বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ছয় আসামিসহ ৬০ জনের ফাঁসি কার্যকর করা আলোচিত ‘জল্লাদ’ শাহজাহান ভূঁইয়া মারা গেছেন। তার মৃত্যুর পর জনপ্রিয় অভিনেতা ফারুক আহমেদ নিজের ফেসবুক আইডিতে একটি পোস্ট দেন।
Advertisement
সেখানে তিনি লেখেন, ‘জল্লাদ’ শাহজাহান ভূঁইয়া। এবছর বইমেলায় কিংবদন্তী পাবলিকেশন্স থেকে তার লেখা একটা বই প্রকাশ হয়েছিল। এর নাম ‘কেমন ছিল জল্লাদ জীবন’। মেলার কিংবদন্তী প্রকাশনীতে আমার লেখাও একটি বই ছিল। বইমেলার প্রায় ১৫ দিন আমি কিংবদন্তী স্টলে বসেছি। জল্লাদ শাহজাহানের সঙ্গে আমার কিংবদন্তীর স্টলেই পরিচয়।
তিনি আরও লেখেন, তার দীর্ঘ জেল জীবন, জল্লাদ হওয়ার গল্প, ফাঁসি দেওয়ার সময় তার মনের অবস্থা, ফাঁসির সময় আসামির ক্রিয়া- এসব বিষয় তার কাছে জানতে চেয়েছি। তিনি খোলামেলাভাবে আমার কথার উত্তর দিয়েছেন। একদিন আমি তাকে জিজ্ঞেস করলাম, মুক্ত জীবন কেমন লাগছে? মাথা নিচু করে বললেন, ভালো না। আমার কেউ নাই। কিচ্ছু নাই। ভালো লাগে না। আমি বোকার মতো তার দিকে তাকিয়ে রইলাম। আহারে জীবন! জীবনের ৪০ বছরেরও বেশি সময় জেলের চার দেওয়ালের ভেতর কাটিয়ে মুক্ত জীবন পেয়েও বলে ভালো লাগে না! আমি তাকে আবার জিজ্ঞেস করলাম, কি করলে আপনার ভালো লাগবে? সঙ্গে সঙ্গে উত্তর দিলেন, মরে গেলে।
আরও পড়ুন
Advertisement
শেষ লাইনে ফারুক আহমেদ লেখেন, ‘জল্লাদ’ শাহজাহান আজ দুপুরে মারা গেছেন। তার চাওয়া পূরণ হয়েছে। ওপারে ভালো থাকবেন জল্লাদ শাহজাহান।
এর আগে সোমবার (২৪ জুন) রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যান শাহজাহান।
গত বছরের ১৮ জুন কারাগার থেকে মুক্তি পান তিনি। অস্ত্র ও হত্যা মামলায় ৪২ বছরের দণ্ডপ্রাপ্ত শাহজাহানের সাজা কমে ৩২ বছর হয়। প্রতি ফাঁসির জন্য দুই মাস করে কারা রেয়াত পেয়েছিলেন তিনি।
তৎকালীন সিনিয়র জেল সুপার সুভাষ কুমার ঘোষ জানান, ‘জল্লাদ’ শাহজাহান বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ছয় আসামি, চারজন যুদ্ধাপরাধী, জঙ্গি নেতা বাংলাভাইসহ দুজন জেএমবি সদস্য এবং আরও ১৪ জন অন্য আলোচিত মামলার আসামির ফাঁসি কার্যকর করেছেন।
Advertisement
এমআই/জেডএইচ/এএসএম