বছর তিনেক আগেও যে দেশটির মানুষের ঘুম ভাঙতো গোলাবারুদ, বোমা আর গুলির শব্দে। আতঙ্ক আর বিভীষিকাময় মুহূর্ত ছিল যাদের নিত্যসঙ্গী। সেই আফগানিস্তানে এখন উৎসবের আমেজ। এক ক্রিকেট পুরো জাতিকে ভাসিয়েছে আনন্দের জোয়ারে।
Advertisement
কাবুল, কান্দাহার, জালালাবাদ কিংবা খোস্ত-বাংলাদেশের বিপক্ষে আফগানদের জয়ে হাজার হাজার সমর্থক নেমে এসেছিলেন রাস্তায়। প্রথমবারের মতো কোনো বৈশ্বিক টুর্নামেন্টের সেমিফাইনালে, আফগানিস্তানের ক্রিকেটে এমন দিন যে আর আসেনি!
আফগান ক্রিকেটের রূপকথা কি এখানেই থামবে? নাকি স্বপ্নযাত্রা ছুটবে ফাইনালের পথে, হাতে উঠবে বিশ্বকাপের সোনালি ট্রফি? সেমিফাইনালে নাম লেখানোর পরই আফগানদের যে উন্মাদনা দেখা গেছে, বিশ্বকাপের ফাইনাল কিংবা ট্রফি জয়ের মতো স্বপ্নপূরণ হলে সেই উন্মাদনা কোথায় গিয়ে ঠেকবে বোঝাই যাচ্ছে!
আফগানিস্তানের জন্য প্রথম, কিন্তু সেমিতে নাম লেখানো কোনো অঘটন নয় নিঃসন্দেহে। পুরো টুর্নামেন্টে ভালো খেলেই এই জায়গাটি অর্জন করেছে তারা। গ্রুপপর্বে আফগানিস্তান তিন ম্যাচ জিতেছে, যার মধ্যে নিউজিল্যান্ডের মতো দলকে হারিয়েছে ৮৪ রানের বিশাল ব্যবধানে।
Advertisement
সুপার এইটে এসে তো হারিয়েছে অস্ট্রেলিয়ার মতো পরাশক্তিকে। শেষ ম্যাচে বাংলাদেশের বিপক্ষে মাত্র ১১৫ রান করেও স্নায়ু ধরে রাখে রশিদ খানের দল। ডাকওয়ার্থ লুইস পদ্ধতিতে ৮ রানের জয়ে নাম লেখায় সেমিফাইনালে।
২০০৪ সালে এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিল ট্রফির অংশ হিসেবে প্রথম আনুষ্ঠানিক ম্যাচ খেলেছিল আফগানিস্তান। বিশ বছরের মাথায় সেই দলটিই বিশ্বকাপের মতো বড় মঞ্চে খেলছে সেমিফাইনাল।
২০ বছরে আফগানিস্তানের ক্রিকেট যে উচ্চতায় পৌঁছে গেছে, অনেক দলের জন্য সেটা স্বপ্নের মতো। এখন আফগানিস্তানের ক্রিকেটারদের অনেকেই খেলছেন বিভিন্ন টি-টোয়েন্টি ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে। আইপিএলের মতো সবচেয়ে বড় ফ্র্যাঞ্চাইজি আসরে নিয়মিতই পারফর্ম করছেন রশিদ খান, রহমানুল্লাহ গুরবাজ, ফজলহক ফারুকিরা।
দুর্দান্ত ক্রিকেট খেলে সেমিতে আসা আফগানিস্তানের সামনে টুর্নামেন্টের অপরাজিত দল দক্ষিণ আফ্রিকা। তারোওবাতে বাংলাদেশ সময় বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৬টায় মাঠে নামবে দুই দল।
Advertisement
দক্ষিণ আফ্রিকা গ্রুপপর্বে চারটি আর সুপার এইটে তিন ম্যাচেই জয় নিয়ে টানা সাত জয়ে সেমিতে। তারা পার করে এসেছে শ্রীলঙ্কা, ইংল্যান্ড, ওয়েস্ট ইন্ডিজের মতো বাধা।
আফগানদের সামনে তাই সেমিতে বড় চ্যালেঞ্জ। দক্ষিণ আফ্রিকার অজেয়যাত্রা থামাতে পারবেন রশিদ খানরা, নাকি আফগানিস্তানের স্বপ্নযাত্রা থামবে সেমিফাইনালেই? উত্তরটা সময়ের হাতেই তোলা থাক।
এমএমআর/জেআইএম