চীনের সামরিক বাহিনী তাইওয়ানকে বাকি বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন করে দিতে পারে, তাদের অর্থনীতিকে পঙ্গু করে দিতে পারে এবং গণতান্ত্রিক দ্বীপটিকে বেইজিংয়ের কমিউনিস্ট পার্টির হাতে তুলে দিতে বাধ্য করতে পারে। আর এসবই চীন করতে পারে একটিও গুলি খরচ না করেই। সম্প্রতি ওয়াশিংটন-ভিত্তিক একটি থিংক ট্যাংকের বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন।
Advertisement
চীন বরাবরই তাইওয়ানকে নিজেদের অংশ বলে মনে করে। স্বায়ত্তশাসিত দ্বীপটিকে নিজেদের নিয়ন্ত্রণ নিতে ক্রমাগত হুমকি দিয়ে চলেছেন চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের নিন্দা জানাতে চীনের অস্বীকৃতি এই আশঙ্কাকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।
আরও পড়ুন>>
তাইওয়ানের কাছে ৩৬ কোটি ডলারের অস্ত্র বিক্রি করছে যুক্তরাষ্ট্র শি-বাইডেনের ফোনালাপ, তাইওয়ান নিয়ে কড়া বার্তা বেইজিংয়ের তাইওয়ানের চারপাশে ঘুরছে চীনের ৩০টি সামরিক বিমানসিএনএনের খবর অনুসারে, বিশ্লেষক এবং সামরিক কৌশলবিদরা বলছেন, তাইওয়ান দখলে চীনের দুটি প্রধান উপায় হলো- একটি পূর্ণ মাত্রায় আক্রমণ অথবা সামরিক অবরোধ।
Advertisement
তবে ওয়াশিংটনের সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজ (সিএসআইএস) একটি তৃতীয় উপায় তুলে ধরেছে, তা হলো- কোয়ারেন্টাইন। এই পদ্ধতিতে ‘ধূসর অঞ্চল’ (গ্রে জোন) কৌশল ব্যবহার করা হয়, যা চূড়ান্ত যুদ্ধের ঠিক নিচে।
চীনের কোস্ট গার্ড, মেরিটাইম মিলিশিয়া, পুলিশ এবং মেরিটাইম সেফটি এজেন্সিগুলো চাইলে তাইওয়ানের পূর্ণ বা আংশিক কোয়ারেন্টাইন কার্যকর করতে পারে। এর মাধ্যমে দ্বীপটির ২ কোটি ৩০ লাখ মানুষের জন্য বন্দর এবং প্রয়োজনীয় পণ্য সরবরাহ বন্ধ করে দিতে পারে বেইজিং।
সিএসআইএসের বনি লিন, ব্রায়ান হার্ট, ম্যাথিউ ফুনাইওল, সামান্থা লু এবং ট্রুলি টিন্সলির মতে, এই কৌশলে চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মি (পিএলএ) কেবল সহায়কের ভূমিকায় থাকতে পারে।
আরও পড়ুন>>
Advertisement
রিপোর্টে বলা হয়েছে, চীন সাম্প্রতিক বছরগুলোতে তাইওয়ানের ওপর উল্লেখযোগ্যভাবে চাপ বাড়িয়েছে। আশঙ্কা রয়েছে, এই উত্তেজনা সরাসরি সংঘর্ষে রূপ নিতে পারে। একটি আক্রমণের হুমকির দিকে অনেক মনোযোগ দেওয়া হয়েছে। তবে বেইজিংয়ের কাছে তাইওয়ানকে জোরপূর্বক আক্রমণ করা, শাস্তি দেওয়া বা দখল করার বেশ কিছু বিকল্পও রয়েছে।
সম্প্রতি চীনা প্রতিরক্ষা মন্ত্রী অ্যাডমিরাল ডং জুন তাইওয়ানের স্বাধীনতাকামীদের উৎসাহিত করা ‘বহিরাগত শক্তিগুলোকে’ সতর্ক করে বলেছেন, এটি দ্বীপটিকে একটি বিপজ্জনক পরিস্থিতিতে ঠেলে দিতে পারে। তিনি বলেছেন, যে তাইওয়ানকে চীনের কাছ থেকে আলাদা করার সাহস দেখাবে, সে নিজে নিজেই ধ্বংস হবে।
২০২০ সালের সেপ্টেম্বর থেকে তাইওয়ানের ভূখণ্ডের কাছাকাছি সামরিক প্লেন ও জাহাজের সংখ্যা বাড়িয়ে তথাকথিত ‘গ্রে জোন’ কৌশল ব্যবহার তীব্র করেছে চীন।
কেএএ/