সাম্প্রতিক রাসেলস ভাইপার আতঙ্কের মধ্যে দিনাজপুরে সাপের কামড়ে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। তবে তারা কেউই রাসেলস ভাইপারের কামড়ে মারা যাননি বলে নিশ্চিত করেছে স্বাস্থ্য বিভাগ।
Advertisement
সাপের কামড়ে মারা যাওয়া ব্যক্তিরা হলেন বোচাগঞ্জ উপজেলার ছাতইল ইউনিয়নের শীবতলী গ্রামের মৃত জিতেন চন্দ্র রায়ের স্ত্রী ভাদুরী বেওয়া (৬০), ফুলবাড়ী উপজেলার মইজান্দা গ্রামের মোজাম্মেল সরকারের স্ত্রী জামিরুন বেগম (৬০) ও বিরল উপজেলার ১২ নম্বর রামচন্দ্রপুর ইউনিয়নের ঘনপাড়া কানাইবাড়ী গ্রামের সাব্বির হোসেনের স্ত্রী আশা মনি (২০)। এদের মধ্যে ভাদুরী বেওয়া ও আশা মনি মঙ্গলবার (২৪ জুন) দিনগত রাতে ও জামিরুন বেগম বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) মারা যায়।
দিনাজপুরের সিভিল সার্জন ডা. এ এইচ এম বোরহান উল ইসলাম সিদ্দিকী জানান, রাসেলস ভাইপারের কামড়ে মারা গেলে যে ধরনের নমুনা দেখা যায়, তা ওই তিনজনের কারো মধ্যে ছিল না। নমুনা দেখে ধারণা করা হচ্ছে, তারা কালাচ বা কেউটে সাপের কামড়ে মারা গেছেন।
তিনি আরও জানান, পুরো জেলায় সাপের অ্যান্টিভেনম মজুত আছে ৭৭৬ ভায়াল। এরমধ্যে ঘোড়াঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ২০, চিরিরবন্দরে ১০, পার্বতীপুরে ১৮, ফুলবাড়িতে ১৮, বিরামপুরে ১৬, নবাবগঞ্জে ১৪, বোচাগঞ্জে ২০, হাকিমপুরে ১০, কাহারোলে ২২, খানসামায় ২০, বীরগঞ্জে ১৬, বিরল উপজেলায় ২২ ও দিনাজপুর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসাপাতালে ৫০ ভায়াল মজুত আছে। এছাড়া দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৫০০ ভায়াল মজুত রয়েছে। তবে বিজিবি হাসপাতালের হিসাব এখানে নেই।
Advertisement
আরও ৫০০ ভায়াল অ্যান্টিভেনমের চাহিদা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। একইসঙ্গে জেলায় মজুত অ্যান্টিভেনমের মেয়াদ রয়েছে ২০২৫ সালের আগস্ট মাস পর্যন্ত বলেও জানান সিভিল সার্জন।
ঘোড়াঘাট উপজেলার সাবেক স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা তৌহিদুল আনোয়ার বলেন, অ্যান্টিভেনম মজুত থাকা অবস্থায় কোনো অজুহাতে রোগীর শরীরে প্রয়োগ না করার সুযোগ নেই। তবে রোগীর শরীরে অ্যান্টিভেনম প্রয়োগ করা সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। ১০টি ভায়াল থেকে একটি ডোজ তৈরি করতে এবং সময় নিয়ে রোগীর শরীরে প্রয়োগ করতে এক থেকে দেড়ঘণ্টা সময় লেগে যায়। এভাবে রোগীর অবস্থা অনুযায়ী ৪০ ভায়াল পর্যন্ত প্রয়োগ করা যায়।
তিনি আরও বলেন, অ্যান্টিভেনম প্রয়োগ খুবই স্বাভাবিক ও সহজ বিষয়। অ্যান্টিভেনম প্রয়োগে প্রতি পাঁচ লাখে একজন রোগীর শরীরে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যায়।
এমদাদুল হক মিলন/এসআর/জিকেএস
Advertisement