দেশজুড়ে

কথা রাখলো আ’লীগ, রাসেলস ভাইপার ধরে পুরস্কার পাচ্ছেন সেই তিনজন

ফরিদপুরে জীবন্ত রাসেলস ভাইপার সাপ ধরে বনবিভাগে জমা দেওয়া হলে প্রত্যেককে ৫০ হাজার করে টাকা পুরস্কার দেওয়ার ঘোষণা দেয় জেলা আওয়ামী লীগ। এ ঘোষণার পর রোববার (২৩ জুন) ফরিদপুর বিভাগীয় বন কর্মকর্তার কার্যালয়ে তিনটি রাসেলস ভাইপার সাপ জমা পড়ে। সোমবার (২৪ জুন) সাপ তিনটি খুলনায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।

Advertisement

তিন সাপ উদ্ধারকারী ব্যক্তিদের প্রত্যেককে ঘোষিত ৫০ হাজার করে টাকা দেওয়া হবে বলে জেলা আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক নিয়াজ জামান সজীব জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, রোববার বিকেলের দিকে জেলা আওয়ামী লীগ পুরস্কার ঘোষণা প্রত্যাহার করার আগে যে তিনিটি সাপ বন বিভাগে জমা পড়ে শুধুমাত্র ওই তিন ব্যক্তিকে পুরস্কারের অর্থ প্রদান করা হবে।

ফরিদপুর বন বিভাগের বিভাগীয় অফিসে তিনটি জীবিত রাসেলস ভাইপারের বাচ্চা জমা দেন ফরিদপুর সদরের রেজাউল করিম, আজাদ শেখ ও শাহজাহান খান। তারা ঘোষণাকৃত পুরস্কারের টাকা পাবেন বলে জেলা আওয়ামী লীগ জানিয়েছে।

Advertisement

সোমবার বিকেলের দিকে খুলনার বিভাগীয় বন্যপ্রাণি ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগে তিনটি রাসেলস ভাইপার সাপ পৌঁছে দেন ফরিদপুর বন বিভাগের প্রহরী মো. জাহিদুল ইসলাম। সাপ তিনটি গ্রহণ করেন ওই কার্যালয়ের বন্যপ্রাণি ও জীব বৈচিত্র সংরক্ষণ কর্মকর্তা তন্ময় আচার্য।

এ ব্যাপারে তন্ময় আচার্য জানান, যে তিনটি রাসেল ভাইপার সাপ ফরিদপুর বন বিভাগ থেকে আমাদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে তার মধ্যে একটি সাপ মারা গেছে। আরেকটির অবস্থা মৃতপ্রায়। তিনটির মধ্যে একটি সাপ সুস্থভাবে বেঁচে আছে। জীবিত সাপটির ব্যাপারে বন বিভাগ খুলনা ও ঢাকার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে পরামর্শ করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে।

এ ব্যাপারে ফরিদপুর বন বিভাগের প্রহরী মো. জাহিদুল ইসলাম জানান, সোমবার দুপুরের দিকে তিনি সাপ তিনটি নিয়ে একটি বাসে করে খুলনার উদ্দেশ্যে রওনা দেন। বিকেলের দিকে সাপ তিনটি জমা দেন।

এর আগে গত ২০ জুন ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্তক্রমে রাসেলস ভাইপার সর্প সম্পর্কিত একটি ঘোষণা দেয়া হয়েছিল, যা প্রকৃতপক্ষে বন্যপ্রাণি সংরক্ষণ আইনের পরিপন্থী। বিষয়টি বন ও পরিবেশ আইনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক, বিধায় জেলা আওয়ামী লীগ সর্বসম্মতভাবে রাসেল ভাইপার সংক্রান্ত ঘোষণাটি প্রত্যাহার করে নেয়।

Advertisement

জীবিত রাসেল ভাইপার সাপ ধরে বন বিভাগে জমা দিলে তাদের প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা করে পুরস্কার দেওয়া হবে জেলা আওয়ামী লীগের এ ঘোষণায় উদ্বুদ্ধ হয়ে রোববার যে তিনজন সাপ ধরে বন বিভাগে জমা দিয়েছে তাদের পুরস্কার বাবদ টাকা দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহ মো. ইাশতিয়াক।

এ বিষয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহ ইশতিয়াক আরিফ বলেন, সাপ সম্পর্কিত পুরস্কার ঘোষণাটি আমরা প্রত্যাহার করেছি গতকাল সন্ধ্যা ৬টায়। তবে তার আগে ওই তিনটি সাপ বন বিভাগে জমা দেওয়া হয়েছে। আমরা আমাদের ঘোষণা অনুযায়ী খুব শিগগিরই ওই তিন ব্যক্তিকে পুরস্কার বাবদ ৫০ হাজার করে টাকা প্রদান করবো। যেহেতু কথা দিয়েছিলাম সেজন্য কথা রাখতে তিনজনকে দেড় লাখ টাকা প্রদান করা হবে।

এ বিষয়ে ফরিদপুরের বিভাগী বন কর্মকর্তা গোলাম কুদ্দুস ভুইয়া জাগো নিউজকে বলেন, সরিসৃপজাতীয় প্রাণি ধরা বা মারা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। সেই আইন অনুযায়ী এভাবে সাপ ধরা এবং সাপ ধরতে পুরস্কার ঘোষণা করা বেআইনী। এভাবে ধরা সাপ তারা জমা রাখতে বা প্রাপ্তি স্বীকারপত্র দিতে পারেন না। তবে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির কথায় তাদের সাপগুলো জমা নিতে হয়েছে এবং জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের কথায় প্রাপ্তি স্বীকারপত্র দিতে হয়েছে।

এন কে বি নয়ন/এফএ/জিকেএস