মুষলধারে বৃষ্টিতে নাজেহাল অবস্থা ভারতের রাজধানী দিল্লির। ২৪ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে এক নাগাড়ে চলছে বৃষ্টিপাত। আর তাতে কার্যত পানির নীচে ডুবে গেছে শহরটির অধিকাংশ এলাকা।
Advertisement
ভারতের আবহাওয়া অধিদপ্তর (আইএমডি) জানিয়েছে, সাধারণত জুন মাসে দিল্লিতে গড়ে ৮০ দশমিক ৬ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়। কিন্তু বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) রাত সাড়ে ৮টা থেকে শুক্রবার সকাল সাড়ে ৮টা পর্যন্ত দিল্লিতে ২২৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। ১৯৩৬ সালের পর এই প্রথম দিল্লিতে টানা ২৪ ঘণ্টায় এত বেশি বৃষ্টিপাত হলো। ১৯৩৬ সালে ২৪ ঘণ্টায় ২৩৫ দশমিক ৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছিল।
এদিকে, জলমগ্ন দিল্লিতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। রাস্তাঘাট ডুবে গেছে, ভাসছে গাড়িঘোড়াও। রাস্তায় বেরিয়ে চরম দুর্ভোগের শিকার বাসিন্দারা। এমন একাধিক চিত্র সকাল থেকেই দেখা গেছে।
আন্ডারপাসে জমা থাকা পানিতে ডুবে গেছে যাত্রীবাহী বাস। আজাদ মার্কেট এলাকার এই ঘটনার ভিডিও দেখে শিউরে উঠেছে সবাই। মিন্টো রোডে ডুবে গেছে গাড়ি। নীচু এলাকাগুলোতে বাড়ির মধ্যে পানি ঢুকেছে।
Advertisement
জানা গেছে, দিল্লি-মেরাঠ হাইওয়ে, নারাইনা-মোতি বাগ সড়ক, ধৌলা কুঁয়া উড়ালপুল, বীর বান্দা বৈরাগী মার্গ, আজাদ মার্কেট আন্ডারপাস, তিলক সেতু, অরবিন্দ মার্গ, অনুব্রত মার্গ, আইটিও ও এমস যাওয়ার বহু রাস্তা প্লাবিত হয়েছে। তাছাড়া মথুরা সড়ক, মুলচাঁদ, মিন্টো রোড, মেহরৌলি, বদরপুর সড়ক, মান্ডাওয়ালি, ভিখাজি কামা প্লেস, মধু বিহার, তিন মূর্তি মার্গ, প্রগতি ময়দান, মুনিরকা, ধৌলা কুঁয়া, মোতি বাগ, আইটিও ও নয়ডার বহু রাস্তা পানিতে ডুবে গেছে।
এদিন ভোর সাড়ে ৫টার দিকে তুমুল বৃষ্টির জেরে ভেঙে পড়ে দিল্লি বিমানবন্দরের টার্মিনাল- ১ এর একাংশ। পার্কিংয়ে দাঁড়িয়ে থাকা গাড়ি ও ট্যাক্সি চাপা পড়ে যায় ভেঙে পড়া অংশের নীচে। ঘটনায় একজনের মৃত্যু ও পাঁচজন গুরুতর আহত হয়েছেন। আপাতত বন্ধ রাখা টার্মিনাল- ১ এর সেবা। এতে দুর্ভোগে পড়েছেন অসংখ্য প্লেনযাত্রী।
জানা গেছে, দিল্লির জলমন্ত্রী অতিশির বাসভবনের সামনেও হাঁটুসমান পানি জমে গেছে। এমন পরিস্থিতিতে তড়িঘড়ি জরুরি বৈঠকের ডাক দিয়েছে রাজ্য সরকার। আপৎকালীন পরিস্থিতির মোকাবিলায় সমস্ত দফতরের আধিকারিকরা।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, শুক্রবারই দিল্লিতে বর্ষা শুরু হয়েছে। গত কয়েক সপ্তাহজুড়ে দিল্লিতে তীব্র তাপপ্রবাহ চলছিল। সর্বকালের রেকর্ড ভেঙেছিল তাপমাত্রার পারদ। তার মধ্যে পানিসঙ্কটও দেখা দিয়েছিল বহু এলাকায়। বৃষ্টির অপেক্ষায় কার্যত চাতক পাখির মতো অপেক্ষায় ছিলেন সবাই। এই বৃষ্টিপাতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হলেও, গরমের হাত থেকে রেহাই দিয়েছে।
Advertisement
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া
এসএএইচ