সর্বশেষ ২০২২ সালের জনশুমারির তথ্য অনুযায়ী, এর আগের ১১ বছরে চট্টগ্রামের জনসংখ্যা বেড়েছে ১৫ লাখ ৫৩ হাজার ৪৬৫ জন। সে হিসেবে জেলায় জনসংখ্যার বার্ষিক গড় বৃদ্ধির হার ১ দশমিক ৬৫ শতাংশ। ২০১১ সালে এ হার ছিল ১ দশমিক ৪০ শতাংশ।
Advertisement
জেলা পরিসংখ্যান কার্যালয়ের জনশুমারি ও গৃহগণনা ২০২২ এর প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) দুপুরে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে এ প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন জেলা পরিসংখ্যান কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মো. ওয়াহিদুর রহমান।
২০২৩ সালে প্রকাশিত ষষ্ঠ জনশুমারি ও গৃহগণনা, ২০২২-এর পোস্ট এনুমারেশন চেক (পিইসি)-এর সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুসারে দেশের মোট জনসংখ্যা ১৬ কোটি ৯৮ লাখ ২৮ হাজার ৯১১ জন।
Advertisement
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ২০২২ সালে ১৪ জুন পর্যন্ত চট্টগ্রামে মোট জনসংখ্যা ছিল ৯১ লাখ ৬৯ হাজার ৪৬৫ জন। ১১ বছর আগে ২০১১ সালে চট্টগ্রামের জনসংখ্যা ছিল ৭৬ লাখ ১৬ হাজার জন। পুরুষের চেয়ে নারীর সংখ্যা বেশি। চট্টগ্রামে পুরুষের সংখ্যা ৪৫ লাখ ৭০ হাজার ১১৩ এবং নারীর সংখ্যা ৪৫ লাখ ৯৮ হাজার ৯২৬ জন। প্রতি ১০০ জন নারীর অনুপাতে পুরুষের সংখ্যা ৯৯.৩৭ শতাংশ।
আরও পড়ুন দেশের জনসংখ্যা ১৭ কোটি ১৫ লাখ ৯০ হাজার ৫ দশকে জনসংখ্যা দ্বিগুণ, সুফল কতটা পেল বাংলাদেশ চীনে ৬০ বছরের মধ্যে প্রথমবার কমলো জনসংখ্যাএছাড়া জেলায় অবিবাহিত নারীর চেয়ে পুরুষে সংখ্যা বেশি। নারী ২৬.৫২ শতাংশের বিপরীতে অবিবাহিত পুরুষের হার ৪২.৪৩ শতাংশ। জেলায় বিবাহিত নারী ৬৩.৫৪ শতাংশ, বিবাহিত পুরুষ ৫৬.৫৭ শতাংশ, বিধবা ৮.৯৯ শতাংশ, বিপত্নীক ০.৭৯ শতাংশ, তালাকপ্রাপ্ত নারী ০.৪২ শতাংশ, পুরুষ ০.০৯ শতাংশ, দাম্পত্য বিচ্ছিন্ন নারী ০.৫২ শতাংশ, পুরুষ ০.১৩ শতাংশ।
প্রায় সাড়ে ৯১ লাখ মানুষের এ জেলায় প্রতি বর্গ কিলোমিটারে বসবাস করেন ১৭৩৬ জন। যা ২০১১ সালে ছিল ১৪৪২ জন। মোট জনসংখ্যার ৪২ লাখ ৮৪ হাজার ২৪৯ জন পল্লি অঞ্চলের বাসিন্দা এবং শহর অঞ্চলের বাসিন্দা ৪৮ লাখ ৮৫ হাজার ২১৬ জন। জেলায় জনসংখ্যার বার্ষিক গড় বৃদ্ধির হার ১ দশমিক ৬৫ শতাংশ। ২০১১ সালে এ হার ছিল ১ দশমিক ৪০ শতাংশ।
ধর্মীয় পরিচয়েরভিত্তিতে চট্টগ্রামে মুসলিম জনসংখ্যা ৮৭ দশমিক ৫৩ শতাংশ। হিন্দু জনসংখ্যা ১০.৭২ শতাংশ। বৌদ্ধ জনসংখ্যা ১.৬৩ শতাংশ।
Advertisement
চট্টগ্রামে সাক্ষরতার হার ৮১.০৬ শতাংশ, এর মধ্যে নারী ৭৯.২৬ শতাংশ এবং পুরুষ ৮২.৮৮ শতাংশ। জেলায় ১৫-২৪ বছর বয়সী জনসংখ্যার প্রায় ৩০.৩৮ শতাংশ তরুণ-তরুণী পড়ালেখা, কাজ বা কোনো ট্রেনিং কার্যক্রমে যুক্ত নেই। এর মধ্যে নারীর সংখ্যা ৪৬.৬২ শতাংশ, পুরুষ সংখ্যা ১২.১৬ শতাংশ।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, চট্টগ্রামে কমছে কৃষি নির্ভর পেশা। জেলায় কৃষিক্ষেত্রে কাজ করা জনসংখ্যার পরিমাণ ১৭.৪৬ শতাংশ। এর বিপরীতে শিল্পখাতে ২৮.৭৪ শতাংশ এবং সেবাখাতে ৫৩.৮০ শতাংশ জনসংখ্যা জড়িত। ১৫ বছরের ঊর্ধ্বে মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীর সংখ্যা ৭৭.০৭ শতাংশ। এর মধ্যে নারী ৬৮.৫০ শতাংশ। পুরুষ ৮৫.৯৮ শতাংশ। অন্যদিকে, ইন্টারনেট ব্যবহার করেন ৫০. ৮২ শতাংশ। এর মধ্যে নারী ৪২.৪৩ শতাংশ এবং ৫৯.৫৪ শতাংশ।
উপজেলাভিত্তিক পরিংখ্যানে দেখা গেছে, উপজেলায় সবচেয়ে বেশি জনসংখ্যা ফটিকছড়িতে ৬ লাখ ৪২ হাজার ৭৬ জন। এছাড়া বাঁশখালীতে ৫ লাখ ৩৭ হাজার ৫৫৫ জন, সীতাকুণ্ডে ৪ লাখ ৫৭ হাজার ৩৬৮ জন, হাটহাজারীতে ৪ লাখ ৯৮ হাজার ১৭৯ জন, সাতকানিয়ায় ৪ লাখ ৫৪ হাজার ৫১ জন, মিরসরাইয়ে ৪ লাখ ৭২ হাজার ৭৭৭ জন, আনোয়ারায় ৩ লাখ ১৯ হাজার ৪৮২ জন, লোহাগাড়ায় ৩ লাখ ২৮ হাজার ২০৬ জন, পটিয়ায় ৩ লাখ ৯৭ হাজার ৬৭২ জন, রাঙ্গুনিয়ায় ৩ লাখ ৯২ হাজার ৮৯৮ জন, রাউজানে ৩ লাখ ৯৬ হাজার ৩৫০ জন, সন্দ্বীপে ৩ লাখ ২৭ হাজার ৫৫৩ জন, বোয়ালখালীতে ২ লাখ ৫৮ হাজার ৬৭৫ জন, চন্দনাইশে ২ লাখ ৫২ হাজার ২৩৮ জন, কর্ণফুলীতে ২ লাখ ৩ হাজার ৬৯৭ জন।
পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের যুগ্মসচিব দেব দুলাল ভট্টাচার্যের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান। বিশেষ অতিথি ছিলেন চন্দন কুমার পোদ্দার। এছাড়া অনুষ্ঠানে সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরাও উপস্থিত ছিলেন।
এএজেড/এসএনআর/জিকেএস