের মতো। এটি রাসেলস ভাইপারই হবে।
কমলনগর উপজেলা বন কর্মকর্তা মো. কামরুল হাসান বলেন, সাপটিকে মেরে ফেলা হয়েছে। তবে সাপটি রাসেলস ভাইপার ছিল না। রাসেলস ভাইপারের ধরনের সঙ্গে এর অধিকাংশ ক্ষেত্রেই মিল নেই। এটি অন্য কোনো প্রজাতির সাপ। তবে নামটি আপাতত বলতে পারছি না।
কমলনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুচিত্র রঞ্জন দাস বলেন, রাসেলস ভাইপার নিয়ে মানুষ সচেতন রয়েছে। মাতাব্বরহাট এলাকায় ঘুরতে আসা কেউ নদীতে নামে না। আশা করি সবাই সতর্ক হয়েই নদী সংশ্লিষ্ট এলাকায় চলাফেরা করবে।
লক্ষ্মীপুর জেলা সিভিল সার্জন ডা. আহমেদ কবীর বলেন, আমাদের ১০০ ভায়াল এন্টিভেনম রয়েছে। এরমধ্যে প্রত্যেক উপজেলায় ১০ ভায়াল করে এন্টিভেনম পাঠানো হয়েছে। সাপ কাটলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হবেন। তবে কালক্ষেপণ করা যাবে না। দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে গেলে যথাযথ চিকিৎসার মাধ্যমে রোগীকে সম্পূর্ণ সুস্থ করে তোলা সম্ভব।
Advertisement
কাজল কায়েস/এফএ/এএসএম