পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের দুটি ইউনিটের মধ্যে একটি বিকল হয়ে গেছে। এতে করে অতিরিক্ত লোডশেডিং হচ্ছে বরিশাল অঞ্চলে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা বিদ্যুৎহীন থেকে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে সাধারণ মানুষ। এ অবস্থা ঠিক হতে এক সপ্তাহেরও বেশি সময় লাগতে পারে বলে জানিয়েছে বিদ্যুৎ বিভাগ।
Advertisement
এদিকে ঘন ঘন লোডশেডিংয়ে জনদুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে। বিশেষ করে গভীর রাতে বিদ্যুৎ চলে গেলে গরমে ঘুমানো যাচ্ছে না। দিনে সরকারি-বেসরকারি দপ্তর ও বিসিক শিল্পনগরে কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।
উপজেলাগুলোতে আরও ভয়াবহ অবস্থা বিরাজ করছে। উপজেলায় দিনরাতে ৮-১০ বারের বেশি লোডশেডিং হচ্ছে। পল্লী বিদ্যুৎ অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলাগুলোতে চাহিদার তুলনায় অর্ধেকের কম বিদ্যুৎ সরবরাহ হচ্ছে।
নগরীর আলেকান্দা এলাকার বাসিন্দা ব্যবসায়ী মোস্তফা সরদার বলেন, কয়েকদিন ধরে দিন-রাতের অধিকাংশ সময় বিদ্যুৎ থাকছে না। এতে যেমন ব্যবসায় প্রভাব পড়ছে তেমনি জনজীবনেও পোহাতে হচ্ছে ভোগান্তি।
Advertisement
আরেক ব্যবসায়ী হালিম খান জানান, তার ইলেকট্রিকের ব্যবসা, এ ব্যবসা বিদ্যুৎ ছাড়া অচল। কয়েকদিন ধরে বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণে ব্যবসা-বাণিজ্যে লোকসান হচ্ছে।
নগরীর পশ্চিম কাউনিয়ার গৃহিণী দোলা জান্নাত বলেন, দিনটা কোনো রকম পার হলেও সবচেয়ে বেশি কষ্ট হয় রাতে। গভীর রাতে যখন মানুষ ঘুমিয়ে পড়ে, তখন বিদ্যুৎ চলে যায়। এতে কষ্ট পায় শিশুরা।
এ ব্যাপারে কথা হলে বরিশাল বিদ্যুৎ বিক্রয় ও বিতরণ কেন্দ্র-১ এর উপবিভাগীয় প্রকৌশলী দীপক মিস্ত্রী জানান, তাদের বিদ্যুতের চাহিদা ৮২ মেগাওয়াট। কিন্তু সরবরাহ পাচ্ছেন ৫৬ মেগাওয়াট। ফলে বাধ্য হয়েই লোডশেডিং দিতে হচ্ছে।
বরিশাল বিদ্যুৎ বিক্রয় ও বিতরণ কেন্দ্র-২ এর ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মঞ্জুরুল ইসলাম বলেন, যে কোনো সময় বিদ্যুৎকেন্দ্র অকেজো হয়ে সরবরাহ বন্ধ হতে পারে। বিদ্যুতের ঘাটতি যে কোনো সময় আসতেই পারে।
Advertisement
তিনি আরও বলেন, গত দুদিন ধরে চাহিদার তুলনায় অর্ধেক বিদ্যুৎ সরবরাহ পাচ্ছি। যে কারণে কিছু সময় পর পর লোডশেডিং দিতে হয়েছে। তবে এ অবস্থা কেটে যাবে।
বরিশাল গ্রিড স্টেশনের নির্বাহী প্রকৌশলী আক্তারুজ্জামান পলাশ জানান, পায়রার দুটি ইউনিটের একটি অকেজো হয়ে বন্ধ রয়েছে। ওই দুই ইউনিট থেকে ৬৬০ মেগাওয়াট করে মোট ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদিত হতো। এ বিদ্যুৎ বরিশাল, ঝালকাঠি, গোপালগঞ্জসহ কিছু কিছু জায়গায় সরবরাহ করা হয়। কিন্তু একটি ইউনিট বন্ধ থাকায় বিদ্যুৎ উৎপাদন কম হচ্ছে। গ্রিডের আওতায় বরিশালে প্রায় ৫৮০ মেগাওয়াট বিদ্যুতের চাহিদা রয়েছে। এরমধ্যে ৪৫০-৫০০ মেগাওয়াট সরবরাহ করা যাচ্ছে। আগামী ৩-৪ জুলাই বিকল হওয়া ইউনিটটি সচল হতে পারে।
শাওন খান/জেডএইচ/জিকেএস