• দুটি সেলাই মেশিন দিয়ে কাজ শুরু• বর্তমানে ৫০ জন গ্রামীণ নারী কাজ করছে• বিনা মূল্যে কাজ শিখিয়ে দেয়া হয়• মাসে লাভ ১ লাখ টাকা• প্রতি মাসে ৯ হাজার পিস পোশাক উৎপাদন করা হয়
Advertisement
১২ বছর আগের কথা। হাতে ছিল এক লাখ টাকা। সেই টাকায় দুইটি সেলাই মেশিন কিনে চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলার দক্ষিণ সোনাপাহাড় গ্রামে পোশাক কারখানা শুরু করেন মো. মিজানুর রহমান।
সেই কারখানায় এখন মূলধন দাঁড়িয়েছে ২০ লাখ টাকা। কারখানাটিতে কাজ করে স্বাবলম্বী হয়েছেন ৫০ জন গ্রামীণ নারী। কারখানাটিকে মিনি গার্মেন্টস নাম দিয়েছেন স্থানীয়রা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এলাকার নারীদের সাবলম্বী করতে রহমানিয়া মিনি গার্মেন্টস প্রতিষ্ঠা করেন মিজানুর রহমান মিজান। মিজানের স্ত্রী রিয়া আক্তার সংসার সামলানোর পাশাপাশি কাপড় কাটিংসহ স্বামীকে কারখানায় সহযোগিতা করেন। ধীরে ধীরে কারখানায় স্থানীয় বেকার নিম্ন ও মধ্যবিত্ত নারীদের সেলাই কাজ শেখানো শুরু হয়। পরে তাদের উৎপাদন মজুরির মাধ্যমে চাকরি দেয়া হয়। বর্তমানে ৫০ জন নারী কাজ করছেন কারখানাটিতে। কারখানায় নারীদের ব্লাউজ, পেটিকোট, প্লাজো, ম্যাক্সি ও শিশুদের পোশাক তৈরি করা হয়। এসব পোশাক চট্টগ্রাম ও ফেনী জেলার বিভিন্ন স্থানে পাইকারি সরবরাহ করা হয়। দৈনিক ৩০০ পিস করে মাসে উৎপাদন হয় ৯ হাজার পিস পোশাক। যা থেকে মিজানুরের মাসিক আয় হয় প্রায় এক লাখ টাকা।
Advertisement
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, কয়েকজন নারী নিপুণ হাতে সেলাই মেশিন দিয়ে বিভিন্ন পোশাক সেলাই করছেন।
আরও খবর
ঘরে ঘরে তৈরি হচ্ছে পোশাক, ৩শ কোটির ব্যবসার আসা দৃষ্টিশক্তি হারিয়েও আজ সফল উদ্যোক্তা তিনি নারী উদ্যোক্তা তৈরির ‘উদ্যোক্তা’ ফাহমিদা নিজামএ সময় কামরুন নাহার ঝর্ণা নামের এক নারী জানান, তিনি প্রায় দুই বছর আগে রহমানিয়া গার্মেন্টসে বিনা মূল্যে বিভিন্ন পোশাক তৈরির কাজ শেখেন। কয়েক মাস আগে উৎপাদন মজুরি হারে এখানে কাজ শুরু করছেন। দৈনিক ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা পর্যন্ত আয় করে থাকেন তিনি।
তামান্না আক্তার নামের আরেক নারী জানান, তিনি রহমানিয়া গার্মেন্টসে বিনা মূল্যে ব্লাউজ, পেটিকোটসহ বিভিন্ন পোশাক তৈরির কাজ শিখেছেন। এখন তিনি মাসে আট থেকে দশ হাজার টাকা আয় করে থাকেন, যা দিয়ে তার সংসার চলে।
Advertisement
আরও খবর
দুই দশকে সফল ২০ হাজার উদ্যোক্তা গ্যাস সংকট, চাকরি হারানোর শঙ্কায় ৩ লাখ গার্মেন্টস শ্রমিক দেশে সবুজ পোশাক কারখানা এখন ২০০‘রহমানিয়া গার্মেন্টস’-এর উদ্যোক্তা মো. মিজানুর রহমান মিজান বলেন, ‘এলাকার বেকার নিম্ন ও মধ্যবিত্ত নারীদের স্বাবলম্বী করতে প্রায় ১২ বছর আগে রহমানিয়া গার্মেন্টসটি প্রতিষ্ঠা করি। শুরুতে এক লাখ টাকা পুঁজিতে মাত্র দুটি মেশিন দিয়ে কাজ শুরু করি। বর্তমানে আমার প্রতিষ্ঠানে ৫০ জন গ্রামীণ নারী কাজ করছে। এক লাখ টাকা থেকে পুঁজি দাঁড়িয়েছে ২০ লাখ টাকা। প্রতি মাসে প্রায় এক লাখ টাকা আয় হয়। তবে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে আরো বড় পরিসরে গার্মেন্টস স্থাপন করে বেকার নারীদের স্বাবলম্বী করার আশা আছে।’
জোরারগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ রেজাউল করিম মাস্টার বলেন, মিজানুর রহমান ক্ষুদ্র থেকে শুরু করে আজ ভালো করেছেন। অনেকের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছেন। সততা, নিষ্ঠা ও একাগ্রতা থাকলেও যে কেউ সফল হতে পারবে। আমি তার ব্যবসার আরো সফলতা কামনা করছি।
এমএমডি/এমএমএআর/জিকেএস